সিডনী শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১


অ্যাডিনোভাইরাস : কলকাতার হাসপাতালে শিশুরোগীর সংখ্যা বাড়ছে!


প্রকাশিত:
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০২:৩০

আপডেট:
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৪৭

 

ভারতের কলকাতার হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শিশুদের ভিড়। জ্বর, সর্দি আর কাশিতে আক্রান্ত এসব শিশুরা। অনেক শিশুকে নিতে হচ্ছে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটেও। অনেক শিশুকে রাখা হয়েছে ভেন্টিলেশনে। তাই বাবা-মায়ের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। কলকাতার পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে শয্যারও সংকট দেখা দিয়েছে।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশুরোগের সাধারণ ওয়ার্ডেও জায়গা নেই। কভিডের পর এটি এখন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে কলকাতায়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে ভর্তি থাকা শিশুরোগীদের মধ্যে শতকরা ৯০ জনেরই শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ (রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন) দেখা যাচ্ছে। যাদের অধিকাংশই ভাইরাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। এদের মধ্যে বেশির ভাগ আবার অ্যাডিনোভাইরাসের শিকার।

চিকিৎসকরা বলছেন, ২০১৮-২০১৯ সালের পর এই অ্যাডিনোভাইরাস নতুন করে ফিরে এসেছে। এবারের ভয়াবহতা তিন বছর আগের পরিস্থিতিকেও ছাপিয়ে গেছে বলে তারা জানান। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া এবং কভিডের কারণে শিশুরা দীর্ঘদিন ঘরবন্দি ছিল, ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়েছে অনেকটা।

কলকাতা মেডিক্যালের শিশুরোগ বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক দিব্যেন্দু রায়চৌধুরী বলেন, ‘সব ধরনের ভারাসের পরীক্ষা হচ্ছে, তেমন নয়। তবে অ্যাডিনোর প্রকোপ বেশি।’

শিশুরোগ চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূণ গিরি বলেন, ‘জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বাচ্চারা আসছে। দুই বছরের নিচের বাচ্চাদের সমস্যা বেশি। কাউকে কাউকে ভেন্টিলেশনে রাখতে হচ্ছে। তবে বয়স্করাও এই তালিকায় আছেন।’ বড়দের ক্ষেত্রে শ্বাসনালির উপরিভাগ বেশি সংক্রমিত হচ্ছে। জ্বর ও দীর্ঘদিন ধরে কাশিতে ভুগছেন।

গত জানুয়ারিতে ৫০০টি নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিল কলকাতার স্বাস্থ্য দপ্তর। যার মধ্যে ৩২ শতাংশ পাওয়া গেছে অ্যাডিনোভাইরাস, ১২ শতাংশ রাইনো ও ১৩ শতাংশ প্যারা-ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস।

ভাইরোলজিস্ট সিদ্ধার্থ জোয়ারদার জানিয়েছেন, ‘অ্যাডিনোভাইরাস ইন্টারফেরন (কোষে ভাইরাসের বৃদ্ধিতে বাধা দেয়) তৈরি এবং এমএইচসি অণুর (দেহের প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে ভাইরাস চেনাতে সাহায্য করে) কার্যকারিতায় বাধা দিয়ে আক্রান্ত কোষের মৃত্যু ঠেকিয়ে আধিপত্য বজায় রাখতে পারে। টনসিল ও ফ্যারিংক্সে অনেক দিন থেকে যাওয়ায় কাশিও সারছে না।’

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, ‘পরিস্থিতি দেখে মাস্ক পরার অভ্যাসের কথা বলা হচ্ছে।’ আবহাওয়ার ঘন ঘন পরিবর্তন ভাইরাসের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ। কভিডের পর মাস্ক পরাও বন্ধ করে দিয়েছে অনেকে। স্কুল-কলেজও খুলে গিয়েছে। তাই আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই।

শিশুরোগ চিকিৎসক অগ্নিমিতা গিরি সরকার জানান, ‘বাচ্চা অসুস্থ হলে, শ্বাসের গতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। পাতলা পায়খানা ও প্রস্রাব হচ্ছে কি না তা খেয়াল রাখতে হবে।’

‘ইন্ডিয়ান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস’-এর জাতীয় কো-অর্ডিনেটর তথা আসানসোল ইএসআই হাসপাতালের সুপার অতনু ভদ্রের মতে, ‘অ্যাডিনোভাইরাসের প্রকোপ বেড়েছে। কিন্তু সবাই এই ভাইরাসের শিকার কি না, তা জানতে আরো পরীক্ষা দরকার।’


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top