সিডনী শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১


মানুষের নেক আমল নষ্ট হওয়ার কারন


প্রকাশিত:
৫ মার্চ ২০২০ ০৫:৫৬

আপডেট:
৫ মার্চ ২০২০ ০৬:০০

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী: মুসলিম উম্মাহ অনেকই ভালো কাজ করে থাকেন। যার বিনিময়ে রয়েছে অনেক সাওয়াব ও প্রতিদান। কিন্তু অসতর্কতার কারণে তাদের নেক আমলগুলো নষ্ট হয়ে যায়। অনেকে চিন্তাই করে না যে এভাবে নেক আমলগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ইবাদত-বন্দেগি লোক দেখানোর জন্য নয়। মানুষের প্রতিটি ভালো কাজ গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য পরিশুদ্ধ নিয়তের বিকল্প নেই। কেননা কাউকে দেখানোর উদ্দেশ্যে করা যে কোনো ভালো কাজই সাওয়াবের পরিবর্তে গোনাহে রূপ নেয়।

মানুষ জীবনের প্রতিটি কাজই শুধুই আল্লাহর তাআলার সন্তুষ্টির জন্য করবে। তবেই দুনিয়া ও পরকালে এ ভালো কাজের সফলতা পাবে মানুষ।

যারা মানুষকে দেখানোর জন্য ইবাদত করবে, তাতে সে গোনাহগার হবে এবং তার সব আমল বরবাদ হয়ে যাবে। এসব ইবাদতকারী আল্লাহর কাছে প্রতারক হিসেবে চিহ্নিত। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহর সঙ্গে প্রতারণা করতে চায়। অথচ তিনিও তাদের সাথে প্রতারণা করতে সক্ষম। যখন তারা ছালাতে দাঁড়ায় তখন আলস্যভরে দাঁড়ায়। তারা লোকদের দেখায় যে তারা ছালাত আদায় করছে, কিন্তু আল্লাহকে তারা কমই স্মরণ করে।’ (সুরা নেসা : আয়াত ১৪২)

ইবাদত হবে আল্লাহর জন্য। আল্লাহর খুশি ছাড়া যারা নিজের কাজের প্রচার চায়। লোক মুখে তাদের কাজের সুনাম ছড়িয়ে পড়ার আশা করে, তারা কখনো প্রকৃত ইবাদতকারী নয়। এ রকম আশা পোষনকারীদের ব্যাপারে হাদিসে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন প্রিয় নবি।

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষকে শুনানোর জন্য কাজ করে আল্লাহ তার বদলে তাকে (কেয়ামতের দিন) শুনিয়ে দেবেন। আর যে ব্যক্তি লোক দেখানোর জন্য কাজ করে আল্লাহ তার বদলে তাকে (কেয়ামতের দিন) দেখিয়ে দেবেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)

দুনিয়াতে যে সব লোক আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া নিজেদের প্রচার ও সুনামের জন্য কাজ করবে কেয়ামতের দিন অগণিত অসংখ্য মানুষের সামনে তারা হবে অপমানিত এবং তারা পাবে কঠোর শাস্তি।

আবার কিছু মানুষ এমন থাকবে যারা আল্লাহর সন্তুষ্টিও চাইবে এবং নিজেদের সুনামও চাইবে। তাদের ভালো কাজও গ্রহণযোগ্য হবে না। তাদের আমলও বরবাদ হয়ে যাবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন রাসুল (সা:)।

যে কারণে মানুষের নেক আমল নষ্ট হয়, তাহলো-

# হিজাব পরিধান তথা পর্দা পালন করেন অথচ মেকআপ তথা সাজ-সজ্জার পাশাপাশি সুগন্ধি মেখে রাস্তায় বের হন। যে কারণে অন্য মানুষ আকৃষ্ট হয়।

# দাঁড়ি রেখেছেন। অথচ রাস্তায় চলাফেরার সময় দৃষ্টি সংযত থাকে না।

#ঠিক সময়ে নামাজ আদায় করেন কিন্তু নামাজে তাড়াহুড়ো করেন, ঠিকভাবে রুকু ও সেজদা আদায় করা হয় না।

# মানুষের সামনে নম্র-ভদ্র ও সুন্দরভাবে কথা বলেন অথচ পরিবারের সদস্য স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে কর্কশ ভাষায় কথা বলেন এবং রূঢ় আচরণ করেন।

# মেহমান আসলে তাদের সঙ্গে উত্তম আচরণ করেন ঠিকই কিন্তু এদের চলে যাওয়ার পর সমালোচনা করেন।

# অসহায় গরিব ব্যক্তিদের দান করা সত্ত্বেও তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন।

#তাহাজ্জুদ নামাজ পড়েন, রোজা রাখেন, কুরআন তেলাওয়াত করেন অথচ নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন।

#সারাদিন রোজা রাখেন, ধৈর্যের সঙ্গে পানাহার থেকে বিরত থাকেন অথচ রোজা রেখে অন্যকে গালিগালাজ করতে দ্বিধাবোধ করেন। তাদেরকে কষ্ট দেন।

#মানুষকে সাহায্য করেন অথচ এ ভালো কাজের জন্য বিনিময়ে বাহবা কিংবা প্রশংসার আশা করেন।

#খ্যাতি কিংবা সুনাম লাভের আশায় অন্যকে ভালো উপদেশ দেন অথচ আল্লাহর অনুগ্রহ আশা করেন না। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

 


বিষয়: নেক আমল


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top