সিডনী মঙ্গলবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৪, ১০ই বৈশাখ ১৪৩১

দ্বিতীয় সন্ধ্যা : রুদ্র মোস্তফা


প্রকাশিত:
১৯ জুলাই ২০২২ ০২:৪৭

আপডেট:
২৩ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৪৭

ছবি: রুদ্র মোস্তফা

 

একটা বেখাপ্পা সন্ধ্যা কেমন করে যেন তাদের পেছনে ব্যাকগ্রাউন্ড হয়ে গেলো। বলছি, জোবায়ের আর সোহানার কথা। জোবায়েরের সাথে আমার সব বিষয়েই কথা হতো। তার মধ্যে ফিল্টার করে অল্প কিছু কথা আমার স্ত্রী পারুলকে বলতাম। কেননা, সে খুব সন্দেহ বাতিকগ্রস্ত একজন মানুষ। পাপ-পুণ্য নিয়ে তার বাড়াবাড়ি রকমের হিসেবনিকেশ। তাছাড়া শহোরে বাতাসের সবটা তার গায়ে লাগেনি। আর গায়ে লাগলেই যে সবাই লিভটুগেদার সমর্থন করবে তাও না। পারুলের পক্ষে তো তা কোনোভাবেই সমর্থন করা সম্ভব নয়।
আজ সকালে পারুল আমাকে বিছানা থেকে টেনে তুললো। আমার চোখে তখনো ঘুম মরচে পড়া টিনে কাঁচা-আলকাতরার মতো লেগে আছে। সে ভীষণ হোঁচট-খাওয়া কণ্ঠে আমাকে বললো, এই সোহানা তো বিয়ে করেছে। ফেসবুকে ওর বিয়ের ছবি ভাসছে। তাইলে জোবায়েরের সাথে ওর সম্পর্ক কী ছিলো? ওরা কি বিয়ে ছাড়াই আমাদের বাসায় থেকে গেলো?
আমি হাই তুলে বললাম, ওরা এত দিন লিভটুগেদারে থাকতো।
পারুলের চোখ দুটি যেন কোটর থেকে ঠিকরে বের হবে এমন রাগী চোখে সে বললো, তার মানে তুমি সব জানতে। জেনেশুনেই এই পাপাচার করতে দিয়েছো তুমি?
ততোক্ষণে আমার ঘুম ভেঙে গেছে। একটু বুদ্ধি খাটিয়ে বললাম, না জানতাম না। ওরা গোপনে বিয়ে করেছে এমনটাই তো বলেছিলো। আমি কী করে জানবো ওরা বিয়ে না করেই আমাদের এখানে থাকতে এসেছে।
পরুল বললো, আমরা তো জানতাম না। তাহলে তো আমাদের পাপ হবে না। তাই না?
ওকে আস্বস্ত করে বললাম, না আমাদের পাপ হবে না।
ঠিক তখনই জোবায়েরের ফোন এলো। রিসিভ করতেই টের পেলাম জোবায়ের কাঁদছে। কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি উঠে গেলো। কী বলে সান্ত্বনা দেবো ওকে? আমার মাথাটাও কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছিলো। তবু বললাম, ভাই আমার কাঁদে না। সব ঠিক হয়ে যাবে। সোহানার চেয়ে ভালো মেয়ে পাবে তুমি। ও তোমার যোগ্য ছিলো না। ওকে কথাগুলো বললাম ঠিকই, কিন্তু নিজের কথাগুলোই কেমন নিজের কাছে অচেনা লাগছিলো।প্রায় ঘণ্টাখানেক ফোন কানের কাছে রেখে ওর কান্না শুনলাম। আমার এমন বোধ হলো যেন বিষণ্ন মনে বৃষ্টির শব্দ শুনছি।
দিন দশেক আগে জোবায়ের ও সোহানা আমাদের বাসায় এসেছিলো। ছিলো এক সপ্তাহ। পারুল ওই সাতদিন নানা রকমের খাবার রান্না করেছে ওদের জন্য। যাওয়ার আগে দশ হাজার টাকার একটা কাতান শাড়ি কিনে গিফট করেছে। আমি ওকে এত টাকার শাড়ি দিতে নিষেধ করেছিলাম। পারুল আমাকে বলেছিলো, ওদের হাতে বোধ হয় টাকা নেই। জানো, সোহানা দুটা নরমাল সুতিশাড়ি এনেছে। ওরা নতুন বিয়ে করেছে। একটা বিয়ের শাড়ি থাকা অবশ্য দরকার। একদিন ওদের টাকা হবে। তখন অনেক দামি দামি শাড়ি পরবে। কিন্তু আমাদের দেয়া শাড়িটা ওরা কোনোদিন ভুলতে পারবে না। শেষ পর্যন্ত পারুলের যুক্তিই মেনে নিতে হয়েছিলো। পারুল সেটা নিয়েই যেন এখন অনুশোচনায় ভুগছে। আমাকে বললো, জানো হারামজাদি আমার দেয়া শাড়িটা পরেই বিয়ে করেছে। ওর বরকে নিয়ে যতগুলো ছবি পোস্ট করেছে সবগুলোই আমার দেয়া শাড়ি পরা। কত বড়ো বদের বদ দেখছো। শাড়িটা দেয়ার পর একবার পরেও দেখালো না। আমার তাই খুব মন খারাপ হয়েছিলো। এখন বুঝতে পারছি কেনো শাড়ি পরেনি। শাড়ি পরলে তো ছবি তুলতে হতো। সে যে ছবি তোলার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি এটাও তার একটা কারণ।

আমাদের বাসায় আসার পরদিন সন্ধ্যায় সোহানা ও জোবায়ের আমার মোবাইল দিয়ে ছাদে একটা সেলফি তুলেছিলো। মোবাইল আমাকে দিয়ে সোহানা বলেছিলো, আপনার কাছে এই ছবিটা থাক দাদা। আপনার বাসার দ্বিতীয় সন্ধ্যাটা আপনার কাছেই রেখে দিলাম।
সন্ধ্যার নীলচে-কালো আলোয় ওই ছবিটি তোলার কি বিশেষ উদ্দেশ্য ছিলো? না হলে আমার মোবাইল দিয়ে কেনো সেলফি তুলেছিলো? সন্ধ্যার সেই ছবির কথাটি পারুলকে বলতে ইচ্ছে করছে না। জোবায়েরের জন্য ভীষণ খারাপ লাগছে। জোবায়ের আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোটো-ভাই। আমি যখন মাস্টার্সে পড়ি তখন সে ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে। আমরা একই হলে থেকেছি। জোবায়েরকে খুব স্নেহ করতাম। জোবায়েরও আমার খুব ভক্ত ছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষ করে যখন চাকুরিতে প্রবেশ করলাম তখন রাজধানীর সাথে আমার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলো। অফিসিয়াল কাজে ঢাকা গেলে জোবায়েরের কাছেই উঠতাম। জুনিয়রদের মধ্যে একমাত্র জোবায়েরের সাথেই কীভাবে কীভাবে যেন যোগাযোগটা ছিলো। আর সেও তার সবকিছু আমার সাথে শেয়ার করতো। সোহানা জোবায়েরের এক ব্যাচ জুনিয়র। ওদের প্রেমটাও অনেক দিনের। লাস্ট দুই বছর ধরে ওরা একসাথেই থাকতো। আগামাসি লেন একটা বাসা ভাড়া করে স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই থাকতো। মাস ছয়েক আগেও ওদের বাসায় গিয়ে ছিলাম। সোহানা আমাকে বলেছিলো, সাকাত ভাই আপনি আমাদের বাসায় আসতে এত ইতস্তত করেন কেনো? আমার তো কোনো ভাই নেই। আপনাকে ভাই বলেই জানি।
ছোট্ট গোছানো একটা সংসার ছিলো ওদের। আমি জোবায়েরকে বলেছিলাম, তোরা বিয়ে করছিস না কেনো? জোবায়ের বলেছিলো, সোহানা রাজি হয় না। চাকুরি হলে তারপর বিয়ে করবে। তুমি একটু বুঝিয়ে বলো তো ভাই।
আমার অবশ্য সোহানাকে কিছু বলা হয়ে উঠেনি। গত মাসে জোবায়ের ফোন করে বললো, ভাইয়া আমাদের রিলেশনটা ভালো যাচ্ছে না। প্রতিদিন ঝগড়া হয়। আপত্তি না থাকলে তোমার বাসায় দিন সাতেক থাকতে চাই। হয়তো তোমাদের দুজনকে দেখে ওর ভেতর কিছু চেঞ্জ আসতে পারে। আমিও বললাম, সময় করে চলে আয়। এতে আর বলাবলির কী আছে।
ও বলেছিলো, তুমি ভাবিকে ম্যানেজ করো।

ওরা এসেছিলো। সাতদিন ফুরফুরে মেজাজেই থেকে গেলো। তারপর ওদের কী হলো জানি না। পরশু সোহানা কল করে বললো, ভাইয়া তোমার সাথে কথা আছে। তুমি কি এখন ফ্রি আছো?
আমি অফিসে একটু ব্যস্ত ছিলাম। তাই পরে ফ্রি হয়ে কল করবো বলে নানা কাজে ভুলে গিয়ে আর কল করা হয়নি। আর আজ সকালেই শুনলাম সোহানা বিয়ে করেছে।
আবার জোবায়েরের কল এলো। ফোন রিসিভ করে বললাম, আমাকে বলতো, কী এমন হলো যে হুট করেই তোদের ছাড়াছাড়ি। আর এমন তাড়াহুড়ো করে সোহানা কেনো বিয়ে করলো?
পারুল জোবায়েরের কথা শোনার জন্য আমাকে লাউডস্পিকার দিতে বললো। আমি লাউডস্পিকার দিলাম।
জোবায়ের বলতে শুরু করলো। তোমাদের ওখান থেকে আসার পর আমাকে বললো, দুই বছরেও তুমি একটা চাকুরি জোগাড় করতে পারোনি। আমি এই ফকিন্নি টাইপ জীবনযাপন করতে পারবো না। ও ওর বড় বোনের ওখানে গিয়ে উঠলো। ওর বোন দুলাভাই রিসেন্টলি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা শিফট করেছে। ওকে আর আমি ফিরাইনি। ভেবেছি ওর বোন ঢাকায় আর ও বাইরে থাকছে বিষয়টা নিয়ে পরিবারে সমস্যা হতে পারে। আর বেশ কিছুদিন ধরে ওর মেজাজ প্রায় সময় হট থাকতো। ভেবেছি হয়ত ক'দিন পর ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু কী হয়ে গেলো ভাই।
জোবায়ের আবার কাঁদতে শুরু করলো।
আমি কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কী হলো?
ওর বোনের বাসায় যাওয়ার পর ও সিম চেঞ্জ করে। ফেসবুক থেকেও আমাকে ব্লক করে দেয়। আজই আমার এক বন্ধু ফোন করে বললো, ফেসবুকে সোহানা তার বিয়ের ছবি দিয়েছে।
ভাই, আমার জীবনটাও তোমার মতো হয়ে গেলো। এখন তো আমারও তোমার মতো সুইসাইড করতে ইচ্ছে করছে। বলেই কাঁদতে শুরু করলো জুবায়ের।

জোবায়েরের লাস্ট কথার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। সাথে সাথে অপ্রস্তুত হয়ে বললাম, জোবায়ের তোর ভাবি সাথেই আছে। লাউড দেয়া। সে শুনছে। তোর জন্য খুব মন খারাপ করেছে। বুঝতে পারছি না সোহানা কেনো এমন করলো।
ডিডেকটিভ মুভি দেখার সময় হঠাৎ করে অপ্রত্যাশিত ঘটনার সামনে পড়ে দর্শক যেমন বিস্মিত হয় তেমনি বিস্মিত কণ্ঠে পারুল বললো, তোমার ব্যাপারটা বুঝলাম না। তুমি সুইসাইড করতে চাইতে কেনো? তোমার জীবনে কি কেউ ছিলো?
আমি প্রশ্নের ধাক্কা সামলে হেসে বললাম, ধুর কী বলো এইগুলা!
জোবায়েরকে বললাম, তুই কী বলতে কী বললি তোর ভাবি তো উল্টো আমাকে ভুল বুঝতেছে।
জোবায়ের নিজের শোক ক্ষণকালের জন্য ভুলে পারুলকে বললো, ভাইয়ার যখন চাকুরি হচ্ছিলো না তখন ভাইয়া সুইসাইড করতে চাইতো। খুব ফ্রাস্টেড ছিলো। তখন ভাইয়াকে বুঝিয়েছি। সেটাই বলেছি ভাবি। আপনি কিছু মনে করবেন না।
পারুল জোবায়েরের কথায় হয়ত আস্বস্ত হলো। কিন্তু তার চেহারা থেকে সংশয় যেন দূর হলো না। সে জোবায়েরকে সান্ত্বনা দিয়ে রান্না ঘরে চলে গেলো। আমি আরও কিছুক্ষণ জোবায়েরের সাথে কথা বলে ফোন রেখে দিলাম।

