সিডনী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


জুময়ার দিন যে সময় দোয়া কবুল হয় : মুফতী মাহমুদ হাসান


প্রকাশিত:
২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৯:৫৫

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ১৬:০৮

 

আজ শুক্রবার যাকে আমরা জুমার দিন বলে থাকি।আর জুময়ার দিন মানেই দুয়া কবুলের দিন। দিনটি সপ্তাহের শ্রেষ্ঠতম এবং মর্যাদাপূর্ণ একটি দিন।এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, জুমার দিন দিবসসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৪) এই দিনের ফজিলত সম্পর্কে আবু হুরায়রা (রা.)এর বর্ণনায় এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, সূর্য উদিত হওয়া দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। (মুসলিম, হাদিস : ৮৫৪)
আমরা মানুষ আমাদের প্রয়োজনের শেষ নেই।আর আমাদের সকল প্রয়োজন একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই পূরণ করতে পারেন। তাই তো সর্বপ্রথম আমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রয়োজন পূরণে দুয়া,প্রার্থনা করি।আর আমরা চাই আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের প্রতিটি দুয়া কবুল করেন।কিছু কিছু মূহূর্ত এমন রয়েছে তখন বান্দা আল্লাহর কাছে যে দুয়াই করবে তা কবুল করা হবে। শুক্রবারে এমন একটি মূহূর্ত রয়েছে,তখন বান্দা তার রবের কাছে যা-ই চায়, প্রিয় রব তা দিয়ে দেন।
জুমার দিনে দোয়া কবুল হওয়ার সে মহামূল্যবান সময় কোনটা? এ সম্পর্কে ৪৫টা মতামত পাওয়া যায়। তন্মধ্যে হাদীসে বর্ণিত কয়েকটা সময়ের কথা উল্লেখিত উল্লেখ করা হলো।

১. আসরের পর থেকে নিয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত:
عن جابر بن عبد الله عن رسول الله صلى الله عليه وسلم انه قال يوم الجمعه سنتا عشرة يريد ساعة لا يوجد مسلم يسال الله شيئا الا اعطاه الله عز وجل فالتمسوها اخر ساعة بعد العصر.?( رواه ابو داود في سننهج1 ص 150)
অর্থ হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন জুমার দিন একটি মুহূর্ত আছে । যে সময় যেকোন মুসলমান আল্লাহ তাআলার নিকট যা কিছু প্রার্থনা করবে আল্লাহ তাআলা তাকে তা দান করবেন ।কাজেই তোমরা আসরের পর দিনের শেষ মুহূর্তে সে সময়টা তালাশ করো।?( আবু দাউদ১/১৫০)

২.ইমামের মিম্বরে বসার সময় থেকে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত:
عن أبي بُردَةَ بنِ أبي موسى، أنَّ عبدَ اللهِ بنَ عُمرَ رَضِيَ اللهُ عنهما، قال له: أسمعتَ أباك يُحدِّثُ عن رسولِ اللهِ صلَّى اللهُ عليه وسلَّم في شأنِ ساعةِ الجُمُعة شيئًا؟ قال: نعَمْ، سمعتُه يقولُ: سمعتُ رسولَ الله صلَّى اللهُ عليه وسلَّم يقول: ((هي ما بَينَ أن يجلِسَ الإمامُ إلى أنْ تُقضَى الصَّلا ))
ইবনে উমার (রা.)- এর সঙ্গে দেখা হলো আবু বুরদার। জানতে চাইলেন,- আপনার বাবা (আবু মুসা আশয়ারী (রা.)- কে জুমার দিনের বিশেষ সময় সম্পর্কে কিছু বলতে শুনেছেন?-জি, শুনেছি। বাবা বলেছেন, ‘আমি আল্লাহর রাসূলের কাছে শুনেছি,
هِيَ مَا بَيْنَ أَنْ يَجْلِسَ الإِمَامُ إِلَى أَنْ تُقْضَى الصَّلاَةُ
সে সময়টা হলো, ইমাম মিম্বরে বসার পর থেকে সালাত সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত (মুসলিম ৮৫৩)।

দোয়া কবুল হওয়া সময় সম্পর্কে আরো কিছু অভিমত তুলে ধরা হলো:
জুমার নামাজে সুরা ফাতিহার পর আমিন বলার সময়। আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়ে। মুয়াজ্জিন আজান দেয়ার সময়। জুমার দিন সূর্য ঢলে পড়ার সময়। ইমাম খুতবা দেয়ার জন্য মিম্বরে দাঁড়ানোর সময়। উভয় খুতবার মধ্যবর্তী সময়। জুমার দিন ফজরের আজানের সময়। প্রত্যেক জুমায় আলাদা আলাদা সময়ে।
إذا أذن المؤذِّن بصلاة الجمعة،عند الزوالِ, ما بين العصر إلى غروب الشمس،الخ....

বিশেষ লক্ষনীয়: সর্বাধিক প্রসিদ্ধ মত হলো, আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত দোয়া কবুলের সময়।
মহান রাব্বুল আলামীন আল্লাহ তায়ালা আমাদের সেই বিশেষ মুহুর্তে দোয়ারত থাকার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।

 

মুফতী মাহমুদ হাসান
সিনিয়র শিক্ষক, জান্নাতুল ফেরদৌস মুনীরুল উম্মা যাত্রাবাড়ী,ঢাকা

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top