সিডনী বৃহঃস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল ২০২৪, ৫ই বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় অচল বিশ্ব: ভয়াবহ বিপর্যয়ে রফতানি-আমদানিসহ বিশ্ব বাণিজ্য


প্রকাশিত:
১৯ এপ্রিল ২০২০ ২৩:৪০

আপডেট:
১৮ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৪৮

ফাইল ছবি

 

প্রভাত ফেরী: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে লকডাউনে বন্ধ রয়েছে ব্যবসা। অচল হয়ে পড়ছে বিশ্ব বাণিজ্য। করোনা প্রাদুর্ভাবের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। এতে নেতিবাচক ধারায় থাকা দেশের রফতানি আয় আরও কমেছে। এরই মধ্যে দেশের অন্তত ১৪টি খাতে সমস্যা তৈরি হয়েছে।

ট্যারিফ কমিশনের প্রাথমিক হিসাব বলছে, আমদানি-রফতানি সংকুচিত হওয়ায় কয়েকটি খাতে অন্তত ৬০০০ কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে কাঁচামালের অভাবে দেশের বিভিন্ন শিল্প-কারখানার উৎপাদন সংকুচিত হওয়ার পাশাপাশি অনেক ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একইভাবে কমে আসছে আমদানিনির্ভর পণ্যের সরবরাহ। বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠন বলছে, ভবিষ্যতে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া কিছু পণ্যের সরবরাহে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি (২০১৯-২০) অর্থবছরের ৯ মাস (জুলাই-মার্চ) শেষে রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৮৯৭ কোটি ডলার। এই আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ কম। একক মাস হিসাবে মার্চে রফতানি আয় হয়েছে ২৭৩ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ দশমিক ২৯ শতাংশ কম।

এদিকে বিজিএমইএর তথ্য বলছে, চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১৫ দিনে ১৯ কোটি ৪০ লাখ ডলারের পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। গত বছরের একই সময়ের তুলানায় ৮৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ কম। ২০১৯ সালের এপ্রিলের প্রথম ১৫ দিনে রফতানি হয়েছিল ১১৯ কোটি ২৯ লাখ ৯০ হাজার ডলারের পোশাক। আগের মাস মার্চেও রফতানিতে বড় ধাক্কা খায় পোশাক খাত। গত মার্চে ১৯৭ কোটি ২২ লাখ ডলারের পোশাক রফতানি হয়, যা গত বছরের মার্চের চেয়ে ২৬ দশমিক ৭০ শতাংশ কম। ২০১৯ সালের মার্চে ২৬৯ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছিল।

ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই’এর সহসভাপতি মুনতাকিম আশরাফ বলেন, ‘করোনার কারণে আমাদের দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে কী প্রভাব পড়ছে, তা জানার জন্য আমরা বিভিন্ন চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের মতামত নিচ্ছি। পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে ওভেন ও সুয়েটার খাতে এর প্রভাবটা বেশি হবে। আমরা চীনের বিকল্প বাজারও খুঁজছি।’

জানা গেছে, দেশের শিল্পের কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী পণ্য থেকে শুরু করে যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ এবং নিত্য ব্যবহার্য নানা পণ্যের বড় উৎস চীন। ওষুধের কাঁচামালের একটি বড় অংশ চীন থেকে আসে। গত এক সপ্তাহে এলসি খোলার হার প্রায় ৩৭ শতাংশ কমেছে। ফলে অভ্যন্তরীণ বাজারেও অনেক পণ্যের দাম বাড়ছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত কাঁচামালের দামও বাড়ছে।

বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে ‘তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, প্রতি মুহূর্তে ক্রেতারা ক্রয় আদেশ স্থগিত করছেন। বলছেন স্থগিত। তবে আমাদের জন্য এটি স্থগিত নয় বাতিল। এমন পরিস্থিতিতে পোশাক খাত ভয়াবহ সংকটে আছে।

তিনি বলেন, একের পর এক অর্ডার বাতিল শুধুই নয় আগের পণ্যও ক্রেতারা নিচ্ছেন না। যাও কিছু নিচ্ছেন তার বিল ঠিকমত পরিশোধ করছেন না। আমাদের রফতানি নেই বললেই চলে। এখন অধিকাংশ কারখানার উৎপাদন বন্ধ। আগামীতে কী হবে বলা যাচ্ছে না।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top