সিডনী শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১

আধুনিক গুরুকূলের শ্রেষ্ঠ অন্যতম প্রতিভূ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ : কুমারেশ সরদার


প্রকাশিত:
৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২১:৩৫

আপডেট:
৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২৩:০৯

ছবিঃ ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ

 

প্রথম জীবনে লেখা "দ্যা ফিলোজফি অফ রবীন্দ্রনাথ টেগোর" যিনি লেখেন, তাঁর পিতা চেয়ে ছিলেন তার মতো ছেলে পৌরহিত্যের কাজ করুক। সংসারে দারিদ্রতা তাই কাজ করলেই হয়তো সংসার একটু স্বচ্ছলতার সাথে চলবে। কিন্তু ছেলের ইচ্ছা তিনি লেখাপড়া শিখবেন, আসলে জন্ম বিধিতে যার সাফল্যের তিলক আঁকা তার কি পূজার্চনা তে মন থাকে , এই প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব যার তিনি হলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি(১৯৫২-৬২) এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি (১৯৬২-৬৭) ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ। 

১৮৮৮ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর বর্তমানে তামিলনাড়ু, তৎকালীন মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির পুলিয়ান গুড়ি নামক স্থানে তেলেগু ভাবি নিয়োগী এক গরিব ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রাধাকৃষ্ণণ। পিতা হলেন সর্বপল্লী বীরাস্বামী মাতা সর্বপল্লী সীতা ওরফে সীতাম্মা। তাঁর প্রাথমিক জীবন কাটে তিরুন্থানিও তিরুপতিতে । সেখানে তাঁর পিতা সর্বপল্লী বীরাস্বামী স্থানীয় জমিদারের খাজাঞ্চি হিসেবে কাজ করতেন। বাবা কখনো চাই নি ছেলে ইংরেজি পড়ুক । ছেলের দৃঢ় মানসিকতায় কাছে হার মানেন বাবা এবং অনিচ্ছা সত্বেও তিরুপতির একটি স্কুলে ভর্তি করে দেন তাকে। ছোটবেলা থেকে মেধাবী হিসেবে স্কলারশিপ পান রাধাকৃষ্ণণ । তাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি অর্থের জন্য , প্রথম স্কুল জীবনে। এরপর প্রথমে ভেলোরের ভুরহি কলেজে ভর্তি হলে পরে সেখান থেকে চলে গিয়ে মাদ্রাজ ক্রিশ্চান কলেজে ভর্তি হন । তার পছন্দের বিষয় দর্শন ছিল না, কিন্তু টাকার অভাবে , বই কেনার সামর্থ্য না থাকায় তিনি সেই অপছন্দের বিষয় দর্শনশাস্ত্র  নিয়ে ভর্তি হন । আর এর পিছনেও একটি গল্প আছে। গল্পটি এমন মাদ্রাজ ক্রিশ্চান কলেজ থেকে তার পরিচিত এক দাদা দর্শন বিষয় নিয়ে স্নাতক পাস করেন। সেই সুবিধা পাওয়ার জন্য দাদার বই নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন । মাত্র কুড়ি বছর বয়স যখন তখন তাঁর  বেদান্ত দর্শনের উপর গবেষণা প্রকাশিত হয়। এই প্রবন্ধ পড়ে অধ্যাপক অ্যালফ্রেড জর্জ হগ খুশি হয়েছিলেন । ১৯০৮ সালে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেন পরে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন রাধাকৃষ্ণণ । এরপর অন্ধ বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার কাজ করেন । পরে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন।

রাধাকৃষ্ণণ স্নাতকোত্তর পড়াশুনার সময় ভারতীয় দর্শন অর্থাৎ "বেদান্ত" একটি ভারতীয় দর্শন এই বিষয়কে কেন্দ্র করে গবেষণা করলেন- "বেদান্ত দর্শনের বিমুর্ত পূর্ব কল্পনা" বিষয়কে কেন্দ্র করে (The Ethics of the vedanta and it's metaphysical presuppositions.) এখানে বলা যেতে পারে ভারতীয় বেদান্ত দর্শনের প্রবক্তা ছিলেন শঙ্করাচার্য , পরবর্তীকালে শ্রীরামকৃষ্ণ স্বামী বিবেকানন্দ স্বামী শিবানন্দ মনিষগন । আর এই বেদান্ত দর্শনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন রাধাকৃষণ। মাত্র ষোল বছর বয়সে তার দূরসম্পর্কীয় বোন শিবকামুর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন । একান্ন বছরের বৈবাহিক জীবনে অতিথি হয়ে আসেন পাঁচ কন্যা ও এক পুত্র। ১৯৫৬ সালে তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়।

