সিডনী শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১


দেশে ফিরলেন ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন


প্রকাশিত:
১ মার্চ ২০১৯ ২৩:২৫

আপডেট:
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩৩

দেশে ফিরলেন ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন



 অবশেষে ঘরে ফিরলেন পাকিস্তানের হাতে ধরাপড়া ভারতীয় বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। শুক্রবার (১ মার্চ) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে অভিনন্দন বর্তমানকে ওয়াঘা-আতারি সীমান্ত দিয়ে ভারতের হাতে তুলে দেয় পাকিস্তান। অভিনন্দনের জন্য জেড প্লাস নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। ঘটনাস্থলে আন্তর্জাতিক সংস্থা রেডক্রসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।



ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার, এনডিটিভি ও পাকিস্তানের ট্রিবিউন এক্সপ্রেস জানিয়েছে, শুক্রবার (১ মার্চ) বিকেল সাড়ে চারটায় পাকিস্তান সেনার একটি কনভয় ভারতীয় পাইলট উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে নিয়ে ওয়াঘার সীমান্তে পৌঁছে। এরআগে অভিনন্দনকে সকালে প্রথমে ইসলামাবাদ থেকে লাহোরে সড়ক পথে নিয়ে আসা হয়।  এরপর বিকেলে সেখান থেকে নিয়ে আসা হয় দুই দেশের ওয়াঘা-আতারি সীমান্তে।



উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ ওয়াঘা-আতারি সীমান্তে আনার পর কিছু দাফতরিক আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেয়। বেশকিছু দলিলে অভিনন্দন এবং ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ স্বাক্ষর করে।





 

বিজ্ঞাপন

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অভিন্দন বর্তমানের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন চলছিল বলে জানা গেছে।



এর আগে, শুক্রবার সকালেই ওয়াঘা সীমান্তে পৌঁছান অভিনন্দনের বাবা অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল এস বর্তমান ও মা শোভা বর্তমান। এছাড়া অভিনন্দন বর্তমানের জন্য ভারতীয় বিমান ও সেনা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারাও ওয়াঘা-আতারি সীমান্তে অবস্থান করেন।





অভিনন্দন বর্তমানকে হস্তান্তরের আগে পাকিস্তানি গাড়িবহর



ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির সূত্রগুলো জানায়, উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে আকাশ পথে ফেরত চেয়েছিল ভারত। অভিনন্দনের জন্য বিশেষ বিমান পাঠানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল পাকিস্তানকে। কিন্তু ভারতের সেই প্রস্তাবে রাজি হয়নি পাকিস্তান।



সূত্রগুলো আরও জানায়, ভারতে মতে, অভিনন্দনকে আকাশ পথে আনলে মিডিয়াসহ বিশাল জনমানবের ভিড় এড়ানো যাবে। এছাড়া আকাশ পথে অভিনন্দনকে দ্রুত দেশে এনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ভাবনা ছিল নয়াদিল্লির।



আরও পড়ুন:  ওয়াঘা-আতারি সীমান্তে ভারতীয় পাইলট: যেকোনো সময় হস্তান্তর

মেজর জেনারেল আসিফ গফুরের বরাত দিয়ে ঢাকার পাকিস্তান মিশন গত বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এক বার্তায় জানিয়েছে, ওইদিন পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে ভারতের বিমানবাহিনীর দু’টি বিমান আকাশ সীমালঙ্ঘন করে ঢুকে পড়লে পাকিস্তানের বিমানবাহিনী ভারতের দুটি বিমানকে ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়।  ওই সময় ভারতের দুই জন পাইলট মারা গেছেন আর একজন ভারতীয় পাইলট পাকিস্তানের হাতে ধরা পড়েছে। পাকিস্তানের হাতে আটক পাইলটের নাম হচ্ছে অভিনন্দন বর্তমান।



ভারতীয় যে পাইলট পাকিস্তানের হাতে ধরা পড়েছে, সেই পাইলটের দুটি ভিডিওচিত্র ঢাকার পাকিস্তান মিশন এক বার্তায় পাঠিয়েছে।  একটি ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত পাহাড়ি অঞ্চলের ঝিরিতে ভারতীয় সুঠাম দেহের পাইলট পরে আছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সাধারণ পোষাকের লোকজন ওই পাইলটকে নিয়ে টানা-হেঁচড়া করছে।  আরেকটি ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, ভারতীয় ওই পাইলট চোখ বাঁধা অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে, তার চোখের চারপাশে রক্তের দাগ এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা গেছে।



বুধবারের (২৭ ফেব্রুয়ারি) ওই ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিজ নিজ দেশের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন।





অভিনন্দন বর্তমান (ফাইল ছবি)



পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরাম খান এই ঘটনায় বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে বলেন, ‘দুই পক্ষের কাছেই যে সব সামরিক শক্তি রয়েছে, তাতে কারোরই হিসাবে ভুল হওয়ার কথা নয়। তাই উভয় পক্ষের কাছেই আমার আহ্বান থাকছে, আমাদের সবারই শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।  প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে যে দ্বন্দ্ব চলছে, তা সমাধানে আমাদের প্রজ্ঞা ও বিবেচনার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’



ইমরান খান আরও বলেন, ‘আমরা ভারতের দুইটি বিমান ভূপাতিত করেছি। পাইলটরা আমাদের সঙ্গেই আছে।  আমি ভারতের কাছে জানতে চেয়েছি যে, এরপর আমরা কোথায় যাব?  আমাদের সবাই দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত।’



এর আগে, গত মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানে একটি জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ শিবিরে বিমান হামলা চালায় ভারত। এরপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। একইদিন সন্ধ্যায় লাইন অব কন্ট্রোলের ওপর দিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়।



এরও আগে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতশাসিত কাশ্মিরে এক আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলায় ভারতের অন্তত ৪০ আধা-সামরিক সেনা নিহত হয়।  হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ। ওই হামলার পর কঠোর জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ভারত। এরপর গত মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ভারত সেই হামলার পাল্টা জবাব দেয়।





 


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top