যেভাবে শত কোটি টাকা কানাডায় পাচার করেন তাজুল!


প্রকাশিত:
১৫ জুলাই ২০১৯ ০৭:০২

আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ০৪:২৯

যেভাবে শত কোটি টাকা কানাডায় পাচার করেন তাজুল!

আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডের কার্যক্রম ১৯৮৪ সালে শুরু হয়। প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম ছিল সম্পূর্ণ এমএলএম কোম্পানির মতো।



এছাড়া ব্যাংক হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানের কোনো স্বীকৃতি নেই। কিন্তু নামের শেষে ব্যাংক শব্দটি ব্যবহার করে সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা করে, মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৩শ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় কোম্পানিটি।



এই ৩শ’ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলামের ৫০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়। পরে এসব অ্যাকাউন্ট থেকে অনলাইনে ট্রান্সফার করে টাকা স্ত্রী ও তিন ছেলের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেন তিনি।



এর মধ্যে তার দুই ছেলে কানাডা থাকেন, যাদের কাছে ১শ’ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। এছাড়া এসব টাকার কিছু অংশ দিয়ে তিনি দেশের বিভিন্ন এলাকায় মার্কেট ও জমি ক্রয় করেন।



রোববার দুপুরে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।



এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বংশাল থানায় করা অর্থ আত্মসাৎ ও প্রাণনাশের হুমকির এক মামলায় চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করে সিআইডি।



নজরুল ইসলাম বলেন, আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডের কার্যক্রম ১৯৮৪ সালে শুরু হয়, এম এম তাজুল ইসলাম ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডে ১৯৮৪ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত চাকরিরত ছিলেন। তিনি ২০০৫ সাল থেকে আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডের সাথে যুক্ত হন। সমবায় অধিদপ্তর কর্তৃক আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডের কার্যক্রম পরিচালনায় সমগ্র বাংলাদেশে ২৬টি শাখার অনুমোদন থাকলেও তারা ১৮০টি শাখা পরিচালনা করে। এদের গ্রাহকের সংখ্যা হচ্ছে ১১ হাজার ৪২৫ জন। এম তাজুল ইসলাম ও মোহাম্মদ জাকির হোসেন চৌধুরী শাখাগুলোর ব্যবস্থাপক ও দ্বিতীয় কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সংঘবদ্ধভাবে ১২টি বিভিন্ন তফসিলভুক্ত ব্যাংকের ৭৭টি হিসাবের মাধ্যমে তিন শত কোটি টাকা স্থানান্তর করে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়।



সিআইডি এই কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংক হিসাব বিবরণী ও স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায় আসামিরা গ্রাহকদের জমাকৃত ৩০০ (তিন শত) কোটি টাকা নগদ ও অনলাইনে ট্রান্সফার করে পরস্পর যোগসাজশে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এম এম তাজুল ইসলাম বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাবে নিজের নামে, স্ত্রী আফরোজা পারভীন এবং ছেলে সাজ্জাদুল ইসলাম তানভীরসহ অন্যান্যদের নামে প্রেরণ, স্থানান্তর এবং রূপান্তরের মাধ্যমে হস্তান্তর করেন। প্রাথমিকভাবে আমরা এর প্রমাণ পেয়েছি।



মোল্লা নজরুল বলেন, আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডের সভাপতি এম তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে বংশাল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নম্বর হচ্ছে ৪৩।



তিনি বলেন, এ ঘটনায় তাজুল ইসলামের স্ত্রী ও তিন ছেলেও জড়িত। তাজুল নিজে কানাডার গ্রিন কার্ডধারী এবং তার দুই ছেলে ফরহাদুল ইসলাম সাব্বির ও রিয়াজুল ইসলাম রিজভি ২০১১ সাল থেকে কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।



সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সিআইডি দক্ষিণের এসএস মো. কামরুজ্জামান, সিআইডির মিডিয়া শাখা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শারমিন জাহান ও সিআইডির এই মামলার আইও সাব ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ নেয়ামতুল্লাহ।



উৎসঃ   পরিবর্তন


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top