সিডনী শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১


কানাডার পশ্চিমাঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি


প্রকাশিত:
২০ আগস্ট ২০২৩ ২২:২৩

আপডেট:
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:০১



ভয়াবহ দাবানলের কারণে কানাডার পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে দাবানল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এতে পশ্চিম কেলোনা শহরের আশপাশের এলাকায় আরো ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হুমকি তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

ব্রিটিশ কলম্বিয়ার প্রিমিয়ার ডেভিড ইবি সতর্ক করেছেন যে, পরিস্থিতি দ্রুত খারাপের দিকে যাচ্ছে এবং সামনের দিনগুলো বেশ চ্যালেঞ্জিং। ম্যাকডুগাল ক্রিকের দাবানল গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজার ৮০০ হেক্টর এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানকার প্রায় ৪ হাজার ৫০০ জনকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কানাডার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২২ হাজার মানুষ দাবানলের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এদিকে কানাডিয়ান সরকার জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো দাবানল নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটি জরুরি কমিটির আহ্বান করবেন, যা ইনসিডেন্ট রেসপন্স গ্রুপ নামে পরিচিত।

গত কয়েক মাস ধরেই দাবানলে বিপর্যস্ত দেশটির বেশ কিছু অঞ্চল। কর্তৃপক্ষ ইয়েলোনাইফের প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দাকে শুক্রবারের মধ্যে শহর ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানায়। আশপাশের এলাকাগুলো থেকেও মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ইয়েলোনাইফ বিমানবন্দরে ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষারত টিফানি শ্যাম্পেন বলেন, ‘আমার আগে থেকেই হাঁপানি রয়েছে। কিন্তু দাবানলের ধোঁয়ার কারণে অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের ফ্লাইটের কমপক্ষে দুই ঘণ্টা আগে পৌঁছানোর জন্য সতর্ক করেছে। কারণ এরই মধ্যে যাত্রী প্রাফিক বেড়ে গেছে।


ব্রিটিশ কলম্বিয়ার প্রিমিয়ার ডেভিড ইবি বলেন, চলতি বছর আমরা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে খারাপ দাবানল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। তিনি বলেন, পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে যাওয়ায় আমরা প্রাদেশিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করছি। তবে এখন পর্যন্ত ঐ প্রদেশে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেন তিনি। সম্প্রতি দাবানল ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে কানাডায়। দেশটিতে অন্তত ১ হাজার সক্রিয় দাবানল রয়েছে। এর মধ্যে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলেই দুই শতাধিক দাবানলের খবর পাওয়া গেছে।


এদিকে কানাডা থেকে বিশেষ প্রতিনিধি জানান, কানাডার নর্থওয়েস্ট টেরিটোরি এখন জ্বলছে ভয়াবহ দাবানলে। নর্থওয়েস্ট টেরিটোরির রাজধানী ইয়েলোনাইফ গোটা শহরের প্রশাসন ও নিরাপত্তা এখন ক্যানাডিয়ান আর্মির হাতে। দাবানল চারদিক থেকে ধেয়ে আসছে। লাখ লাখ একর জমির বনভূমি পুড়ে ছাই হচ্ছে। সড়ক মন্ত্রণালয়ের ডিজাইন ও কনস্ট্রাকশন ডিপার্টমেন্টের টিম লিডসহ সব সরকারি ও বেসরকারি লোকেরা একত্রে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। কিন্তু দাবানল ঠেকাতে পর্যাপ্ত প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা না থাকায় এখন সেনাবাহিনী দায়িত্ব নিয়েছে। সেনা বাদে সব নাগরিককে প্রদেশ ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সেনারা প্রথমে রাজধানী ইয়েলোনাইফের চারদিকে অগ্নি প্রতিরোধক সেপারেটর বানিয়েছে ঘরবাড়িগুলো আগুন থেকে রক্ষার জন্য। বেসামরিক ও সামরিক বিমানে করে সেনা তত্ত্বাবধানে মানুষ সরানো হচ্ছে অন্য প্রদেশে। মূলত এডমন্টন, ভ্যাংকুভার ও ক্যালগারিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাদের। অনেকেই আত্মরক্ষায় নিজেরা ড্রাইভ করে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। এই মুহূর্তে শহরের এয়ার কোয়ালিটি ভীষণ খারাপ। শ্বাস নেওয়া দায়। ইয়েলোনাইফে রয়েছে প্রায় অর্ধশত বাংলাদেশি পরিবার। বেশির ভাগই প্রকৌশলী ও সরকারি কর্মকর্তা। সবাই মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার এবং আতঙ্কিত।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top