তিনি দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনার সাথে যুক্ত ছিলেন। প্রসঙ্গত বলা যেতে পারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা করার সময় তিনি International Congress of Philosophy তে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন এছাড়া ভারতীয় দর্শন কে আন্তর্জাতিকতা নিয়ে যায়। 

তিনি কোনদিনও রাজনীতির সঙ্গে প্রথম জীবনে যুক্ত ছিলেন না। কিন্তু পরবর্তীকালে অজান্তে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। UNESCO তে তিনি স্বাধীন ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। উপরাষ্ট্রপতি ও রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব সামলানোর আগে ১৯৪৬  সালে UNESCO রাষ্ট্রদূত হয়েছিলেন । এরপরে সোভিয়েত ইউনিয়নে ভারতের রাষ্ট্রদূত হয়েছিলেন। সুবিশাল পাণ্ডিত্য তাকে আন্তর্জাতিক করে তোলে। উপরাষ্ট্রপতি কিংবা রাষ্ট্রপতি পদ ছাড়াও ভারতীয় সংবিধান রচয়িতা কমিটির constitutent assembly of India একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। নোবেলজয়ী ব্রিটিশ দার্শনিক বারট্রান্ড রাসেল বলেছিলেন -"ড: রাধাকৃষ্ণণ ভারতের রাষ্ট্রপতি হওয়া মানে দর্শন বিষয়ে তাঁর কাছে একটা আলাদা সম্মানের, আমিও নিজে দার্শনিক তাই আমিও গর্বিত।" রাধাকৃষ্ণণ প্রথম ভারতীয় যিনি  University of Oxford বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন ।এছাড়াও তিনি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখেন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য–  The quest, journal of philosophy, International Journal of Ethics প্রভৃতি। 

রাধাকৃষ্ণন ছিলেন যেমন পাণ্ডিত্যের অধিকারী তেমনি তীক্ষ্ণ বুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। অনেক রাজনৈতিক নেতা নেত্রী তাঁকে পছন্দ করতেন না। ১৯৫৭ সালে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদের কার্যকাল শেষ হওয়ার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু রাধাকৃষ্ণণ কে রাষ্ট্রপতি করতে চেয়েছিলে কিন্তু মৌলানা আজাদ এর তীব্র বিরোধিতা ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ আরো ৫ বছর রাষ্ট্রপতি থাকেন। কিন্তু ১৯৬২ সালে নেহেরু সহযোগিতায় রাধাকৃষ্ণণ রাষ্ট্রপতি হন। এই সময় চীন  ও পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ বাঁধে ভারতের। প্রথমে চীনের সঙ্গে, তার তিন বছর পাকিস্তানের সঙ্গে। ১৯৬৪ সালে হঠাৎ করে নেহেরুর মৃত্যু হয়। এর ঠিক দু'বছর পর আকস্মিকভাবে মৃত্যু হয় প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর। সেইসঙ্গে যুদ্ধবিধ্বস্ত ভারতবর্ষকে দায়িত্বের সঙ্গে সামলেছিলেন রাধা কৃষ্ণণ । তাঁর ছেলে সর্বপল্লী গোপাল পিতার সম্পর্কে বলেছেন — "কখন ও কোন নিম্নমানের কাজ করেননি তিনি । কখন ও কোন নিম্নমানের চিন্তাও এসেছিল বলে মনে হয় না।" 

১৯৬৫ সালে ২৫ শে জুন জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি রাধাকৃষ্ণন। সেখানে তিনি বলেন — "পাকিস্তান ভারতকে হয় খুব দুর্বল ভেবেছে, নয়তো খুব ভীত ভেবেছে। ভারত সাধারণত অস্ত্র হাতে তোলে না , কিন্তু আমাদের মনে হয়েছে পাকিস্তানকে একটা শিক্ষা দেওয়া দরকার। পাকিস্তান যেটা ভেবেছিল, তার বিপরীতটাই হলো।" 

'ইন্ডিয়া টুডে পত্রিকায়' প্রকাশিত এক লেখায় প্রাক্তন বিদেশ মন্ত্রী কে নটবর সিংহ বলেছিলেন— "রাধাকৃষ্ণণের মুখে নিজের বিরোধিতা মেনে নিতে পারেন নি ইন্দিরা গান্ধী। তাই ১৯৬৭- তে দ্বিতীয়বার রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ হারান রাধাকৃষ্ণণ।" নটবর সিংহের কথায়— "এটা রাধাকৃষ্ণণ এর কাছে বিশাল আঘাত ছিল।" 

