সিডনী শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১


পেন্সিল অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদযাপন


প্রকাশিত:
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২১:৪০

আপডেট:
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:০০

পেন্সিল অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদযাপন

প্রভাত ফেরী: গত ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকালে সিডনির ইঙ্গেলবার্নে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল পেন্সিল অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় বর্ষপূর্তি। জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে বিকাল ৪ টায় মূল অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সাকিনা আক্তার ও জয় কবির। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আরিফ ইসলাম। 



প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই অনুষ্ঠানটি আকস্মিক আশীর্বাদে ভরিয়ে তোলেন  বাংলাদেশের স্বাধীনতা পদক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক সেলিনা হোসেন। তাকে পেন্সিল  অস্ট্রেলিয়ার সদস্যরা ফুলের তোড়া আর উপহার  দিয়ে বরণ করেন। তার  উপস্থিতে পেন্সিলররা কেক কেটে তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদযাপনের করে। 



বর্ষপূর্তির আয়োজনে ছিল অবিরাম গল্প বলা, গান, নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি, স্মৃতিকথা, সমবেত গান। শিল্পী তালিকায় ছিলেন সিডনির সব বিখ্যাত স্থানীয় শিল্পীরা। একটা সংহত পরিবারের মতোই তারা আয়োজন করেছিলেন এই উপভোগ্য অনুষ্ঠান। আগামী জন্ম বার্ষিকীর আগে পর্যন্ত রয়ে যাবে এর রেশ। ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে পেন্সিল অস্ট্রেলিয়া উদযাপন করার প্রত্যয় জানান পেন্সিলের মডারেটর সাকিনা আক্তার।





অবিরাম গল্প বলা পর্বটি পরিচালনা করেন সালেহ আহমেদ জামী। একেবারেই অপ্রচলিত এই পর্বে অবিরাম গল্প শোনান কবিরউদ্দিন সরকার, শাখাওয়াৎ নয়ন , মমতাজ রহমান,আইভি রহমান ও সুরঞ্জনা জেনিফার রহমান। গল্পকারদের অভিনবত্বে বিমোহিত হয়েছিলেন পেন্সিলররা। তাঁদের উপস্থাপনে মুন্সিয়ানা ছিল লক্ষ্য করার মতন। বাচিক শিল্পীরা তাঁদের সহজাত ভঙ্গিমায় ফুটিয়ে তোলেন অসামান্য কাব্য প্রতিভা। তন্ময় করা কবিতা আবৃত্তি করে শোনান মুগ্ধ রবি, শহিদুল আলম বাদল, সুলতানা পারভীন, শাখাওয়াৎ নয়ন, অনীলা পারভীন, জেরীন  আফরীন, যোবাইদা রত্না, তাম্মি পারভেজ, মাসুদ পারভেজ, মুনা মুস্তাফা, এনজেলিনা ঢালী, নির্মল চক্রবর্তী, নোমান শামিম, আরিফুর রহমান , মিল্টন হাসনাত   ও ফারজানা হাসান। মনোমুগ্ধকর নৃত্যে অংশগ্রহণ করেন সামারা জাহান হক, অরুন্ধতী ঢালী (অর্চি) ও সারিকা চৌধুরী। সব শেষে পেন্সিলরদের গান গেয়ে শোনান জিয়াউল ইসলাম তমাল, শাহনাজ পারভীন, ইয়েজ পারভেজ মিহির, রাশনান, নীলাদ্রি চক্রবর্তী, সাইফুর রহমান খান, ফারলিন আলম ও রাহুল হাসান। যন্ত্রের সহযোগিতা করেন তবলায় জিয়াউল ইসলাম তমাল, গিটারে  ইয়েজ পারভেজ মিহির, কিবোর্ডে নীলাদ্রি চক্রবর্তী,  হারমোনিয়ামে সাকিনা আক্তার। 



