সিডনী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১


করোনাযোদ্ধাদের সম্মান দেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার


প্রকাশিত:
১৬ জুলাই ২০২০ ২২:২০

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:০৭

 

প্রভাত ফেরী: পশ্চিমবঙ্গে করোনার সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে যারা আক্রান্ত হয়েছেন বা মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁদের জন্য বিশেষ সম্মান ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল বুধবার তিনি জানান, রাজ্যে যারা করোনাযোদ্ধা, তাঁদের লড়াইকে সম্মান জানানোর সঙ্গে স্বীকৃতিও দেওয়া হবে। স্যালুট এবং সম্মান জানানোর কথাও বলেন তিনি।

তিনি ঘোষণা করেন, করোনা লড়াইয়ে যারা মারা গেছেন, তাদের পরিবারের কোনো এক সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কোনো করোনাযোদ্ধা মারা গেলে, ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাঁর পরিবারকে ১০ লাখ টাকা এবং আক্রান্ত হলে তাঁর পরিবারকে ১ লাখ টাকা করে দেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল বুধবার এ সম্মান ও স্বীকৃতির কথা জানালেন, প্রতিশ্রুতি দিলেন চাকরির।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী পরিসংখ্যান দিয়ে জানান, এ রাজ্যে মোট ২৬৮ জন পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ৩০ জন চিকিৎসকও আক্রান্ত হয়েছেন করোনা চিকিৎসা করতে গিয়ে। রাজ্যে আক্রান্ত নার্সের সংখ্যা ৪৩। এছাড়াও ৬২ জন সরকারি কর্মচারী আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়।

সব মিলিয়ে এ রাজ্যে ৪১৫ জন করোনাযোদ্ধা আক্রান্ত হয়েছেন সংক্রমণে। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪০৩ জন। এ পর্যন্ত মোট ১২ জন করোনাযোদ্ধা করোনায় মারা গেছেন বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রীই এদিন জানিয়েছেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে রাজ্য সরকারের ৪১৫ কর্মী–আধিকারিক সংক্রমিত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিক ও কর্মী, পুলিশ আধিকারিক ও কর্মী, চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী প্রমুখ। সংক্রমিতদের মধ্যে ৪০৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তবে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। তিনি জানান, মৃতদের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। আর সংক্রমিতদের দেওয়া হচ্ছে ১ লক্ষ টাকা করে। তাঁর দাবি, ইতিমধ্যে ২৮৪ জনকে টাকা দেওয়া হয়ে গিয়েছে। তাতে সরকারের খরচ হয়েছে ৫.২৩ কোটি টাকা। আরও ১৯৯ জন দ্রুত টাকা পেয়ে যাবেন।

তবে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর একটি বক্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আমফানের দুর্নীতি নিয়ে বিরোধী দলগুলি প্রতিবাদে সরব হওয়ায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী এদিন কোনও দলের নাম না করেই বলেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্তদের দল থেকে বের করে দিতে বলেছি। তার পরও এরা থামছে না। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কোনও কোনও রাজনৈতিক দল বেশি বাড়াবাড়ি করছে। মনে রাখবেন, চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম।’ কিন্তু নবান্ন থেকে এ ভাবে মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক মন্তব্য করতে পারেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, মুখ্যমন্ত্রী এর আগেও এমন কাজ বহুবার করেছেন। সুতরাং এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। দুর্নীতিগ্রস্তদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে বিরোধী দলগুলিও জানিয়েছে, তাঁর নির্দেশ আসলে আইওয়াশ। সত্যি যদি তাঁদের শাস্তি দিতে হয়, তা হলে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করুক প্রশাসন।

এদিকে, এবার করোনা সংক্রমণ পৌঁছে গেল বেহালার গঙ্গোপাধ্যায় বাড়িতেও। জানা গিয়েছে, ভারতীয় ক্রিকেটের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাদা স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ও সংক্রমিত হয়েছেন। আপাতত বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। শারীরিক অবস্থাও স্থিতিশীল বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের বর্তমান প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়–সহ তাঁর পরিবারের সকলেরই করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে রিপোর্ট এখনও আসেনি। তাঁরা সকলেই এখন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। উল্লেখ্য, স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ও বাঁ হাতি ক্রিকেটার হিসেবে বেশ নাম করেছিলেন। বাংলার হয়ে বহু ম্যাচ খেলেছেনও। এর আগেও তাঁর করোনা সংক্রমণ নিয়ে খবর শোনা গিয়েছিল। পরে জানা গিয়েছিল, তা ছিল নেহাতই গুজব। এবার কিন্তু সত্যি সত্যিই তাঁর সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া গেল।

তিনি আরো বলেন, করোনা সংক্রমণ আগামী দিনে আরো বেশি হবে।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top