উপরাষ্ট্রপতি থেকে রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর পড়ুয়াদের দাবি ছিল তাঁর জন্মদিনটা টা যেন বিশেষভাবে পালন করা হয়। কিন্তু রাধাকৃষ্ণ বলেছিলেন—  "জন্মদিন উদযাপন না করে সেই দিনটা যদি শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয় তাহলে আমি কৃতজ্ঞ থাকব।" সেই থেকে ৫ ই সেপ্টেম্বর ভারতে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আবার UNICEF ১৯৯৪ সালের ৫ ই অক্টোবর দিনটিই 'বিশ্ব শিক্ষক দিবস' হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশ্বের সর্ব মোট ১৯ টি দেশে  ৫ ই অক্টোবর টিচার্স ডে পালন করে, সেই দেশ গুলি হল—  কানাডা, জার্মানি, বুলগেরিয়া, আর্জেবাইজান, ইস্তোনিয়া,  লিথোনিয়া,  ম্যাকেডোনিয়া,  মালদ্বীপ, নেদারল্যান্ড,  পাকিস্তান, ফিলিফাইন,  কুয়েত, কাতার, রাশিয়া রোমানিয়া, সার্বিয়া,  ইংল্যান্ড, মাউরেটিয়াম, মালদোভা। এছাড়া আরো ১১ টি দেশ ২৮ শে ফেব্রুয়ারিকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস হিসাবে মানে সেই দেশ গুলি হল — মরক্কো, আলজেরিয়া, টিউনিশিয়া লিবিয়া, ইজিপ্ট, জর্ডান, সৌদি আরব, ইয়েমেন, বাহরেইন, ইউ.এ.ই, ওমান । এই টিচার্স দিবসের তাৎপর্য হলো — এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল মনে করে জাতীয় স্তরে সমগ্র বিশ্বে এর মর্যাদা দেওয়া অর্থাৎ শিক্ষকদের উপযুক্ততা মাণ্যতা দান করা। আমাদের দেশে ভারতরত্ন শিক্ষাবিদ দার্শনিক বাগ্মী অধ্যাপক রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিন ৫ ই সেপ্টেম্বর কে বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। 

রাধাকৃষ্ণণের কথায়— 'আমার জন্মদিন পৃথকভাবে পালন না করে, আমি গর্বিত হব দিনটি যদি দেশের সমস্ত শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে পালন করা হয়।' পন্ডিত জহরলাল নেহেরু বলেছিলেন — 'He has served his nation in many Capacityies.  But above all he is a great teacher from whom all of us have Iearnt much and will continue to learn.'  ১৯৬২ সালে ৫ ই সেপ্টেম্বর এই দিনটি শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। একজন দক্ষ শিক্ষকই তাঁর বুদ্ধি, চিন্তন,সততা, মনন ও পরিশ্রম দিয়ে গড়ে তুলতে পারে উপযুক্ত সৎ নাগরিক তথা মানুষ। শিক্ষকই মানুষ তৈরীর কারিগর আসল গুরু—

'অজ্ঞানতিমিরান্ধস্য জ্ঞানাঞ্জন শলাকয়া।
চক্ষুরুন্মীলিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ ।।
অখন্ড মন্ডলাকারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরম্। 
তদপদং দর্শিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।
গুরুব্রহ্মা গুরুবিষ্ণু গুরুদেব মহেশ্বরঃ।
গুরুরেব পরং ব্রহ্ম তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।' 

জাপানের একটা প্রচলিত প্রবাদ আছে সেটি হল — 'Better than a thousand day of diligent suldy is one day with a great teacher. ' বলা যেতে পারে প্রবাদটি বহুলাংশে সত্যি কারণ শিক্ষকতা এমন এক পেশা যা সব  পেশার চেয়ে অন্যতম সেরা।  আগে ছিল গুরুকুল, ব্রহ্মচর্য পালন ।আর এখন ডিজিটাল শিক্ষা মোবাইল থেকে ইন্টারনেট বাড়িতে বসেই শিক্ষার আদান-প্রদান তাই অ্যারিস্টোটলের কথায়— 'যারা শিশুদের শিক্ষাদানে ব্রতী তারা অভিভাবকের থেকে অধিক সম্মানীয়। পিতা-মাতা আমাদের জীবন দান করেন ঠিকই, শিক্ষকরা সেই জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করেন।' তেমন একজন জনপ্রিয় মানুষ তথা শিক্ষক রাধাকৃষ্ণণ। তার কথায়— 'Teachers should be the best minds in the country.' তার বিখ্যাত অমোঘ ৬ টি উক্তি —  ১.'সত্যিকারে শিক্ষক তারাই যারা আমাদের ভাবতে সাহায্য করেন।'  

