মধু কামালকে মৌমাছিরা ভালোবাসার আদর বুলিয়ে দিলেও কামড়িয়ে আহত করে না
প্রকাশিত:
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:২৩
আপডেট:
১৬ মার্চ ২০২৫ ০৯:৪৯

যেখানে মৌমাছিরা দলবদ্ধ থেকে বিস্তার করে বাসা বাধে সেখানেই কামাল নামের এক ব্যক্তিকে খুজেঁ বেড়ায় এলাকার লোকজন। মৌমাছির বাসায় যদি কেহ নাড়াচাড়া করে তাহলে তারা উড়ে উড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায় অনেক সময় লোকজনকে কামড় দিয়ে আহতও করে। কিন্তু যত বড়ই মৌমাছির চাক থাকুক না কেনো মধু কামালের কাছে যেন মৌমাছিরা নত হয়ে তার নিকট আশ্রয় নেয়। তার গায়ে মৌমাছিরা দলবদ্ধ হয়ে বিস্তার করে।
এমনি এক চিত্র মৌলভীবাজার জেলায় সিন্দুরখাঁন ইউনিয়নের ইজরাগাঁও গ্রামের কামাল মিয়া। এলাকার লোকজন তাকে মধু কামাল বলেই ডাকে। তার পিতা মরহুম কনর মিয়া।
দীর্ঘদিন থেকে তিনি বিভিন্ন জায়গায় মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করেন। তার মধু সংগ্রহের পদ্ধতি বেশ ভয়ংকরী বটে, মনে হয় মৌমাছিগুলো তার একান্ত বন্ধু, কামড়ায় না, কোনো উৎপাত করেনা মৌমাছিরা যন্ত্রনা দেয় না। এলাকায় তাকে মধু কামাল বলে ডাকা হয়। ডাক আসলে ছুটে যান দূর দূরান্তে, একান্তই সখের বশিভূত হয়ে তিনি নিজেকে এখন ব্যস্ত রাখছেন এ পেশায়।
ইজরাগাঁও গ্রামের ফুরুক মিয়া বলেন, কামাল মিয়া অনেক দিন ধরে মধু সংগ্রহ করে থাকেন। মৌমাছিরা তার একান্তই বন্ধুর মতো। শুরুতে মৌচাক (বলারচাক) ভাঙ্গতে গিয়ে অনেক বলা তাকে কামড়িয়েছে। এখন মোমাছিরা মৌচাক ভাঙ্গার সময় তার গায়ে ভালোবাসার আদর বুলিয়ে দিলেও কামড়িয়ে আহত করে না। এলাকার লোকজন কোথাও মৌচাক দেখলে তাকে খবর দিয়ে মধু সংগ্রহ করিয়ে থাকেন। উনি মধু সংগ্রহকালে মৌমাছিরা তাকে কামড় দেয় না।
এবিষয়ে সিন্দুরখাঁন ইউনিয়নের কুঞ্জবন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ডা. একরামুল কবীর বলেন, মধু কামাল অনেক সাহসী। মধু সংগ্রহকালে দেখা যায় তার গায়ে এসে মৌমাছিড়া আপশ মেনে নেয়। সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। সারা গ্রামে কামাল মিয়া মধু সংগ্রহ করে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে সে এ পেশায় নিয়োজিত আছে। যদি সরকারি বা অন্য কোনভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পায় তাহলে মধু কামাল নিজে মধু চাষ করে নিজেকে আরও স্বাবলম্বী করে তুলতে পারবে এবং এলাকার অনেক যুবকরাও তার সাথে মধু চাষে এগিয়ে এসে বেকারত্ব দূর করতে পারবে।
মধু সংগ্রহকারী কামাল মিয়া জানান, তিনি দীর্ঘ ২২ বছর ধরে এ পেশায় আছেন। বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের মধু নিজ হাতে যত্ন সহকারে সংগ্রহ করে থাকেন। যেমন শষ্য ফুল, লিচু ফুল, বরই ফুল ইত্যাদি। মৌমাছিরা ভোবে ওনার গায়ে এসে বসে থাকে সে ব্যাপারে তিনি বলেন, মৌ’রা ভোবে পোষ মানে ঠিক, সে কৌশল অবলম্বন করে তিনি মধু সংগ্রহ করে থাকেন। অন্য কোন মেডিসিন বা কোন প্রকার প্রক্রিয়া অবলম্বন করেন না।
তিনি আরও বলেন, প্রথম প্রথম মৌমাছিরা কামড় দিলেও এখন আর কামড় দেয় না। তাহার কৌশলে মৌমাছিড়া তার নিকট পোষ মেনে গায়ে এসে বসে থাকে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: