সিডনী শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১


মিয়ানমারে নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের সাথে সংঘর্ষে ৩০ সেনা নিহত


প্রকাশিত:
২২ আগস্ট ২০১৯ ০৮:১৯

আপডেট:
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:২৮

মিয়ানমারে নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের সাথে সংঘর্ষে ৩০ সেনা নিহত

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে গত এক সপ্তাহে ৩০ সেনা নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ২ হাজারেরও বেশি মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। বুধবার সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।



গত ২০ নভেম্বর চীন সংলগ্ন মিয়ানমার সীমান্তে কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী সেনা ও পুলিশ চৌকিতে হামলা করার পর শান রাজ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। স্বাধীনতার দাবিতে সোচ্চার জাতিগোষ্ঠীগুলোর সশস্ত্র সংগঠন কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মি (আরাকান আর্মি), তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এবং ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মির সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ হয়।



গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের শান প্রদেশে সেনাবাহিনীর একটি কলেজসহ পাঁচটি স্থানে হামলা চালায় স্থানীয় তিনটি বিদ্রোহী সংগঠনের জোট নর্দার্ন অ্যালায়েন্স। এতে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়। এদের অধিকাংশ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। এই হামলার পর থেকে সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ জাতিগত সংঘাতের কারণে হাজার হাজার মানুষ ঘরহারা হচ্ছে।



বুধবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে বলে, মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের সহিংসতা বিধ্বস্ত শান রাজ্যের নতুন এ সংঘর্ষ দেশটির নেত্রী ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির জন্য বড় ধাক্কা।



উত্তরাঞ্চলের রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর রক্তাক্ত অভিযান ও বাংলাদেশে পালিয়ে আসার ঘটনায় ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে চাপের মুখে রয়েছেন সু চি। এর মাঝে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নতুন এ সংঘর্ষ সু চি নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারের ভাবমূর্তিকে আবারও প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।



এর আগে ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর নৃশংস অভিযানে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। বিভিন্ন সময়ে এই রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরানোর উদ্যোগ নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা ভেস্তে যায়। তবে ২২ আগস্ট (আজ) বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ৩ হাজার ৪৫০ জন রোহিঙ্গা প্রথম দফায় ফেরত নেয়ার কথা রয়েছে মিয়ানমারের।



বুধবার থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের ইংরেজি দৈনিক দ্য ইরাবতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। তবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী প্রাণহানির এই খবর উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের এই দাবি অসম্ভব।



নর্দার্ন অ্যালায়েন্স বলছে, শান রাজ্যের লাশিও থেকে মুসে মহাসড়কের কুটকি মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ৯টি সংঘর্ষ হয়েছে। এসব সংঘর্ষের কোনোটি ৩-৪ ঘণ্টা ধরে চলেছে। তবে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে এ সংঘর্ষের অবসান ঘটে।



দেশটির বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী এই গোষ্ঠী বলছে, সরকারি ৩০ সেনাসদস্য নিহত ও ১৬ সদস্য আহত হয়েছে। তবে সংঘের্ষ বিচ্ছিন্নতাবাদী এই গোষ্ঠীর কয়েকজন সদস্য আহত হলেও কারও প্রাণহানি ঘটেনি বলে জানানো হয়েছে।



মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ্য মিন তুন বলেন, সংঘর্ষ হলেও ৩০ সৈন্যের প্রাণহানি অসম্ভব। তিনি বলেন, নং চো ও কিয়াকমি শহরে দুটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কিয়াকমির সংঘর্ষে বিদ্রোহী গোষ্ঠী তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) একটি অস্থায়ী ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে।



নর্দার্ন অ্যালায়েন্স দেশটির বিচ্ছিন্নতাবাদী তিনটি গোষ্ঠীর জোট। টিএনএলএ ছাড়াও আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) এই জোটের সদস্য।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top