বাংলাদেশে গণতন্ত্রের দু:খজনক অধ্যায়


প্রকাশিত:
২৫ জুলাই ২০১৯ ০৫:২৬

আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ০৪:৩০

বাংলাদেশে গণতন্ত্রের দু:খজনক অধ্যায়

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সাবেক একনায়ক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুকে পশ্চিমা বিশ^ মিশ্রভাবে দেখেছে। এরশাদ ৮ বছরের কিছু বেশি সময় বাংলাদেশ শাসন করেছেন। এরশাদ একনায়ক ছিলেন, তার রাজনৈতিক অন্যায়ের পরিমাণ কম নয়। কিন্তু তার সময়ে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছিলো। তার অর্থবছরগুলোতে অর্থনীতি ছিলো মাঝারি অবস্থায়। তার অর্জনগুলো এসেছিলো গণতন্ত্রকে বলি দিয়ে। এরশাদ ও বর্তমান সময়কে তুলনামূলক বিচার করে লেখা এশিয়ান করসপন্ডেন্ট এর এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।



এশিয়ান করসপন্ডেন্ট বলছে, এরশাদের সময়ের ঘটনাচিত্রের সঙ্গে বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার বেশ কিছু মিল রয়েছে। গত ডিসেম্বরের নির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। তবে এই নির্বাচনে বড় ধরণের অনিয়ম এবং ভোট চুরির অভিযোগ উঠে এসেছে। তবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং রাষ্ট্রগুলো এই নির্বাচন নিয়ে মৃদু সমালোচনা ছাড়া তেমন কিছুই বলেনি। বরং বাংলাদেশের অস্বাভাবিক উন্নয়নকে তারা সাধুবাদ জানিয়ে অংশীদার হতে চাচ্ছে।



১৯৮২ সালে নির্বাচিত সরকারকে বন্দুকের মুখে সরিয়ে দিয়ে ক্ষমতা দখল করেন এরশাদ। এরপর ১৯৯০ সালে জনগণের রোষের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন এবং ১ সপ্তাহের মধ্যেই গ্রেফতার হন। এর আগে ১৯৮৮ সালে তার দল জাতীয় পার্টি ৩শটি সংসদীয় আসনের ২৫১টিতেই জয়লাভ করে। আর এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিলো শতভাগ! ১৯৯১ সালে জেলে গিয়েও নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধরে রেখেছিলেন এরশাদ। জেল থেকে সে বছর তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৭ সালে জামিনে মুক্ত হয়ে রাজনীতিতে আবারও সক্রিয়ভাবে জড়ান। তিনি মারা যাওয়ার সময় ছিলেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা। সেসময় তার মাথার উপর উপর সামরিক অভ্যুত্থান সংক্রান্ত একটি মামলা ঝুলছিলো।



এই ৩০ বছরে বাংলাদেশ অনেকটাই বদলে গেছে। শেখ হাসিনরা গত ডিসেম্বরে ২৯৮টি আসনের ২৮৮টিতে জিতে আবারও ক্ষমতায় বসেছেন। বিরোধীদলগুলো এই নির্বাচনকে প্রত্যাখান করেছে। আর নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ভোটে কারচুপি হলেও থাকতে পারে। সরকারের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অভূতপূর্ব উন্নয়ন আর অতি শক্তিশালী অর্থনীতি। এরশাদও প্রায় একই বিজ্ঞাপন করতেন। এরশাদের সময়ের চেয়ে এখন পরিস্থিতি অবশ্যই আলাদা। কিন্তু তবুও অলক্ষে একটি মিল তো থেকেই যায়।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top