সিডনী শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১


যুক্তরাজ্যে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ঋষি সুনাক


প্রকাশিত:
২৫ অক্টোবর ২০২২ ২০:৫৪

আপডেট:
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:২৭

 

যুক্তরাজ্যে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ঋষি সুনাক। যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে তিনি প্রথম এশীয় ব্রিটিশ, যিনি বিশ্বের সবচেয়ে অভিজাত গণতন্ত্রের দেশটির শীর্ষ পদে বসতে চলেছেন।

৪২ বছর বয়সী ঋষি সুনাক এক শতকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। আজ মঙ্গলবার সুনাককে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করা হবে।

গতকাল সোমবার লন্ডনের স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় তাঁকে ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টি বা টরি দলের নেতা ঘোষণা করা হয়। যুক্তরাজ্যে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ক্ষমতাসীন দলের নেতাই প্রধানমন্ত্রী হয়ে থাকেন।

আইন প্রণেতাদের (টরি এমপি) ১০০ জনের সমর্থন পেতে হিমশিম অবস্থার মুখে পড়েন পেনি মর্ডান্ট। ঋষি সুনাকের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন অর্ধেকেরও বেশি টরি এমপি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন লড়াই থেকে নিজেকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর ঋষি ও মর্ডান্টের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়।

গতকাল দুপুরের পর পরিষ্কার হয়ে যায়, ঋষি সুনাকই যুক্তরাজ্যের নতুন নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দেবেন। কনজারভেটিভ পার্টির নীতিনির্ধারণী কাঠামো ‘১৯২২ কমিটি’র কাছে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে পেনি মর্ডান্ট বলেন, ‘ঋষির প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। ’

এরপর ১৯২২ কমিটির চেয়ারম্যান স্যার গ্রাহাম ব্রাডি ঘোষণা করেন, দলের নেতা হিসেবে ঋষি সুনাকের মনোনয়ন পেয়েছে কমিটি। তাঁকে দলের নেতা হিসেবে ঘোষণা করা হলো।

বরিস জনসনের পদত্যাগের পর রক্ষণশীলদের নেতৃত্ব নির্বাচনের সময় ঋষিকে হারিয়েই দলের নেতা হয়েছিলেন লিজ ট্রাস।

কনজারভেটিভ পার্টি ২০১৯ সালে বরিস জনসনের নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে ডাউনিং স্ট্রিটে পার্টি আয়োজন (পার্টিগেট কেলেঙ্কারি) এবং অন্যান্য বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জেরে তিনি পদত্যাগ করেন। এরপর জনসন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস ক্ষমতা গ্রহণের ৪৫ দিনের মাথায় গত বৃহস্পতিবার পদত্যাগের ঘোষণা দেন। যুক্তরাজ্যে বর্তমান বিপর্যয়কর অর্থনৈতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে চাপের মুখে তিনি ইস্তফার কথা জানান।

ঋষি সুনাক এমন সময় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন, যখন যুক্তরাজ্যের নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট জনজীবনের গভীর সমস্যা তৈরি করেছে। মূল্যস্ফীতি ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস অবস্থা ব্রিটিশ নাগরিকদের। এদিকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় সংকট তৈরি করেছে ইউরোপ মহাদেশে।

ঋষি সুনাক অর্থনীতির চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় কতটা সফল হবেন, তা আগামী দিনগুলোতে দেখা যাবে। তবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর নিয়োগ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। কারণ এশীয় বংশোদ্ভূত কেউ এর আগে এই পদে বসেননি। তাঁর রাজনৈতিক জীবনও বেশ ঘটনাবহুল।

২০১৫ সালে ঋষি সুনাক রিচমন্ডের নর্থ ইয়র্কশায়ার থেকে প্রথমবারের মতো ব্রিটিশ আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর পাঁচ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ২০২০ সালে বরিস জনসনের নেতৃত্বাধীন সরকারের অর্থমন্ত্রী হন তিনি। করোনাভাইরাস মহামারিকালে অর্থনৈতিক সংকট সামাল দেওয়ার যে সাফল্য জনসন সরকার দাবি করে, সেটির নেপথ্যে ছিলেন ঋষি সুনাক।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top