মালয়েশিয়ার সিদ্ধান্তে শ্রমবাজারে বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কা!
প্রকাশিত:
২৭ আগস্ট ২০১৮ ০১:৩৫
আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ০৮:৩৬

মালয়েশিয়া সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সেদেশে বাংলাদেশের অভিবাসী কর্মী নিয়োগ বন্ধের ঘোষণায় বাংলাদেশের শ্রমবাজারে বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
তবে এটিকে সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে এই খাতকে সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেটের প্রভাবমুক্ত করে প্রয়োজনীয় সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
‘একটি সংঘবদ্ধ চক্রের অনৈতিক ব্যবসা পরিচালনার কারণে মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে’- গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন সংবাদের সূত্র ধরে রোববার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানায় টিআইিবি।
বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী নিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্তের সংবাদে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। অন্যদিকে জনশক্তি রপ্তানিতে একচেটিয়া ও সিন্ডিকেটভিত্তিক অনৈতিক ব্যবসা বন্ধে মালয়েশিয়া সরকারের এ সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। কারণ এর মাধ্যমে মালয়েশিয়া সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে ইতিবাচক ও অংশগ্রহণমূলক আলোচনার মাধ্যমে পুনরায় অভিবাসী কর্মী প্রেরণের সুষম সুযোগ তৈরির পথ সুগম হয়েছে।
‘তবে এটাও পরিষ্কার যে, এ সুযোগ গ্রহণের পূর্বশর্ত হচ্ছে পুরো খাতকে সিন্ডিকেটের প্রভাবমুক্ত করা এবং যারা অবৈধ কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা’, বলেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক।
‘আমরা ব্যবসাটিকে বাংলাদেশের সব এজেন্টদের জন্য খুলে দিতে চাই’- গণমাধ্যমে প্রকাশিত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সূত্র ধরে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যে প্রেক্ষাপটে মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশের অভিবাসী কর্মী নিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়ায় সুশাসন নিশ্চিত করার টিআইবি’র দাবির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে টিআইবি’র আশঙ্কাই সত্য হলো।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত টিআইবি’র একটি গবেষণাতে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশে অভিবাসী কর্মী প্রেরণে একচেটিয়া ব্যবসার মাধ্যমে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন ও গ্রাহকদের শোষণ প্রক্রিয়া রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করে সরকারকে একটি পলিসি ব্রিফ প্রদান করে টিআইবি। এ বিষয়ে যথাসময়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে অভিবাসী কর্মী নিয়োগ বন্ধের মতো এ ধরনের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মালয়েশিয়ার এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে অবিলম্বে সেদেশের সরকারের সাথে কার্যকর আলোচনার মাধ্যমে অভিবাসী কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ সিন্ডিকেট মুক্ত করে উন্মুক্ত ও প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতিতে, স্বচ্ছতার ভিত্তিতে যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য ব্যয় নির্ধারণ করে পুনরায় শ্রমিক প্রেরণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে বাংলাদেশকেই উদ্যোগ নিতে হবে। নাহলে বিশাল এই শ্রমবাজার স্থায়ীভাবে বন্ধের ঝুঁকি সৃষ্টি হবে, যা বেকারত্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের অর্থনীতির জন্য রেমিট্যান্স অর্জন বাধাগ্রস্ত করবে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: