সিডনী মঙ্গলবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১লা আশ্বিন ১৪৩১


শত শত রকেট ছুড়ল ইসরায়েলে, হিজবুল্লাহ


প্রকাশিত:
২৬ আগস্ট ২০২৪ ১১:৪৩

আপডেট:
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:১৫

 

ইসরায়েলে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। গত মাসে ইসরায়েলি হামলায় শীর্ষ কমান্ডার হত্যার প্রতিশোধ নিতে তিনশরও বেশি রকেট ও ড্রোন হামলা চালায় ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটি। রোববার ইসরায়েলের ১১টি সামরিক ঘাঁটি ও ব্যারাক লক্ষ্য করে ৩২০টিরও বেশি কাতিউশা রকেট ছুড়েছে বলে জানায় হিজবুল্লাহ। পাশাপাশি অনেকগুলো ড্রোন হামলাও চালানো হয়েছে। এর আগে ইসরায়েলে হামলার প্রস্তুতির অভিযোগ তুলে দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর অবস্থান লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। খবর বিবিসি, এনডিটিভি ও আলজাজিরার।
ইসরায়েলে হামলার মাধ্যমে জুলাইয়ে বৈরুতে হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ফুয়াদ শুকর হত্যার প্রতিশোধমূলক হামলার ‘প্রথম পর্যায়’ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে হিজবুল্লাহ। ফুয়াদ হত্যার পূর্ণ প্রতিশোধ নিতে ‘আরও কিছু সময়’ লাগতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। লেবাননের গোষ্ঠীটি বলেছে, তারা ইসরায়েলের গভীরে তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যবস্তুতে কোনো বাধা ছাড়াই ড্রোন পাঠিয়ে দেশটির সামরিক ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। এ সময় ড্রোনগুলো পরিকল্পনা অনুযায়ী লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করতে সক্ষম হয়েছে। তারা মেরন ও অধিকৃত গোলান মালভূমির চারটিসহ ১১টি ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটি এবং ব্যারাকে রকেট ছুড়েছে।
এ ঘটনায় ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি এলাকায় সতর্কতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে এবং এর পর অনেকগুলো বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। দক্ষিণ লেবানন থেকে ছুটে আসা অনেক রকেট ও ড্রোন ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম গুলি করে ভূপাতিত করে। পরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার জন্য ইসরায়েলে জরুরি অবস্থার ঘোষণা দেন। বন্ধ করে দেওয়া হয় দেশটির বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর। এ ছাড়া দেশটিজুড়ে ফ্লাইট চলাচল বিঘ্নিত হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহর হামলায় ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে লোকজনের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলের মেগান ডেভিড অ্যাডম অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা জানিয়েছে, দেশজুড়ে তারা অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায় আছে।
এই হামলার হুমকির জবাবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী লেবাননে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আগেই হামলা শুরু করে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) রোববার ভোরে এই হামলার ঘোষণা দেয়। আইডিএফ বলেছে, তারা ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ‘বড় আকারের’ আক্রমণের জন্য হিজবুল্লাহর প্রস্তুতি শনাক্ত করেছে। পরে হামলার হুমকি নস্যাৎ করার জন্য ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর ফাইটার জেটগুলোকে মোতায়েন করা হয়। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। দু’পক্ষের এই হামলার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেল। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনায় অগ্রগতির কোনো লক্ষণ দেখা না যাওয়ায় এই উত্তেজনা তৈরি হলো।
এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে একটি বৃহত্তর যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র ওই অঞ্চলে নৌবাহিনীর দুটি বিমানবাহী রণতরী ও একটি গাইডেড-মিসাইল সাবমেরিন পাঠিয়েছে। এটি ইসরায়েলের ওপর ইরান ও তার মিত্রদের হামলা ঠেকানোর সুস্পষ্ট প্রয়াস। পেন্টাগন তার সাবমেরিন বহরের গতিবিধি সম্পর্কে সাধারণত কোনো তথ্য প্রকাশ করে না। তবে অস্বাভাবিক হলেও মিত্র ইসরায়েলকে রক্ষায় সবকিছু প্রকাশ করে আসছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এই পদক্ষেপ ইসরায়েলকে রক্ষা এবং একটি বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধ এড়াতে সহায়তা করে। যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেও গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। শনিবার দেশটির হামলায় গাজা উপত্যকায় ৭১ জন নিহত হয়েছেন। বুলডোজার ও ট্যাংক নিয়ে মধ্য গাজার দেইর এল-বালাহ শহরে অভিযানে অংশ নিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে গত দুই দিনে সেখান থেকে এক লাখের বেশি ফিলিস্তিনি পালিয়ে গেছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১০ মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৪০ হাজার ৩৩৪ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত মানুষের সংখ্যা ৯৩ হাজার ছাড়িয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top