সিডনী বৃহঃস্পতিবার, ৯ই মে ২০২৪, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩১


‘কোটা তো বাতিল, এ নিয়ে আলাচনার দরকার কী’


প্রকাশিত:
৩ মে ২০১৮ ০০:২৮

আপডেট:
৯ মে ২০২৪ ২১:৩৮

‘কোটা তো বাতিল, এ নিয়ে আলাচনার দরকার কী’

কোটা সংস্কারের আন্দোলনের পর কোটা বাতিলের ঘোষণা দেয়ার বিষয়টি ফের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোটা সংস্কার ছাত্রদের বিষয় না। এটা সরকারের নীতিনির্ধারণী বিষয়। ছাত্ররা কোটা ব্যবস্থা বাতিল চেয়েছে, বাতিল করে দেয়া হয়েছে। সেটা নিয়ে এখন প্রশ্ন আনার দরকার কী? বুধবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন একথা বলেন তিনি।



কোটা প্রসঙ্গে প্রশ্নের এক উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, ছাত্ররা দাবি করেছে, সেটি মেনে নেয়া হয়েছে। এখন হা-হুতাশের কী আছে?



তিনি বলেন, জেলা কোটাও বাতিল হয়ে গেছে। এখন পিছিয়ে পড়া বলে কেউ অভিযোগ করতে পারবে না। আন্দোলনের সময় অনেকের ছবি সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে, এখন কেউ এসে পিছিয়ে পড়া হিসেবে চাকরি না পাওয়ার অভিযোগ করতেও পারবে না।



বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার সাজা সম্পূর্ণ আদালতের বিষয়, এখানে আমাদের কিছু করার নেই। আমি তো তাকে জেলে দেইনি। আমি যদি তাকে জেলে দিতাম তাহলে সেই ২০১৫ সালে যখন মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করলো তখনই দিতে পারতাম। কিন্তু তা আমরা করিনি।



প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালে ৬৮ জন লোক নিয়ে খালেদা জিয়া নিজেই নিজেকে একটি ঘরে মধ্যে অবদ্ধ করে রাখলেন। সেখান থেকে নির্দেশ দিয়ে একের পর এক মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করলেন। এমনকি তার ছেলে মারা গেল, আমি গেলাম তাকে সমবেদনা জানাতে। উল্টো আমাকে মুখে উপর দরজা বন্ধ করে দেয়া হলো। তখন কী করা উচিত ছিলো, উচিত ছিলো বাইরে থেকে তালা বন্ধ করে দেয়া। যাতে কেউ আর বের হতে না পারে। আমি চাইলে তা পারতাম, কিন্তু করিনি। আমি রাজনৈতিকভাবে কিছু করতে চাইনি বলেই করিনি।



একটা অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্যায় কোনটা জানেন? ফাতেমার বিষয়টা। একজন অপরাধীর (খালেদা জিয়া) সঙ্গে নিরপরাধ ফাতেমাকেও কারাগারে কাটাতে হচ্ছে। পৃথিবীর কোন দেশে আছে, একজন সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীর সঙ্গে সহকারী দেয়া হয়?



তারেক রহমানকে দেশে ফেরানো বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারেক রহমান একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সে বিদেশের মাটিতে রয়েছে, সেখানে বসে প্রতিদিন তারা দেশ বিরোধী কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। আমরা অনেক দেশ থেকে এ ধরণের আসামিকে নিয়ে এসেছি। আমরা নিশ্চই তারেককেও নিয়ে আসবো।



তারেক রহমানের পাসপোর্ট ইস্যুর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি বলছে তারেক রহমান ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছে। কোনো দেশে রাজনৈতিক আশ্রেয় নিলে নিয়মেই আছে সে আর নিজ দেশে ফিরতে পারবে না। রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে আবেদনে উল্লেখ করতে হয় সে যে দেশের পাসপোর্ট নিয়ে এসেছে সে দেশে ফিরতে পারবে না। তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে ব্রিটেনের সঙ্গে কথা হয়েছে। সে দেশের আইন অনুযায়ী যেভাবে সম্ভব আমরা তাকে ফিরিয়ে আনব।



বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে বয়সসীমা এবং ছাত্রত্ব আছে কিনা তা দেখা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছাত্রলীগের আসন্ন জাতীয় সম্মেলনে নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ের পদ্ধতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।



এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব যেভাবে হওয়ার সেভাবেই হবে। ইতোমধ্যে কে কে প্রার্থী তাদের তালিকা নেয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচনের পদ্ধতি আছে। তালিকায়ে আসা আগ্রহীদের ডেকে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়। হলে এই কমিটির প্রেস রিলিজ দেয়া হবে। এতে সফল না হলে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে ভোট হবে। তবে ভোটের মাধ্যমে হওয়ারও একটা ঝামেলা আছে। তারা ইয়াং ছেলেপুলে, ভোটের মধ্যে অনেক কিছুই হতে পারে। তারা প্রভাবিত হতে পারে। তবে আমরা দেখব যদি ভোটের মধ্যে যোগ্য নেতৃত্ব এসেছে কিনা। না এলে তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আপনারা জানেন, ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে একটা উপযুক্ত বয়সসীমা রয়েছে, তাদের ছাত্র হতে হবে। এদের মধ্য থেকেই নতুন নেতৃত্ব বেছে নেয়া হবে।



রোহিঙ্গাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে বিশ্ব সম্প্রদায়। কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রশংসা হয়েছে, সম্মেলনের ঘোষণায় রোহিঙ্গা বিষয়ক অনুচ্ছেদ যুক্ত হয়েছে। যেটা আমাদের সরকারের কূটনৈতিক সাফল্য বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।



প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ সম্মেলনে রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশের ভূমিকার যে প্রশংসা হয়েছে, তা সরকারের কূটনৈতিক সাফল্য। সফরে অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসাও বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছ থেকে পেয়েছেন।



নারীর অধিকার সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বপ্রথম আমাদের সংবিধানে নারীদের জন্য সমান অধিকারের বিষয়টি নিশ্চিত করে গেছেন। এ সময় অস্ট্রেলিয়ায় গ্লোবাল সামিট অন উইমেনে প্রাপ্ত ‘গ্লোবাল উইমেন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ দেশের নারী সমাজের প্রতি উৎসর্গ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top