সিডনী বৃহঃস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল ২০২৪, ৫ই বৈশাখ ১৪৩১

পাকা রশিদে ক্রয়বিক্রয়ে ব্যবসায়ীরা পেয়েছে দুই দিন সময়


প্রকাশিত:
১০ মার্চ ২০২২ ০২:১২

আপডেট:
১৮ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:৩২

 

প্রভাত ফেরী: পাকা রশিদে ক্রয়বিক্রয় নিশ্চিত করতে ব্যবসায়ীদের ২ দিন সময় দিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। আগামী শুক্রবার (১১ মার্চ) থেকে ভোজ্যতেল কেনাবেচায় পাকা রশিদ ছাড়া বেচাকেনা করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে যারা অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছে বা মজুদ করে রাখছে তাদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে। 

মঙ্গলবার (৮ মার্চ) খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের নিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এক সভায় এ কথা জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এএইচএম সফিকুজ্জামান। 

তিনি বলেন, রমজান পর্যন্ত চাহিদা মেটাতে দেশে পর্যাপ্ত তেল মজুত আছে। সংকটের ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তেল নিয়ে তেলেসমাতি হচ্ছে, এবার আমরা কাউকে ছাড়ব না। বিপণন ব্যবস্থায় কারও অনিয়ম কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না। দেশে পর্যাপ্ত ভোজ্যতেল মজুত থাকলেও যারা কৃত্রিম সংকট তৈরী দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সভাকক্ষে সয়াবিন তেল নিয়ে চলমান অস্থিরতা নিরসনে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা আয়োজন করা হয়। এতে ব্যবসায়ীরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও তাদের মতামত দেন। এ সময় মিলাররা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে সংকট তৈরী করছে বলে অভিযোগ করেন ব্যবসায়ী নেতারা। 

তারা বলেন, কোন মিলার রশিদ দেয় না। রশিদ চাইলে মালই দেয় না। 

উদাহরণ হিসেবে তারা বলেন, সিটি গ্রুপ থেকে তেল নিতে একটি ট্রাককে ১৫ দিন লাইনে থাকতে হয়। কিন্তু তাদের কথামতো বেশি দামে কিনলে সাথে সাথে মাল পাওয়া যায়। ব্যবসা টিকাতে তাদের কথা মেনেই বেচাকেনা করতে হয়। কারণ খুচরা ব্যবসায়ীদের প্রতিদিন ৫-৭টি হোটেলে তেল সরবরাহ করতে হয়। ক্রেতা ধরে রাখতে ঝুঁকি নেয়ার সুযোগ থাকে না। 

মৌলভীবাজারের এসও (সাপ্লাই অর্ডার) ব্যবসায়ী হারুন ট্রেডার্সের মালিক হাজী হারুনুর রশিদ বলেন, গত ১ মাস ধরে সরবরাহ নেই। মিলাররা রশিদ দেয় না। পাকা রশিদে বিক্রয় নিশ্চিত করলে সমস্যার সমাধান হবে। এছাড়া পরিমাণেও কম থাকে সেখানেও লোকসান। এক ব্যারেলে ১৮৬ লিটার বা ২০৪ কেজি তেল থাকার কথা থাকলেও ব্যারেলপ্রতি ৮-১০ লিটার কম থাকে। 

তালতলা মার্কেটের বেপারি বিজনেস সেন্টারের মালিক হাজী মোহাম্মদ সুলতান অবশ্য পাকা রশিদেই সব সময় কিনেন। তবে কিনতে হয় সরকার নির্ধারিত খুচরা দামের চেয়েও বেশি দামে। আজ (৮মার্চ) সকালে কেনা সয়াবিন ও পাম ওয়েলের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত খোলা সয়াবিনের খুচরা দাম ১৪৩ টাকা কিন্তু কিনেছি ১৫৯ টাকা ৩১ পয়সায় অর্থাৎ ১৬ টাকা ৩১ পয়সা বেশি। পামওয়েলের খুচরা দাম ১৩৩ টাকা। কিনেছি ১৪৪ টাকা ৬০ পয়সায় অর্থাৎ ১১ টাকা ৬০ পয়সা বেশি। এখন পরিবহন ও লাভ যোগ করে আমাকে আরো বেশি দামে বিক্রি করতে হবে। তখন আমাকে জরিমানা করা হলে আমি কি করব? 

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, খুচরা পর্যায়ে খুব বেশি হেরফের করার সুযোগ নেই। তাই রিফাইনারি ও মিলারদের ধরলে এ সমস্যার সমাধান হবে। সবাই পাকা রশিদে বিক্রি করলেই আর সমস্যা থাকবে না। এসময় চলমান অভিযান ও জরিমানা বন্ধের আহ্বান জানান তিনি। তবে নিজেদেরও কিছু ভুল আছে স্বীকার করেন ব্যবসায়ী নেতারা। 

ব্যবসায়ীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মহাপরিচালক বলেন, কাল  উভয় পক্ষের (মিলার ও ডিলার) উপস্থিতিতে বৈঠক হবে। সেখানে সমাধান বেড়িয়ে আসবে। শুক্রবার থেকে আর কেউ পাকা রশিদ ছাড়া ব্যবসা করতে পারবে না। এছাড়া আগামী নভেম্বরের মধ্যে ভোজ্যতেল বোতলজাতকরণ সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top