২. '৫ ই সেপ্টেম্বর আমার জন্মদিন পালন না করে শিক্ষক দিবস উদযাপন করলেই আমি খুশি হব।' 

৩. 'পাপে নিমগ্ন যে জন তাঁর একটা ভবিষ্যৎ আছে। মহান তম ব্যক্তিরও একটা অতীত আছে। কেউ-ই ভালো খারাপের উচিত নয়।' 

৪. 'ঈশ্বর আমাদের প্রত্যেকের ভিতর দিয়েই অনুভব করেন , দুঃখ ভোগ করেন। তাঁর গুণসমূহ, জ্ঞান, সৌন্দর্য এবং ভালোবাসা আমাদের প্রত্যেকের ভেতর দিয়েই প্রকাশিত হয়।' 

৫. 'বই হল এমন এক মাধ্যম যার সাহায্যে আমরা বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে সেতু নির্মাণ করতে পারি।' 

৬. 'আমরা যে মানব জীবন পেয়েছি তা হলো আদর্শ মানব জীবন গড়ে তোলার উপকরণ।' 

 

রাধাকৃষ্ণণ প্রকৃত শিক্ষাবিদের কি সংজ্ঞা দিয়েছিলেন?

 তিনি মনে করতেন—  'একজন শিক্ষাবিদ তিনিই,  যিনি সকলের সঙ্গে মিলে যেতে পারেন, কিন্তু তাঁর সঙ্গে সকলের মিল খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ঈশ্বর সম্পর্কে রাধাকৃষ্ণণ বলেন— 'সমস্ত  আত্মার উদ্ধে রয়েছে ঈশ্বর, তিনি সর্বোচ্চ চেতনা। ঈশ্বর ভক্তি তাঁর কাছে এক অসামান্য চেতনার সামিল। আর ধর্ম, এটি কেবলমাত্র ব্যবহারিক দিক। পঠন-পাঠন না হলে জ্ঞানের আঁধার আলোকিত হবে না।' 

তাই তিনি বলেন— 'বই হবে এমন যা বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে যোগ সাধন করতে পারে। জীবনে সুখ আর খুশি পেতে হলে জ্ঞান ও বিজ্ঞানের রাস্তায় হাঁটা উচিত। আর যখন ব্যক্তির ধারণা জন্মায় যে সে অনেক কিছু জেনে গিয়েছে তখনই শেষ হয় জ্ঞান আরোহণের ইচ্ছা।' 

 

তিনি জীবনে অনেক সম্মান ও পুরস্কার পেয়েছিলেন। ১৯৩১ সালে নাইট হুড উপাধি ,ভারত স্বাধীন হওয়ার পর sir উপাধি ত্যাগ করেন। সাহিত্য বিভাগে নোবেল পুরস্কার এগারোবার এবং নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ষোলো বার মনোনীত হন। 

 

'১৯৩৮ সালে ব্রিটিশ একাডেমির ফেলো, ১৯৫৪ সালে ভারতরত্ন, ১৯৫৪ সালে জার্মানি কলা বিজ্ঞান বিভাগে সাম্মানিক পুরস্কার, ১৯৬১ সালে 'German Book Trade' প্রদত্ত শান্তি পুরস্কার, ১৯৬৩ বৃটেনের 'Order of Merit' , ১৯৬৮ সালে সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার এবং ১৯৭৫ সালে মৃত্যুর কিছুদিন আগে পান  'Templeton prize.' 

 

ডঃ রাধাকৃষ্ণণ তাঁর সমস্ত সমস্যাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করেছিলেন সারা বিশ্বকে এই মহামানব আমাদের ছেড়ে চলে যান ১৯৭৫ সালের ১৭ এপ্রিল 

 

তথ্যসূত্র:– ১. রাধাকৃষ্ণণ এর জীবনী 
২. বিভিন্ন সাময়িক পত্রপত্রিকা ও আনন্দবাজার পত্রিকা।

 

কুমারেশ সরদার
লেখক, পশ্চিম বঙ্গ, ভারত



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top