সিডনী শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ই আশ্বিন ১৪৩১


চিনা অ্যাপ পরিবর্তে কলকাতায় চালু হলো বাংলার অ্যাপ ‘সেল্ফ স্ক্যান’


প্রকাশিত:
৭ জুলাই ২০২০ ২২:০৭

আপডেট:
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৫৬

 

প্রভাত ফেরী: চিনের অ্যাপ নিষিদ্ধ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশীয় প্রযুক্তিতে অ্যাপ তৈরির কথা বলেছিলেন। ডাক দিয়েছিলেন ‘ভোকাল ফর লোকাল’–এর। সারা দেশেই ব্যাপক সাড়া পাওয়া গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদির এই আহ্বানে। তবে সম্ভবত পশ্চিমবাংলাই কার্যক্ষেত্রে প্রথম তার বাস্তবায়ন করার দক্ষতা দেখাল। সোমবার সম্পূর্ণ নতুন একটি অ্যাপ নিয়ে এলো রাজ্যের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। নাম ‘সেল্ফ অ্যাপ’। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে নথিপত্র স্ক্যান করা যাবে এই অ্যাপ মারফত। মুখ্যমন্ত্রী এ কথাও জানান, দেশে বাংলাই প্রথম এই কৃতিত্ব দেখাল। স্বদেশিয়ানা কাকে বলে, তা এবার বাংলাই শেখাবে। এমনকী, মহামতি গোখলের বলা উক্তি কিছুটা বদলে তিনি বলেন, ‘হোয়াট বেঙ্গল থিঙ্কস টুডে, ওয়ার্ল্ড থিঙ্কস টুমরো।’ ‘ওয়ার্ল্ড’–এর বদলে গোখলে বলেছিলনে ‘ইন্ডিয়া’।

সোমবার নবান্নে এই নতুন অ্যাপ রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি দফতর তৈরি করেছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই নিজের ওপর ভরসা করুন। বাইরে যাওয়ার দরকার নেই। তাই আমরা সেল্ফ স্ক্যানের সূচনা করলাম আজ। এই অ্যাপ দিয়ে নথিপত্র যেমন স্ক্যান করা যাবে, তেমনই সেগুলি এডিটও করা যাবে। এই অ্যাপ ব্যবহার করা কোনও নথি বা তথ্য সার্ভারে সেভ হয় না। ব্যবহারকারীর মোবাইলেই একমাত্র তা সেভ করা যাবে। তাই এই অ্যাপ ব্যবহার করা সম্পূর্ণ নিরাপদ।’ এমনকী, তিনি এ কথাও বলেন, ‘এখন যে অ্যাপগুলি পাওয়া যায়, সেগুলি থেকে আমাদের অ্যাপ অনেক বেশি উন্নত এবং ব্যবহার করাও সুবিধাজনক। এ ছাড়া এই অ্যাপ ব্যবহারে আপনার গোপন ও ব্যক্তিগত তথ্য সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে।’

এদিন আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও ত্রাণ দেওয়া নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘আমফান বিপর্যয়ের পর আমরা টাকাটা একটু তাড়াতাড়ি পাঠিয়েছিলাম। তাই কোথাও কোথাও ভুলভ্রান্তি হয়েছিল। যে সব ভুলভ্রান্তি হয়েছিল, তা আমরা দ্রুত শুধরে নিচ্ছি। আমার ওপর ভরসা রাখুন। কেউ বঞ্চিত হবেন না।’ বিষয়টির দিকে কড়া নজর রাখতে তিনি মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, আমফান বিপর্যয়ে বাংলার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর সারা দেশকেই প্রভাবিত করেছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বাংলায় ছুটে এসেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার এই ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আর্থিক সাহায্য করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ত্রাণ তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সাহায্য ঘোষণা করেছেন। কিন্তু ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে শাসক দল তৃণমূলের আঞ্চলিক ও প্রভাবশালী নেতারা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হলে নড়েচড়ে বসে রাজ্য সরকারও। দুর্নীতগ্রস্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়।

এদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দিদিকে বলো’র মতো এবার বিজেপিও তাদের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নামে শুরু করে দিল ‘আমাদের দিলীপদা’। এই নামে তারা একটি ওয়েবসাইটও চালু করে দিয়েছে। সাইটটির নাম ‘আমাদের দিলীপদা ডট ইন’। সেখানে দিলীপ ঘোষের সম্পূর্ণ জীবনপঞ্জী ও কাজের খতিয়ান বিস্তারিত ভাবে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, সেখানে আমফানের ত্রাণ পেতে যাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁদের অভিযোগ এই ওয়েবসাইটে সবিস্তারে জানানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। এর পর অভিযোগকারীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে বলেও বিজেপির তরফে বলা হয়েছে। স্বয়ং দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, প্রশাসন সেই তালিকা কাজে লাগাতে পারবে।

পাশাপাশি, এদিন করোনা, আমফান–সহ নানা ক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রসঙ্গে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাডা। তিনি বলেন, ‘বাংলায় অপরাধের রাজনীতির নতুন এক নজির গড়েছে তৃণমূল। এখন আমরা সবাই কাটমানির কথা শুনছি। আগে এই শব্দটা শুনতাম না। বাংলার পুরনো গৌরব ফিরিয়ে আনতে সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত।’ ‘‌বাংলার বাঘ’ বলে কথিত আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের পুত্র তথা ‘ভারত কেশরী’ হিসেবে পরিচিত শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ১১৯তম জন্মদিন উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল সভায় বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে কংগ্রেসকেও তীব্র আক্রমণ করেন জে পি নাড্ডা। তিনি বলেন, ‘ভারত কেশরীর রহস্যজনক মৃত্যুর জন্য দায়ী কংগ্রেসই।’


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top