সিডনী শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১


অভিবাসী ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মাঝে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার হার বৃদ্ধি


প্রকাশিত:
২৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৫

আপডেট:
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৫৩

অভিবাসী ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মাঝে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার হার বৃদ্ধি

নানা জরিপে প্রাপ্ত পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী প্রতি বছর অস্ট্রেলিয়ায় গড়পড়তা ২,৫০০ মানুষ আত্মহত্যা করছে। এদেশের প্রতি পাঁচ জন মানুষের মাঝে এক জন কোন না কোন সময়ে বিভিন্ন ধরণের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরণের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার হার নানা কারণে তরুণ বয়সী অভিবাসী এবং বিদেশ থেকে পড়ালেখা করতে আসা ছাত্রছাত্রীদের মাঝে অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। 



মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যায় আক্রান্ত মানুষরা মেজর ডিপ্রেশন বা হতাশা, এংজাইটি বা উদ্বেগ, সাইকোসিস বা বিভ্রম এই সমস্ত উপসর্গে ভূগেন। ড্রাগস এবং এলকোহলের শরণাপন্ন হওয়া এবং এমনকি আত্মহত্যার মতো চরম মাত্রার দুঃখজনক পরিণতিও সংঘটিত হয় মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এসব সমস্যার কারণে। 



অস্ট্রেলিয়ায় সরকারী ভাবে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত মানুষদের জন্য সহায়তা করার জন্য প্রচুর ব্যবস্থা রয়েছে। তবে কেউ যখন এদেশে নতুন আসে এবং অস্থায়ীভাবে থাকে, জীবনযাত্রার চাপ মোকাবেলা করতে গিয়ে যদি তারা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হয় তখন ঐসমস্ত সেবা ও সহায়তা চাওয়ার ক্ষেত্রে তারা বেশ পিছিয়ে থাকে। এর ফলে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো প্রতিনিয়ত এবং উত্তরোত্তরভাবে গুরুতর হতে থাকে। 



মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সেবা আদায় করতে এই দ্বিধা ও পশ্চাতপদতার পেছনে বেশ কিছু কারণ কাজ করে। অনেক দেশ ও সমাজের সংস্কৃতিতে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সেবা গ্রহণ করাকে অত্যন্ত নেতিবাচক ভাবে বিবেচনা করা হয়। তাছাড়া ভাষাগত এবং সাংস্কৃতিক নানা প্রতিবন্ধকতা অনুভব করার কারণেও অনেকে নিজেদের এই কঠিন সমস্যাগুলো নিয়ে বিশেষজ্ঞদের কাছে যাওয়া ও প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকেন। অভিবাসী জীবনের আর্থিক চাপ এবং সীমাবদ্ধ সামাজিক ব্যবস্থাপনাও এই পরিস্থিতির অন্যতম কারণ হয়ে থাকে। 



অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাঝে সাম্প্রতিক সময়ে আত্মহত্যার মতো চরম দুঃখজনক ঘটনার বেশ কয়েকটি পুনরাবৃত্তি হয়েছে। এছাড়াও অনেক মানুষ আছেন যারা অনেক প্রতিকূলতার মাঝেও নীরবে নানা মানসিক সমস্যার সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে যাচ্ছেন। 



এধরণের সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন হলো জীবনযাত্রার মাঝে ইতিবাচক উপাদান যোগ করা। তবে সর্বাগ্রে প্রয়োজন হয় সামাজিক কাঠামোর মাঝে সচেতনতা ও প্রকৃতি সহমর্মিতার মনোভাব তৈরি করা। 



সুতরাং কেউ যদি কখনো অনুভব করেন যে কোন ধরণের মানসিক সমস্যা বা অনুভূতি নেতিবাচকভাবে তার দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় কোন প্রভাব ফেলছে তাহলে দেরি না করেই দ্রুত বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়ার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। অস্ট্রেলিয়ায় যারা জিপি বা সাধারণ চিকিৎসক হিসেবে কাজ করে তারা এ ধরণের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যার ক্ষেত্রেও প্রাথমিক পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করেন এবং প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠিয়ে থাকেন। 



প্রবাসী কমিউনিটির প্রতিটি মানুষেরই বুঝতে হবে, যে কোন মানুষই মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে। এটি কোন দুর্বলতা নয়, বরং মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ সহায়তা নেয়া হলো একই সাথে অত্যন্ত সাহসী এবং বুদ্ধিমান একটি পদক্ষেপ। 


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top