সিডনী শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১


জার্মানির নতুন ‘চীন নীতি’


প্রকাশিত:
১৭ জুলাই ২০২৩ ১২:২৬

আপডেট:
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:০৩

 

ক্ষমতাসীন জোটের মধ্যে আলোচনার পর জার্মানি নতুন চীন কৌশল জানিয়েছে। এই নীতিতে বেইজিংকে কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৈশ্বিক সংকট সমাধানে পারস্পরিক সহযোগিতা জরুরি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বৃহস্পতিবার বার্লিনে মার্কেটর ইনস্টিটিউট ফর চায়না স্টাডিজে বেইজিংয়ের সঙ্গে বার্লিনের সম্পর্কের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

সমালোচকরা বলছেন, চীন এবং রাশিয়ার মতো কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রগুলোর নতুন বৈশ্বিক হুমকির বিপরীতে জার্মানি আত্মতুষ্টিতে ভুগছে।

যা বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বেয়ারবক বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ক্রমশ কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশটি অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, তবে সেই সঙ্গে দেশটির কর্তৃত্ববাদী প্রভাবও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বিশেষ করে দেশটির অভ্যন্তরে পশ্চিমের জিনজিয়াং প্রদেশ এবং হংকং - এবং এশিয়ায় আঞ্চলিক পরিসরেও ক্রমবর্ধমানভাবে দেশটি শক্তি প্রতিষ্ঠা করছে।

তিনি বলেন, ‘‘চীন বদলে গেছে এবং সেজন্য চীনের প্রতি আমাদের নীতিতেও পরিবর্তন আনতে হবে। আমরা চীন থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছি না, আমরা কেবল ঝুঁকি কমাতে চাই।’’ রুশ জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর খুব বেশি নির্ভর করে জার্মানি যে ভুল করেছিল, সেটিও উল্লেখ করেন তিনি।

বেয়ারবক বলেন, ‘‘আমরা চীনের বা নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে চাই না।’’ তবে জার্মানির অর্থনৈতিক সম্পর্ককে বৈচিত্র্যময় করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ‘‘যেসব কোম্পানি নিজেদের চীনের বাজারের ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল করে তুলছে, তাদের এই ঝুঁকির আর্থিক ভার ক্রমবর্ধমানভাবে বহন করতে হবে।’’

বেয়ারবক বলেন, এই নীতি কেবল মানবাধিকার নয়, জার্মানির অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

চীনের জবরদস্তি মোকাবিলা করার প্রয়োজনও বিবেচনা করা হয়েছে বলে জানান জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ ব্যাপারে লিথুয়ানিয়ার তাইওয়ান নীতি বদলানোর জন্য চীনের অর্থনৈতিক চাপের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীন এখনও উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে নিজেকে উপস্থাপন করে। অথচ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন। এই অবস্থান বদলাতে জার্মানি চীনকে চাপ দেবে বলেও জানান বেয়ারবক।

দৃষ্টিভঙ্গী বদলাতে চীনের আহ্বান

বেয়ারবকের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বার্লিনে চীনের দূতাবাস।চীন জার্মানির প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে, এমন ধারণার প্রতিবাদ জানিয়ে দূতাবাস বলেছে, দুই দেশ বরং নানা বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অংশীদার ছিল।

এক বিবৃতিতে চীন জানিয়েছে, ‘‘আদর্শিক ভ্রান্তি এবং প্রতিযোগিতা বিষয়ক উদ্বেগের ওপর ভিত্তি করে জোরপূর্বক ‘ঝুঁকিমুক্ত করার প্রক্রিয়া' শুধুমাত্র প্রতিকূল পরিস্থিতিই তৈরি করবে এবং কৃত্রিমভাবে ঝুঁকিকে তীব্র করে তুলবে।’’

জোটের মধ্যে উত্তেজনা

চীনের প্রতি এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তিন দলের জার্মান জোট সরকারের মধ্যেও মতবিরোধ রয়েছে।

তিন দল তাদের ২০২১ সালের জোট গঠনের চুক্তিতে সম্মত হয়েছিল যে ‘‘চীনের সঙ্গে পদ্ধতিগত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আমাদের মূল্যবোধ এবং স্বার্থ উপলব্ধি করতে সক্ষম হওয়ার জন্য একটি কৌশল প্রয়োজন।’’

চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের চেয়ে বেয়ারবকের গ্রিন পার্টি চীনের ওপর বেশি কঠোর মনোভাবের পক্ষে।

এই বিরোধ প্রকাশ্য রূপ নেয় যখন গ্রিন পার্টির আপত্তি সত্ত্বেও হামবুর্গ বন্দরে কন্টেইনার টার্মিনালের অংশীদারিত্ব চীনা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানির কাছে বিক্রির ব্যাপারে সম্মতি দেন চ্যান্সেলর শলৎস।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top