চার্জশিটে যে কারণে নাম নেই হাসনাতের


প্রকাশিত:
২৩ জুলাই ২০১৮ ১৩:৪৯

আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ০৪:৩০

চার্জশিটে যে কারণে নাম নেই হাসনাতের

গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় আদালতে জমা দেয়া চার্জশিটে নাম নেই হামলার পর আলোচনায় থাকা নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিমের। তদন্তে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কোনোভাবেই তার সম্পৃক্ততা পায়নি পুলিশ।



জানা গেছে, আর্টিজানে হামলার পর সেনাবাহিনীর অভিযান শেষে জিম্মিদশা থেকে যারা মুক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে ১৭ জনের জবানবন্দি এবং হামলার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ছয় জঙ্গির জবানবন্দিতে হামলার সঙ্গে হাসনাতের কোনো সম্পৃক্ততা না পেয়ে মামলার অভিযোগপত্র থেকে তার নাম বাদ দেয়া হয়েছে।



সূত্র জানায়, সোমবার আদালতে জমা দেয়া হলি আর্টিজানে হামলার চার্জশিটে রেস্টুরেন্টের ভেতর জঙ্গিদের সঙ্গে হাসনাত করিমের স্বাভাবিকভাবে কথাবার্তা বলাসহ তার সন্দেহজনক আচরণকে ‘পরিস্থিতির শিকার’ হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়েছে। চার্জশিটে নিহত ও জীবিত ২১ অভিযুক্তের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।



হাসনাত করিমের প্রসঙ্গে সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, গুলশান হামলার ঘটনায় হাসনাত করিমের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। এছাড়া যারা জিম্মিদশা থেকে জীবিত উদ্ধার হয়েছে এবং যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাদের বক্তব্যেও ঘটনার সঙ্গে হাসনাতের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।



হামলার পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু ছবিতে জঙ্গিদের সঙ্গে হাসনাত করিমের সন্দেহজনক চলাফেরা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেই ছবিগুলো আমরা বিশ্লেষণ করেছি। সেই বিশ্লেষণের ফলাফলও আদালতে জমা দেয়া চার্জশিটে ব্যাখ্যা করেছি।



প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত ৯টায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হাতে গুলশানের স্প্যানিশ রেস্টুরেন্ট হলি আর্টিজান আক্রান্ত হয়। হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ দেশি-বিদেশি ২২ নাগরিক নিহত হন। প্রায় ১২ ঘণ্টার ‘জিম্মি সংকট’ শেষ হয় সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযান ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ দিয়ে।



অভিযান শেষে আক্রান্ত হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয় হাসনাত করিম, তাহমিদ হাসিব খানসহ ৩২ জনকে। পরে হাসনাত করিম জানান, ১৩ বছর বয়সী সন্তান রাইয়ান করিমের জন্মদিন উদযাপন করতেই ওইদিন সন্ধ্যায় স্ত্রী শারমিন পারভীন ও কনিষ্ঠ সন্তান সাফা করিমকে নিয়ে হলি আর্টিজানে গিয়েছিলেন তিনি।



তবে হলি আর্টিজানে জিম্মিদশার বিভিন্ন ফাঁস হওয়া ভিডিও চিত্রে হাসনাত করিমকে রহস্যজনকভাবে চলাফেরা করতে দেখা যায়। রহস্যজনক আচরণের কারণে তাদের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।



২০১৬ সালের ৩ আগস্ট রাতে হাসনাত করিমকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন তাদের ৮ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। ১৩ আগস্ট গুলশান হামলার মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।



২৪ আগস্ট গুলশান হামলা মামলায় গ্রেফতার হাসনাত করিমের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। হাসনাত করিম বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন।



হাসনাত করিমের বাবা মোহাম্মদ রেজাউল করিম। হাসনাত বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের দ্বৈত নাগরিক। ব্রিটেনের নাগরিক হলেও সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরে এসে বাবার আর্কিটেক্ট ফার্মে পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top