সিডনী শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১


অল্প‌তেই সন্তুষ্ট থাক‌তে চায় ইসলা‌মি দলগু‌লো


প্রকাশিত:
২১ নভেম্বর ২০১৮ ১০:৪৪

আপডেট:
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:১২

অল্প‌তেই সন্তুষ্ট থাক‌তে চায় ইসলা‌মি দলগু‌লো

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বারবার এসেছে ধর্ম তথা ইসলামের ব্যবহার। কখনো বড় দলগুলো ইসলামি আবেগ দিয়ে ভোট বাক্স বন্ধি করেছে, ইসলামি দলগুলোকে জোটে ভিড়িয়েছে, কখনো আবার ইসলামি দলগুলো নিজেরাই নিজেদের মতো করে নির্বাচনী মাঠে লড়েছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইসলামি দল জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশের নিবন্ধন বাতিল হলেও দেশে রয়েছে ছোট ছোট অনেক ইসলামি দল। সম্মিলিতভাবে এসব দলের ভোট বাক্স একেবারে কম নয়। আর এ জন্যই নির্বাচন এলেই শুরু হয়ে যায় তাদের নিয়ে টানাটানি, সমীকরণ। 



একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দেশে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। এ হাওয়া লেগেছে ছোট ছোট ইসলামি দলগুলোর গায়েও। নির্বাচন নিয়ে তাদেরও রয়েছে নানা কৌশল। কোনো কোনো দল বলছে জোটে গিয়ে আসন পেলেই এসব কৌশল প্রয়োগ করবেন তারা। আর জোটে গিয়ে নিজেদের ন্যায্য হিস্যা বুঝে না পেলেই ভিন্ন পথে হাঁটবে তারা। 



জোট হিসেবে জাতীয় পার্টির সাথে সবচেয়ে বেশি ইসলামি দল রয়েছে। জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন সম্মিলিতি জাতীয় জোটে (ইউএনএ) মোট ৫৯টি দল রয়েছে যার অধিকাংশই ইসলামিক দল। ২০১৭ সালে আত্মপ্রকাশ ঘটে ‘সম্মিলিত জাতীয় জোট’ এর। সংখ্যায় বিশাল এই জোটের জাতীয় পার্টি ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ছাড়া বাকিদের নেই নিবন্ধন। 



জাতীয় পার্টির সঙ্গে যুক্ত থাকা এসব ছোট ছোট  ইসলামী দলগুলো নির্বাচনী মাঠের যোদ্ধা হওয়ার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছে তারা। নির্বাচনী মাঠে জয়ী হওয়ারও আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন একাধিক ইসলামী দলের নেতারা।



‘সম্মিলিত জাতীয় জোট’ এর মধ্যেও রয়েছে দুটি জোট । যে জোটের একটি জাতীয় ইসলামী মহাজোটে দল রয়েছে ৩৪টি। অন্যদিকে,  বাংলাদেশ জাতীয় জোটে (বিএনএ) দল রয়েছে ২৪টি। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে জাতীয় পার্টি থেকে মনোয়নয়নপত্র সংগ্রহ করেছে এ দুই জোট। তবে তবে নিজেদের মতো করে মনোনয়নপত্র বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট। 

 

এ সকল ইসলামী দলগুলোর প্রধান শরিক দল জাপা। ঠিক যেমন মহাজোটে থাকা জাপার প্রধান শরিক দল আওয়ামী লীগ। শরিকের শরিক দল হিসেবে নির্বাচনী আসন পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন এসব ইসলামী দলের নেতারা। 



বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব এম এ মতিন বলেন, ‘শরিকদের শরিক দল হিসেবে কতোটূকু মূল্যায়ন পাবো তা জানি না। কিন্তু নির্বাচনী মাঠে কিভাবে লড়াই করতে হয় সেটা জানি।’ 



তিনি জানান, ইসলামী ফ্রন্ট ৪০টি আসনের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে। তারা মোমবাতি প্রতীকে নির্বাচন করতে চায়। ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব এম এ মতিন চট্টগ্রাম -১১, ১২ ও ১৩ আসন থেকে একাই তিনটি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। 



এই তিন আসনের মধ্যে যে কোন একটি আসন তাকে দিলেই তিনি খুশি। একই সাথে চট্টগ্রাম -৮ ও ১৪ এই দুই আসনের মধ্যে যে কোন একটিও চায় ইসলামি ফ্রন্ট। 



এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ১; চাঁদপুর- ৫; ফেনী-১ এই ৩ আসন চান মহাসচিব এম এ মতিন। মোট ৫টি আসনের চাহিদার কথা জানান এম এ মতিন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ইসলামী দলগুলোর মধ্যে সব থেকে শক্তিশালী তাদের ফ্রন্ট।’  



এম এ মতিন বলেন, ‘আমরা আশা করছি মহাজোট থেকে আসন পাবো। কারণ আমাদের সাংগঠনিক কাঠামো ও বিশাল জনগোষ্ঠী  রয়েছে।’



আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির পরের স্থানে ইসলামী ফ্রন্ট রয়েছে এমন কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশের পীর- ওলি , আলেম-ওলামাদের লক্ষ্য লক্ষ্য অনুসারী, মাজারগুলোর অনুসারীরা আমাদের সাথে। এরাই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভোট ব্যাংক। যা মহাজোট কাজে লাগাবে।’

  

জোটের মাঠে, ভোটের লড়াইয়ে ইসলামী ফ্রন্টের চাহিদা পূরণ না হলে আপাতত চুপ থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। তবে নির্বাচনের পরে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথাও বলছেন তারা। তবে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে একটি আসন পেলেও সন্তুষ্ট থাকবে ইসলামী ফ্রন্ট। 



এদিকে ৩৪ দলীয় জাতীয় ইসলামী মহাজোটের মুখপাত্র কারী মাওলানা মো আসাদুজ্জামান বলেন, তাদের জোট জাতীয় পার্টি থেকে ৫টি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে। ফেনী-৩ ও ৪; নোয়াখালী-১; ঢাকা-৫ এবং নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জ থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছে ইসলামী মহাজোট। যার মধ্যে ২টি আসনে নির্বাচন করার সুযোগ পেলে তারা সন্তুষ্ট থাকবেন। 

 

মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আশাবাদী। লিঁয়াজো কমিটির বৈঠকে আমাদের বিষয়ে পজেটিভের কথা জানিয়েছে জাপা।’ 



পজেটিভ না হলে অন্য কোন চিন্তা করবেন কিনা? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে কোন সিদ্ধান্ত নিবো না। নির্বাচনের পরে সিদ্ধান্ত জানাবো।’



এদিকে জাপা শরিকদের নিয়ে চিন্তার কথা জানান পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘এখনো আসন বিন্যাসের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি নাই । তবে ইসলামী দলগুলোকে নিরাশ করবেন না পার্টি চেয়ারম্যান।’   


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top