সিডনী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৪ই চৈত্র ১৪৩০


আর নেই সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত


প্রকাশিত:
৩০ এপ্রিল ২০২২ ২০:৫২

আপডেট:
২৮ মার্চ ২০২৪ ১৬:৪১

 

সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।

তিনি জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় গুলশান আজাদ মসজিদে তার প্রথম জানাজা, সকাল সাড়ে ১১টায় সংসদ প্লাজায় দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। দুপুর ২টায় তার মরদেহ সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদ মিনারে নেওয়া হবে এবং এরপর দাফনের জন্য মরদেহ সিলেটে নেওয়া হবে।

সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান।

আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯৩৪ সালে সিলেটের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন অর্থনীতিবিদ, কূটনীতিক, ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা।

তিনি ১৯৫১ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে আইএ পরীক্ষায় তৎকালীন সারা প্রদেশে প্রথম স্থান, ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ (অনার্স) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম এবং ১৯৫৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এমএ পাস করেন। চাকরিতে থাকা অবস্থায় তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নসহ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমপিএ ডিগ্রি লাভ করেন।

মুহিত ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে (সিএসপি) যোগ দেওয়ার পর তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার, পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকার এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে পরিকল্পনা সচিব এবং ১৯৭৭ সালে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বহিঃসম্পদ বিভাগে সচিব পদে নিযুক্ত হন।

১৯৮১ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে তিনি অর্থনীতি ও উন্নয়ন পরামর্শক হিসেবে ফোর্ড ফাউন্ডেশন ও ইফাদে কাজ শুরু করেন। ১৯৮২ সালের মার্চ থেকে ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীকালে তিনি বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে উড্রো উইলসন স্কুলে ভিজিটিং ফেলো ছিলেন। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মুহিত। তিনি ২ মেয়াদে টানা ১০ বছর দায়িত্ব পালন করেন এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ছিলেন।

পাকিস্তান পরিকল্পনা কমিশনের চিফ ও উপসচিব থাকাকালে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে বৈষম্য ছিল তার ওপর ১৯৬৬ সালে একটি প্রতিবেদন প্রণয়ন করেন। সংবিধানের বাধ্যবাধকতা পালনে পাকিস্তান ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে এটিই ছিল এ বিষয়ে প্রথম প্রতিবেদন। তিনি ছিলেন ওয়াশিংটন দূতাবাসের প্রথম কূটনীতিবিদ এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য মুহিতকে ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়।

লেখক হিসেবেও খ্যাতি ছিল তার। মুক্তিযুদ্ধ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ইতিহাস, জনপ্রশাসন এবং রাজনৈতিক সমস্যাসহ নানা বিষয়ে তার ২২টি বই প্রকাশিত হয়েছে।

তৎকালীন সিলেট জেলা মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডভোকেট আবু আহমদ আব্দুল হাফিজের তৃতীয় সন্তান তিনি। তার মা সৈয়দ শাহার বানু চৌধুরীও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডসহ রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top