‘আমি মনে হয় আর বাঁচবো না, সেই শিক্ষক যেন ছাড় না পায়’
প্রকাশিত:
৮ এপ্রিল ২০১৯ ১৫:৩২
আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ২০:৫১

‘শোন ভাই, আমি মনে হয় আর বাঁচবো না। যদি আমার কিছু একটা হয়ে যায়, মায়ের দিকে খেয়াল রাখবি। আর তোর প্রতি আমার নির্দেশ, আমার এই ঘটনার জন্য যে দায়ী, সেই মাদরাসার শিক্ষক যেন কোনোমতেই ছাড় না পায়। সঠিক বিচার যেন তার হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন সেই মাদরাসাছাত্রী কাতর স্বরে কথাগুলো বলছিলেন।
সোমবার (৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টায় এভাবেই ভাইয়ের কাছে ফেনীতে দুর্বৃত্তদের আগুনে দগ্ধ হয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন সেই ছাত্রী কাতর স্বরে কথাগুলো বলছিলেন।
মেয়েটির ভাই রায়হান বলেন, এ কথাগুলো বলার সময় ওর শ্বাসকষ্ট হয়েছিল। এরপর আর কোনো কথা বলতে পারেনি, ওকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে তার মামা মো. সেলিম সাংবাদিকদের জানান, আমি ওকে বার বার জিজ্ঞেস করেছি বল কে তোর গায়ে আগুন দিয়েছে? উত্তরে সে আমাকে বলে, ‘মামা তাদের কণ্ঠটা আমার চেনা, আমার কাছের (পরিচিত) মানুষ, হাতটা ফর্সা। চেহারাটা মনে করতে পারছি না।’
এদিকে বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন সোমবার দুপুরে বলেন, ওর অবস্থা ভালো নয়। আগের দিনের চেয়ে শারীরিক অবস্থা আরো অবনতি হয়েছে। তাই দুপুর ১২টার দিকে তাকে লাইফসাপোর্ট দেওয়া হয়েছে। আমরা তার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি।
মেডিক্যাল বোর্ড জানিয়েছে, ওই ছাত্রীর অবস্থা গুরুতর। যেকোনো সময় পরিস্থিতি যেকোনো দিকে মোড় নিতে পারে। তার শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। মানুষের শরীরে চামড়ায় ৭টি লেয়ার থাকে, ওই ছাত্রীর সব লেয়ার পুড়ে গেছে। শ্বাসনালিও পুড়ে গেছে। পাশাপাশি দগ্ধ হওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে তাকে বার্ন ইউনিটে আনা হয়নি, সময়ক্ষেপণ হয়েছে। এতেও তার অবস্থার অবনতি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে ওই ছাত্রীর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। দগ্ধ ছাত্রীর বাড়ি সোনাগাজী পৌরসভার চরচান্দিয়া গ্রামে। তিনি আলিম পরীক্ষার্থী।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: