সিডনী বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১


অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসীদের মাঝে জাদুটোনা ও ঝাড়ফুঁকের জমজমাট ব্যবসা নিয়ে গণমাধ্যমে তোলপাড়


প্রকাশিত:
২৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৯

আপডেট:
২৯ নভেম্বর ২০১৯ ১২:২৬

অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসীদের মাঝে জাদুটোনা ও ঝাড়ফুঁকের জমজমাট ব্যবসা নিয়ে গণমাধ্যমে তোলপাড়

“প্রেম-ভালোবাসা অথবা দাম্পত্য সমস্যায় ভুগছেন? কিংবা স্বাস্থ্যগত সমস্যায়? ব্যবসা ক্ষেত্রে ক্ষতির সম্মুখীন? পারমানেন্ট রেসিডেন্সি নিয়ে চিন্তিত? আজই যোগাযোগ করুন অমুক বাবার সাথে। গ্রহনক্ষত্র বিচার করে তিনি সব সমস্যার সমাধান এনে দেবেন। আপনার জীবন হয়ে উঠবে সুখী এবং সমস্যামুক্ত”। এই ধরণের বিজ্ঞাপন আমরা প্রায়শই দেখতে পাই এমনকি এই সুদূর অস্ট্রেলিয়াতেও। সম্প্রতি কিছু অস্ট্রেলিয়ান গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব বিজ্ঞাপনের আড়ালে লুকিয়ে থাকা জমজমাট প্রতারণামূলক ব্যবসার চালচিত্র। 

অস্ট্রেলিয়াতে মূলধারার গণমাধ্যমের পাশাপাশি প্রায় সব দেশের প্রবাসীরাই নিজেদের ভাষায় সাপ্তাহিক বা মাসিক পত্রিকা বের করে থাকে। এসব পত্রিকা কমিউনিটি এথনিক মিডিয়া হিসেবে পরিচিত। এইসব এথনিক মিডিয়ার মাঝে ভারতীয় পত্রিকাগুলোতেই সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে এধরণের জ্যোতিষী ও ঝাঁড়ফুক ব্যবসার বিজ্ঞাপন। তবে দুঃখজনকভাবে বাংলাদেশী পত্রিকাগুলোও এক্ষেত্রে খুব একটা পিছিয়ে নেই। প্রায় প্রতিটি বাংলা কমিউনিটি পত্রিকাতেও দেখা যায় সব সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি ভরা এধরণের ভন্ডবাবাদের রঙীন বিজ্ঞাপন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিবাসীদের মাঝে নানা কারণেই জীবনযাত্রার নানা বিষয়ে প্রতিকূলতার সাথে সংগ্রাম করার অভিজ্ঞতা বেশি থাকে। এমন অবস্থায় স্বাস্থ্য, অর্থ, পারিবারিক বিষয়, ভিসাসংক্রান্ত সমস্যা, সামাজিক প্রতিকূলতা ইত্যাদি নানা কারণে তাদের অনেকে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। এ সুযোগটাই নিচ্ছে জ্যোতিষচর্চার নামে প্রতারণা করা ভন্ড বাবাদের দল। এক্ষেত্রে সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে কমিউনিটি এথনিক মিডিয়াগুলোর টাকার বিনিময়ে বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে প্রতারণকদের প্রচারণার মাধ্যমে পরিণত হওয়া। 

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে বেশ কিছু খবর প্রকাশ হয়েছে এবং টিভি চ্যানেলেও কিছু ভিডিও প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে। এতে দেখা যায় এথনিক মিডিয়াতে প্রকাশিত বিজ্ঞাপন থেকে ফোন নাম্বার নিয়ে একজন সাংবাদিক পরীক্ষামূলক ভাবে ‘পীরবাবা’কে ফোন করেন। তিনি সেই বাবাকে জানান নিজের পার্মানেন্ট ভিসা পাওয়া নিয়ে সমস্যায় থাকার কথা। তখন সেই তথাকথিত জ্যোতিষীবাবা তাকে এক হাজার ডলার পাঠাতে বলেন এবং আশ্বাস দেন কিছু তন্ত্রমন্ত্র এবং উপাসনা করার পর এক সপ্তাহের মাঝেই এই পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। 

যদিও সাংবাদিকের এই ফোনকলটি ছিলো পরীক্ষামূলক, তবে নির্দ্বিধায় বলা যায় অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ লক্ষ অভিবাসীদের মাঝে অনেকেই এসব প্রতারকদের জাদুটোনা, ঝাঁড়ফুঁক, জ্বিনের মাধ্যমে তদবির, গ্রহনক্ষত্রের মাধ্যমে সমাধান ইত্যাদি প্রতারণার শিকার হচ্ছে এবং প্রচুর পরিমাণ অর্থ প্রদান করছে। এমতাবস্থায় সচেতন মহলের অভিমত হলো কমিউনিটি এথনিক মিডিয়াগুলোতে এধরণের ভুয়া ও প্রতারণামূলক ব্যবসার বিজ্ঞাপন প্রকাশের ক্ষেত্রে সরকারী নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা উচিত। 

 


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top