প্রিজনভ্যানে জবি শিক্ষার্থীদের হামলা
প্রকাশিত:
৬ মার্চ ২০১৯ ০৭:১০
আপডেট:
১৬ মার্চ ২০২৫ ০০:১৯

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীরা পুলিশের একটি প্রিজনভ্যানে হামলা ও ভাঙচুর করেছে। মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে রাজধানীর তাঁতীবাজার এলাকায় বংশাল থানার সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মিরপুর গামী অনিবার্ণ,উত্তরণ এবং গাজীপুরগামী উল্কা বাস বংশাল থানার সামনে তাঁতীবাজার মোড় অতিক্রম করার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ফয়সালকে রেখে চলে যায়। ফয়সাল মিরপুরগামী উত্তরণ বাস ধরতে পুলিশের একটি প্রিজন ভ্যানে উঠে যায়। এসময় প্রিজন ভ্যানে থাকা পুলিশ সদস্যরা তাকে লাথি মেরে নিচে ফেলে দেয়। ফয়সাল রাস্তার মধ্যে পরে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি বাসের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশের প্রিজনভ্যানে ভাঙচুর শুরু করে। এসময় প্রিজনভ্যানে ৫২ জন আসামী ছিলেন। শিক্ষার্থীদের হামলায় প্রিজনভ্যানের চালকসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। আহত চালককে ন্যাশনাল মেডিকেলে ভর্তি করানো হয়েছে।
কেরানীগঞ্জের বাসা থেকে মোহাম্মদ সেলিমকে (৩৮) তুলে নিয়ে গিয়েছিল মুন্সিগঞ্জের সিরাজদীখান থানা পুলিশ। পরবর্তীতে ধলেশ্বরী নদীর চরে নিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে শত শত মানুষের সামনে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এমনই অভিযোগ করেছেন নিহতের স্ত্রী নাসরিন বেগম। গতকাল মঙ্গলবার সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নিহত সেলিমের বৃদ্ধ মা ও নাবালক দুই শিশু সন্তান।
লিখিত বক্তব্যে নাসরিন বেগম জানান, সেলিমের বিরুদ্ধে সিরাজদীখান থানাসহ কোনো থানায়ই অভিযোগ দূরের কথা একটি জিডিও ছিল না। ২০০৬ সালে তার শ্বশুর রুহিতপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদ আনোয়ার হোসেন মেম্বারকে হত্যা করা হয়। ওই হত্যাকান্ডে যারা জড়িত ছিল তাদের মদদে ও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দুীর্ঘ ১২ বছর পর তার পুত্র সেলিমকে গত ১ মার্চ শুক্রবার নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। সিরাজদীখান থানার ওসির নেতৃত্বে এই হত্যাকান্ড ঘটে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, প্রথমে তার স্বামীকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। এসময় কারণ জানতে চাইলে পুলিশ সেলিমের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ জানাতে পারেনি। ধরে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ সেলিমের উপর নির্মম নির্যাতন চালায়। পরে ধলেশ্বরী নদীর চরে নিয়ে সেলিমকে অপরাধী বানিয়ে শত শত লোকজনের সামনে নির্মমভাবে হত্যা করে।
বিধবা নাসরিনের অভিযোগ, কি অন্যায় করেছিল তার স্বামী? যার কারণে পুলিশ বিচার বহির্ভূতভাবে সেলিমকে প্রকাশ্যে হত্যা করলো! পিতৃহারা অবুঝ দুই সন্তান ও বৃদ্ধা শাশুড়িকে নিয়ে বিচারের জন্য কোথায় দাঁড়াবো?
তিনি জানান, তারা জানতে পেরেছেন ২০০৬ সালে তার শ্বশুর আওয়ামীলীগ নেতা শহীদ আনোয়ার হোসেন মেম্বার হত্যাকান্ডে জড়িতরা সিরাজদীখান থানার ওসিকে মোটা অংকের টাকা উৎকোচ দিয়ে তার ছেলে সেলিমকে হত্যা করিয়েছে। যাতে করে কেউ ওই হত্যাকান্ডের বিচার চাইতে না পারে।
তিনি এই দুটি হত্যাকান্ডের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও সিরাজদীখান থানার ওসিসহ জড়িত অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
প্রিজন ভ্যানে উঠতে চাওয়া জবি শিক্ষার্থী ফয়সাল বলেন, আমি ভুল করে পুলিশ ভ্যানে উঠে সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরণ বাস ধরার জন্য উঠেছিলাম। পুলিশ আমাকে লাথি মেরে নিচে ফেলে দিয়েছে।
কোতয়ালী জোনের এসি বদরুল হাসান রিয়াদ বলেন,শিক্ষার্থীদের হামলায় প্রিজন ভ্যানটি ভাঙচুর হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: