সিডনী মঙ্গলবার, ২১শে মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


পুলিশি তল্লাশি এড়াতে গিয়ে অভিবাসীবাহী গাড়ি উল্টে নিহত ৭


প্রকাশিত:
১৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:৫২

আপডেট:
২১ মে ২০২৪ ০৪:৪৬

 

জার্মানির মহাসড়কে পুলিশি তল্লাশি এড়াতে গিয়ে একটি অভিবাসীবাহী গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এতে এক শিশুসহ সাতজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার মধ্যরাত ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে মিনিবাসটি জার্মানির আম্পফিং ও ভাল্ডক্রাইবুর্গ শহরের মধ্য দিয়ে বের হয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে।

পুলিশ জানিয়েছে, নিরাপত্তা তল্লাশি এড়াতে গিয়ে গাড়িটির গতি বাড়িয়ে দিয়েছিলেন চালক।
এটি তীব্রগতিতে ছুটে যাওয়ার সময় পুলিশ খেয়াল করে গাড়িটি মানুষে ভর্তি।

পুলিশ আরো জানায়, অস্ট্রিয়ান নম্বরধারী মার্সিডিজ ভিটো মিনিবাসটিতে ২৩ জন মানুষ ছিল। অস্ট্রিয়া-জার্মানি সীমান্ত থেকে অন্তত ৫০ কিলোমিটার পথ পার হয়ে এসেছিল গাড়িটি। ধারণা করা হচ্ছে, গাড়িটির গন্তব্য ছিল মিউনিখ শহর।
মিউনিখের দিকে যাওয়ার সময় পুলিশি তল্লাশি এড়ানোর চেষ্টা করেছিল গাড়িটি।

ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িটির উইন্ডশিল্ড ছিন্নভিন্ন হয়ে একটি রেললাইনের ওপর গিয়ে পড়ে। জরুরি পরিষেবাকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করেন। ওই সময় সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা বিশ্বাস করে, গাড়িটিতে মানবপাচারকারী ছিল। অভিবাসী পাচারের জন্যই মিউনিখের দিকে যাচ্ছিল গাড়িটি। কারণ অনুসন্ধানে এর মধ্যেই একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরু হয়েছে।

পুলিশের মুখপাত্র স্টিফান জনটাগ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘মৃতদের মধ্যে একটি ছয় বছরের শিশুও রয়েছে।’ তবে ওই শিশুর লিঙ্গ ও জাতীয়তা সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি তিনি।
তবে তিনি জানিয়েছেন, ‘চালক ও সন্দেহভাজন মানবপাচারকারী বেঁচে আছে। তবে তারা আহত হয়েছে।’

জনটাগ বলেন, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী গাড়ির যাত্রীরা সিরিয়া ও তুরস্কের নাগরিক। তবে গাড়ির চালককে ‘রাষ্ট্রহীন’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

দুর্ঘটনায় আহত ১৬ জনের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর এবং তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে।

অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার অভিবাসী পাচারের সময় ঘটা এ সড়ক দুর্ঘটনায় ‘বিস্মিত’ হয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এই ভয়ানক ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রতীয়মান হয়, নিষ্ঠুর ও অমানবিক উপায়ে মানবপাচারকারীরা মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।’

ফেজার বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি গভীর সহানুভূতি জানাচ্ছি। বিশেষ করে গাড়িতে থাকা শিশুদের জন্য আমার খুব চিন্তা হচ্ছে।’

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অস্ট্রিয়া থেকে জার্মানির দিকে মানবপাচার বেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে আসছিল কর্তৃপক্ষ। গত মাসে বুর্গহাউজেন শহরেও মানবপাচারকারীদের একটি গাড়ি পুলিশি তল্লাশি এড়াতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার বলেন, ‘মানবপাচার ঠেকাতে সীমান্তে পুলিশের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছি আমরা। আমাদের অবশ্যই মানবপাচারকারী চক্রের নিষ্ঠুর ব্যবসা ধ্বংস করতে হবে। কারণ তারা মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে মুনাফা অর্জন করে।’

এদিকে অনিয়মিত অভিবাসী আসার চাপ বেড়ে যাওয়ায় চলতি অক্টোবরের শুরু থেকে পূর্ব সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ জোরদার করেছে জার্মানি। এ বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আড়াই লাখেরও বেশি আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছে জার্মানিতে, যা ২০২২ সালের পুরো বছরের মোট আবেদনের চেয়ে বেশি। সেই সঙ্গে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণের পর ১০ লাখেরও বেশি ইউক্রেনীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে জার্মানি।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top