সিডনী শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১


সরকারের হাতে আছে ৯ দিন; কে হচ্ছেন সার্চ কমিটির প্রধান


প্রকাশিত:
২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০০:৫৯

আপডেট:
২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০১:৩৩

 

প্রভাত ফেরী: নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রণীত আইনে সার্চ কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের সুপারিশকৃত তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাবের কথা বলা হয়েছে। এদিকে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৪ ফেব্রুয়ারি। সে হিসেবে কমিশন গঠনের জন্য সরকারের হাতে আছে মাত্র ৯ কার্যদিবস।

আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত বিষয়ে সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সোমবার রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সার্চ কমিটির প্রজ্ঞাপন হয়নি। নির্বাচন কমিশন গঠনে সদ্য প্রণীত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার আইন, ২০২২’-এর ৩(৫) ধারা অনুযায়ী, ‘অনুসন্ধান কমিটি গঠনের ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে ইহার সুপারিশ রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করিবে।’ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পনেরো কর্মদিবসের মধ্যে সুপারিশ দেওয়ার কথা বলা হলেও এর কম দিনের মধ্যে সুপারিশ জমা দিলেও অসুবিধা নেই।

এদিকে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান কমিশন বিদায় নেওয়ার আগেই নতুন কমিশন গঠন করতেই হবে এমন কোনো সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নেই। যে কারণে এর আগের কমিশন গঠনের সময় সাত দিনের ব্যবধান ছিল। সাবেক সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। এক সপ্তাহ সিইসিবিহীন থাকার পর ১৫ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নেন কেএম নূরুল হুদা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানায়, এ ক্ষেত্রে সাংবিধানিক বাধ্যবাধ্যকতা না থাকায় একটু দেরি হলেও সমস্যা নেই। কারণ আইন প্রণয়ন করতে সময় লাগায় এবার সার্চ কমিটি গঠনে একটু দেরি হলেও এতে সমালোচনার কিছু নেই। আলোচনায় দুই বিচারপতি : বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আপিল বিভাগে কর্মরত দুই জ্যেষ্ঠ বিচারপতি। নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির প্রধান হওয়ার তালিকায় তাদের দুজনের একজন নিয়োগ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে জানা গেছে। বর্তমান প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পর থেকে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি মুহাম্মদ ইমান আলী ছুটিতে আছেন।

আইন অনুযায়ী, সার্চ কমিটির প্রধান হবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি। দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি ছুটিতে থাকায় তিনি এই দায়িত্বে আসার সম্ভাবনা কম। আপিল বিভাগের অপর দুই জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসান-এ দুজনেরই আগের দুটি সার্চ কমিটিতে সদস্য হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই তাদের মধ্য থেকে একজনকে সার্চ কমিটির প্রধান হিসেবে বেঁচে নেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আইন প্রণয়নের আগে ইসি গঠনে দুবার সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ওই দুবার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের মধ্যে সৈয়দ মাহমুদ হাসান দায়িত্ব পালন করেন। যিনি পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই দুই কমিটিতে সদস্য হিসেবে হাইকোর্টের বিচারপতি থাকাকালে মো. নুরুজ্জামান এবং ওবায়দুল হাসান দায়িত্ব পালন করেন।

সম্প্রতি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে নতুন চারজন বিচারপতি নিয়োগ পেয়েছেন। নিয়োগ পাওয়া বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ আপিল বিভাগে নতুন হওয়ায় তাদের মধ্যে কেউ সার্চ কমিটির প্রধান হিসেবে বিবেচনার সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সার্চ কমিটিতে পদাধিকারবলে দুজন সদস্য থাকছেন বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মুসলিম চৌধুরী এবং সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন। বাকি তিন সদস্যের মধ্যে প্রধান বিচারপতি মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুজন বিশিষ্ট ব্যক্তি হবেন। রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুজনের মধ্যে একজন নারী সদস্য হবেন বলে আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।

কী করবে সার্চ কমিটি : আপিল বিভাগের বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় সদস্যের এই অনুসন্ধান কমিটি আইনে বর্ণিত যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিবেচনা করে দশজনের নাম বাছাই করবেন। সেই দশজনের মধ্য থেকেই রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।

সার্চ কমিটির আইনে বেঁধে দেওয়া যোগ্যতা, অযোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। এ ক্ষেত্রে কমিটি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করবে।

এ অনুসন্ধান কমিটি সিইসি ও কমিশনারদের প্রতি পদের জন্য দুজন করে ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। সিইসি এবং নির্বাচন কমিশনার পদে যোগ্যদের অনুসন্ধানের জন্য রাজনৈতিক দল এবং পেশাজীবী সংগঠনের কাছ থেকে নাম চাওয়ার সুযোগও আছে সার্চ কমিটির।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top