সিডনী বৃহঃস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১


অস্ট্রেলীয়রা ছুটির পর অফিসের ফোন না ধরার অধিকার পেলেন


প্রকাশিত:
২৭ আগস্ট ২০২৪ ১২:০৭

আপডেট:
২৭ আগস্ট ২০২৪ ১৫:০৫

 

কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য রক্ষায় নতুন এক আইন পাশ করেছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। এই আইন পাশ হওয়ার ফলে ছুটির পর কর্মীরা অফিসের ইমেল, মেসেজ বা ফোনকল অগ্রাহ্য করার আইনি অধিকার পেলেন। ২৬ আগস্ট চালু হওয়া এই নতুন আইন বলছে, কাজের সময়ের বাইরে পাঠানো ইমেল না পড়লে বা ফোন না ধরলে সেই কর্মীকে কোনো শাস্তি দেওয়া যাবে না।
অস্ট্রেলিয়ার সুইনবার্ন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর জন হপকিন্স বলেন, “ডিজিটাল প্রযুক্তি আসার আগে এমন অনধিকার চর্চা ছিল না। মানুষ অফিস শেষ করে বাসায় যাওয়ার পর, পরের দিন কাজে ফেরা পর্যন্ত কোনো যোগাযোগ থাকত না। কিন্তু এখন, ইমেল, মেসেজ, ফোনকল সবই আসতে থাকে।”
অস্ট্রেলিয়া ইন্সটিটিউট ২০২৩ সালে একটি জরিপ চালায়। যেখানে দেখা যায় যে, ২০২৩ সালে অস্ট্রেলিয়ানরা গড়ে ২৮১ ঘণ্টা বাড়তি, বেতনহীন কাজ করেছেন। এই কাজের আর্থিক মূল্য দাঁড়ায় ১৩০ বিলিয়স অস্ট্রেলিয়ান ডলারের সমান (৮৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)। অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি আরও প্রায় ২৪টি দেশে একই ধরনের আইন চালু রয়েছে। এসব দেশের বেশিরভাগই ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকায়। ২০১৭ সালে এমন আইন চালু করে ফ্রান্স। ২০১৮ সালে একটি সংস্থাকে এই আইনের আওতায় ৬৬ হাজার ইউরো জরিমানাও দিতে হয় এক কর্মীকে তার ফোন সর্বক্ষণ চালু রাখতে বলায়।
বিজ্ঞাপন খাতে কর্মরত রেচেল আবদেলনুরের মতে, এই আইন তাকে নিজের জন্য সময় বের করতে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, “আমার মতে এমন আইন থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আমাদের ফোনে এত সময় কাটাই যে, সারাক্ষণ ইমেল চেক করতে থাকি। আজকাল সত্যিই বিচ্ছিন্ন থাকা খুবই কঠিন।” তবে জরুরি সেবা ও অনিয়মিত ঘণ্টার চাকরির ক্ষেত্রে আইনটি নিয়োগকর্তাদের কিছুটা স্বাধীনতা দিয়েছে। গ্রহণযোগ্য যুক্তি থাকলেই কেবল এ ধরনের চাকরিতে নিয়োজিত কর্মীরা অফিস থেকে আসা ফোন, টেক্সট বা ইমেল অবজ্ঞা করতে পারবেন।
কোন দাবি যুক্তিযুক্ত এবং কোনটি নয়, তা ঠিক করবে অস্ট্রেলিয়ার ফেয়ার ওয়ার্ক কমিশন সংস্থাটি। এই সংস্থাটি প্রতিটি কর্মীর কাজের ধরন, তার ব্যক্তিগত জীবন ও কোন সময়ে ও পরিস্থিতিতে তাকে তার বস যোগাযোগ করেন, এই সব খতিয়ে দেখবে। কোনো কর্মীকে এই আইন খেলাপের জন্য ১৯ হাজার অস্টেলিয়ান ডলার পর্যন্ত জরিমানা করতে পারবে এই সংস্থা। কোনো সংস্থার জন্য জরিমানার পরিমাণ যেতে পারে ৯৪ হাজার অস্টেলিয়ান ডলার পর্যন্তও।
কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার কিছু উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী সংস্থাদের মতে, এই নিয়ম কর্মী ও তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মীদের জন্যেও অস্পষ্টতা সৃষ্টি করবে। এতে কাজে বৈচিত্র্য কমবে ও এতে অর্থনীতির ওপর খারাপ প্রভাব পড়বে। সমালোচনা থাকলেও কর্মীদের বেশ কয়েকটি সংগঠন জানিয়েছে, এই আইন কর্মীদের অধিকার নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top