আজ অনেকদিন পর ভুলতে বসা কাকলী যেন আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। কাকলীর সাথে তখন আমার তুমুল প্রেম। বিয়ে করতেও কোনো বাঁধা নেই। চাকুরি হয়ে গেছে। কাকলীরও বিয়ের বয়েস হয়েছে। ইডেন কলেজে ফিলসফিতে অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ছিলো ও তখন। একদিন কাকলীকে নিয়ে বন্ধু খায়রুলের বাসায় গেলাম। ও ব্যাংকে চাকুরি করে। একা নারিন্দা ফ্ল্যাট নিয়ে থাকে। খায়রুল আমাদের দুজনকে ওর ফ্ল্যাটে বাইরে থেকে তালা দিয়ে অফিসে চলে গেলো। আমরা দুজন তখন ভেতরে। দুপুরের দিকে খায়রুল কল করে বললো, স্ট্রোক করে ওর বাবা মারা গেছে। ইমার্জেন্সি ওকে মানিকগঞ্জ যেতে হবে। ফ্রিজে সব খাবার আর পর্যাপ্ত বাজার করা আছে। আমরা যেন কটা দিন ওভাবেই থাকি। সত্যি বলতে বন্ধুর জন্য সহমর্মীতা ছাপিয়ে অবচেতনে একটা আনন্দ হয়েছিলো যেনো। বন্ধুর বাবার মৃত্যু যেন আমাদের জন্য একটা সুযোগ করে দিলো। না হলে খায়রুলের জন্য যতোটা দুঃখবোধ হওয়া দরকার ছিলো ততোটা হয়নি কেনো? কাকলীকে বললাম, আমাদের কদিন এখানেই থাকতে হবে। খায়রুলের বাবা মারা গেছে। ও বাড়ি চলে গেছে। ফিরতে কদিন দেড়ি হবে। কাকলী বললো, তাহলে আমাদের কী হবে? আমি কাকলীকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলাম, আমরা এই কদিন প্রাণভরে সংসার করবো।
আমাদের অনাহূত সংসারের দ্বিতীয় সন্ধ্যায় কাকলীর বাড়ি থেকে কল আসে। ওর বাবা ঢাকা এসেছে কাজে। ওর সাথে দেখা করবে। ও তখন বললো, বাবা আমি তো ঢাকায় নেই। আমার বান্ধবী ফারজানার বড় বোনের বিয়েতে এসেছি। ওর বাবা তখন চিৎকার করে বলেছিলো, তোমাকে পড়তে ঢাকা রেখেছি। নষ্টামি করার জন্য নয়। তোমার বান্ধবী ফারজানা আমার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে। আর তুমি তার বোনের বিয়ে খেতে গেছো, না?
পরদিন খায়রুল চলে আসে। সন্ধ্যা থেকে খায়রুলের আসার আগপর্যন্ত সময়টুকু ছিলো আমাদের জন্য ভীষণ ভয়ংকর। একদিনে তোলপাড় করে ফেলেছিলো কাকলীর বাবা।
খায়রুলের ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে কাকলীকে ওর আজিমপুরের মেসে রেখে আমি রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা হই। শুধু কাকলীর সাথে থাকবো বলেই তিন দিনের ছুটি নিয়ে ঢাকা গিয়েছিলাম। কাকলীকে বুঝিয়ে ওর মেসে রেখে চলে আসি। গিয়েই বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবো বলে আস্বস্ত করি ওকে। আমি রাজশাহী রওনা হওয়ার পর ট্রেনেও কাকলীর সাথে আমার কথা হয়। কিন্তু রাজশাহী পৌঁছেই ওকে আর ফোনে পাইনি। এমনকি ফারজানাও আমার ফোন রিসিভ করেনি। আমার অবস্থা পাগল হওয়ার উপক্রম। তখন খবর নেয়ার একমাত্র মাধ্যম ছিলো ছোটো ভাই জোবায়ের। ওকে বললাম, তোর কাকলীদির একটা খোঁজ এনে দে তো। সে খবর এনে দিলো। কাকলীর বাবা কাকলীকে নিয়ে চলে গেছে। এখান থেকে চলে যাওয়ার পরদিনই কাকলীকে ওর বাবা বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে ওদের গ্রামেরই। অল্প কিছুদিন হলো ইংরেজির প্রভাষক হিসেবে শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দিয়েছে। ছেলে আগে থেকেই কাকলীকে পছন্দ করতো। বিয়ে নিয়ে তাদেরও তাড়া ছিলো।
আচমকা এমন সংবাদে দিশেহারা হয়ে গেলাম। জোবায়ের তখন আমাকে সান্ত্বনা দিতে রাজশাহী চলে এসেছিলো। হয়ত ওই সময় ও পাশে না থাকলে আমার পক্ষে শোক কাটানো এত সহজ হতো না।
জীবন নানাভাবে বিচিত্র। তার চেয়েও বিচিত্র মানুষের মন। না হলে সোহানার কেনো পারুলের দেয়া শাড়ি পরেই বিয়ের ছবি আপলোড দিতে হবে! সব কিছুর পরও প্রেমটা বোধ হয় থেকেই যায়। মানুষ কোথাও না কোথাও সেই প্রেম রেখে দেয়। কারণে অকারণে অর্থহীনভাবে সেই প্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। প্রকৃতিও কোনো না কোনভাবে তা সামনে নিয়ে আসে। এই যেমন কাকলী এলো! জোবায়েরের এই সঙ্কটে এতদিন পর কাকলীর কি সামনে আসার কথা? মন থেকে কবেই না তাকে ঝেড়ে ফেলে দিয়েছি। তবু কি তার স্মৃতি রাখিনি কোথাও, পারুলের কাছ থেকে আড়াল করা সোহানার দ্বিতীয় সন্ধ্যার ছবির মতো?
পুরনো ক্ষতে নতুন চোট নিয়ে যখন জোবায়েরের কথা ভাবছি ঠিক তখনই পারুল এসে বললো, তুমি না বলেছিলে মাস্টার্স শেষ হওয়ার সাথে সাথেই তোমার বিসিএস হয়ে যায়। অনার্সের পর এপিয়ার্ড দিয়ে বিসিএসের আবেদন করেছিলে। পাড়াশোনা শেষ করে একদিনও বেকার থাকতে হয়নি । তবে কোন ফ্রাস্টেশন থেকে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলে তুমি? কী বললো জোবায়ের? আমাকে খুলে বলো।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top