সংগীতের মূর্ছনায় তাঁরা মাতিয়ে রাখেন দর্শক শ্রোতাদের সমাপ্তি ঘোষণার আগে পর্যন্ত।  এরই মাঝে কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে পেন্সিল অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে উপহার প্রদান করা হয় অংশগ্রহণ করা পেন্সিলর পরিবারদের। অনুষ্ঠানটির সার্বিক পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিলেন সাকিনা আক্তার ও জয় কবির। 



তাঁদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতায় ছিলেন জিয়াউল ইসলাম তমাল, সালেহ আহমেদ জামী, শাখাওয়াৎ নয়ন, ইয়েজ পারভেজ মিহির, অনামিকা ধর,  মুনীর বিশ্বাস,  ফরিদা আক্তার, আজিজা শাহাদাত, ফিরোজ ফারুক, শুভ্রা মুস্তারিন,  আসমা আলম কাশফী সহ আরো অনেক শুভানুধ্যায়ী। শব্দ নিয়ন্ত্রনে নিয়োজিত ছিলেন জিয়াউল ইসলাম তমাল,  ইয়েজ পারভেজ মিহির।





উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বরেণ্য শিল্পীরা,  রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, আলোকচিত্রী, সকল শুভাকাঙ্ক্ষী।



প্রসঙ্গত সৃজনশীল ও সৃষ্টিশীল লেখক-পাঠকের, রুচিশীল শিল্পী ও উদ্ভাবনী চিত্রগ্রাহকদের, মার্জিত ও পরিমিতিবোধ সম্পন্ন পেন্সিলরসদের মনোজ্ঞ এই আয়োজন মুগ্ধ করেছে অংশ নেওয়া সকলকে। শুদ্ধ বাংলা সাহিত্য চর্চা, সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ এবং নান্দনিক কিছু সৃষ্টির প্ল্যাটফর্ম তৈরীর স্বপ্ন নিয়ে ২০১৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর  সৃষ্টি হয়েছিল ফেসবুকভিত্তিক সাহিত্যচর্চার গ্রূপ ‘পেন্সিল’। সেই পেন্সিলের ব্যাপ্তি আজ পৃথিবীর সকল সীমায় পৌঁছে গেছে। দ্বীপ মহাদেশ অস্ট্রেলিয়ায় সহস্রাধিক সদস্য প্রতিদিনই তাঁদের সৃষ্টিশীলতায় এই স্বপ্ন বাহনকে ঋদ্ধ করে চলেছেন নিরলসভাবে।



শুরু থেকেই পেন্সিলের লক্ষ্য খুব সাধারণ আবার একই সাথে অসাধারণ! চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির চর্চা ছড়িয়ে দেওয়া। তৃতীয় বছর পূর্তিতে এসে আজ সেই শপথ আরো মজবুত ও দৃঢ় ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হলো। সিডনিতে পেন্সিলররা ঘোষণা দিলেন এই অচলাতয়নের সময়কালকে একটি শুদ্ধ সাংস্কৃতিক চর্চার চারণভূমি হিসাবে দাঁড় করিয়ে তাঁরা সম্মুখ পানে এগিয়ে যাবেন। বর্তমানে পেন্সিলের আছে ‘পেন্সিল ফাউন্ডেশন ও পেন্সিল পাবলিকেশনস'। নানান ধরণের সামাজিক সচেতনতা এবং উন্নয়নের পাশাপাশি প্রকাশনার সাথে তারা জড়িয়ে।



অনলাইনভিত্তিক একটি গ্রূপের এই দুর্বার শক্তি, নিখাদ ভালোবাসা আর অকল্পনীয় আস্থাশীলতায় আজ পৃথিবীর প্রতিটি কোণায় পেন্সিলরের জন্ম দিচ্ছে প্রতিদিন। এই অর্জন সকল পেন্সিলরের। এই উন্মত্ত নব জাগরণ এসেছে অস্ট্রেলিয়াতেও।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top