অবৈধভাবে ইউরোপে যাত্রাপথে নৌকাডুবিতে ৩৫ বাংলাদেশির মৃত্যু
প্রকাশিত:
২৭ জুন ২০১৮ ১৪:৪১
আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ২২:৫৯

দালালের খপ্পরে পড়ে লিবিয়া হয়ে অবৈধভাবে নৌকায় সাগরপথে ইউরোপে যাওয়ার পথে সাতদিনে কয়েক দফা নৌকা ডুবিতে ৩৫ বাংলাদেশি অভিবাসী মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা এক বাংলাদেশি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরও জানান, গত সপ্তাহে ৭০জনের বেশি বাংলাদেশিসহ প্রায় পাঁচশ যাত্রী নিয়ে নিখোঁজ হয় লিবিয়া থেকে ছেড়ে যাওয়া চারটি ট্রলার।
<iframe frameborder="no" height="250" id="ox_5770476201_538413883" name="ox_5770476201_538413883" scrolling="no" width="300"></iframe>
এর মধ্যে একটি ট্রলার দুই দিন পর লিবিয়া উপকূলে ফেরত গেলে ৩৫ বাংলাদেশিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। মধ্যসাগরে ২০ বাংলাদেশির সলিলসমাধি হলেও বাকি ১৫জন কূলে এসে প্রাণ হারিয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে মৌলভীবাজারের বড়লেখার চান্দগ্রামের ফারুক হোসেন ও বিয়ানীবাজার পৌরসভার ইমন নামের দুই যুবকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে দেশটির রাজধানী ত্রিপলিতে বাংলাদেশের দূতাবাসের শ্রম সচিব আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে এর বেশি কিছু বলতে চাননি।
এখন প্রাণে বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশিরা চাচ্ছেন যাতে তাদের কোনো ধরনের হয়রানি না করে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
গত আগস্ট মাসের জাতিসংঘের জরিপে দেখা গেছে, আফ্রিকান নারী-পুরুষ ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি এমন ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা করেন। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান তিন নম্বরে রয়েছে।
নৌকাডুবির ঘটনায় বড়লেখা ও বিয়ানীবাজারের একাধিক তরুণ নিখোঁজ রয়েছেন বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। সরেজমিনে ওই দুই তরুণের বাড়ি গেলে তাদের পরিবারে আহাজারি চলতে দেখা যায়।
ইমনের ছোটভাই ঝুমন জানান, গত ৩ মাস আগে তার ভাই দালালের মাধ্যমে লিবিয়া পাড়ি জমান। ইমনকে ইউরোপ পাঠানোর উদ্দেশ্যে এক দালাল তাদের কাছ থেকে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর পর দালাল অনেকের সঙ্গে তার ভাইকেও সাগরপথে নৌকায় ইউরোপ পাঠায়।
এর আগে বড়লেখার চান্দগ্রামের নিখোঁজ তরুণ ফারুকের বড়ভাই মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা সালিক আহমদ বলেন, নৌকায় ইউরোপ যাত্রার পর থেকে তার ভাইয়ের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি। দালালও ফোন বন্ধ করে রেখেছে।
ভাইয়ের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় আছেন তার পরিবাবের স্বজনেরা।
উল্লেখ্য, দালালের খপ্পরে পড়ে ইউরোপে যাত্রাপথে বাংলাদেশির মৃত্যু নতুন কিছু নয়। ২০০৫ সালেও এমন ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা অবলম্বনে কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক ‘দুঃস্বপ্নের যাত্রী’ নামে একটি উপন্যাস রচনা করেছেন।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: