আইন করে বঙ্গবন্ধুর প্রতি সম্মান দেখানো যাবে না : প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিত:
১৬ জানুয়ারী ২০২০ ২১:৫৮
আপডেট:
১৭ জানুয়ারী ২০২০ ০৩:০০

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: আইন করে বঙ্গবন্ধুর প্রতি মন থেকে সম্মান দেখানো যাবে না বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ’৭৫-এর পর বাংলাদেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। সেই অন্ধকার ভেদ করে এখন বাংলাদেশ আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন ও আদর্শ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন, তা বাস্তবায়নে আমরা অনেকদূর এগিয়ে গেছি। তাই মুজিব বর্ষ কে মানল, কে মানল না সে জন্য জাতি বসে নেই, বসে থাকেনি। তারা যদি কাউকে সম্মান না দেখাতে চায়, তাহলে সেটা আইন দিয়ে তো তাদের মনের ইচ্ছাটা পূরণ করা যাবে না।
বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত, যারা সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর হত্যকান্ডে জড়িত খুনিদের বিচারের হাত থেকে মুক্ত করে পুরস্কৃত করেছে, যারা স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী, যাদের বিচার শুরু হয়েছিল- তাদের বিচারের পথ বন্ধ করে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিয়ে মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিল, তাদের (বিএনপি) কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না। তারা যদি কাউকে সম্মান না দেখাতে পারে, সে জন্য জাতি বসে থাকেনি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার অবদান, নাম, স্লোগান ও ভাষণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল। আজকে সেই সঠিক ইতিহাস উদ্ভাসিত হয়েছে। শুধু বাঙালির মুখে নয়, সারা বিশ্বে বঙ্গবন্ধুর অবদান স্বীকৃতি পেয়েছে।
তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘৭৫-এর পর ২১টি বছর জাতির পিতার নাম-নিশানা ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু বাংলার মাটিতে সত্যকে কখনও মিথ্যা দিয়ে চাপা দিয়ে রাখা যায় না, মুছে ফেলা যায় না, সেটা আজ প্রমাণিত সত্য। প্রমাণিত সত্য বলেই বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর প্রামাণ্য দলিলে স্থান পেয়েছে। গত আড়াই হাজার বছরে বিশ্বের যত নেতৃত্বের ভাষণ তার দেশ ও দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ। এটা গোটা বিশ্বই স্বীকার করে নিয়েছে।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মো. ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সবাই এমপি, কেউ উঁচু বা নিচুতে নেই। আর আমি কখনও নিজেকে উঁচুতে রয়েছে তা কখনও ভাবি না। আর কী পেলাম আর কী পেলাম না, সেই হিসাব আমি কখনও মেলাই না। বরং দেশের মানুষকে, দেশকে কতটুকু দিতে পারলাম, যে মানুষগুলোর জন্য আমরা পিতা (বঙ্গবন্ধু) জীবন দিয়ে গেলেন, সেই মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম সেটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় কথা। আর আমার কাছে কখনই আমিত্ব বলে কোনো কিছু নেই।
জাতীয় পার্টির মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বের যে সব দেশে আমাদের দূতাবাস আছে, সে সব দূতাবাসের মাধ্যমে মুজিব বর্ষ পালন করা হবে। তা ছাড়া ইউনেস্কোভুক্ত দেশসমুহও তা পালন করবে। আর মুজিব বর্ষ উদযাপনের সময় অনেক দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধান অনেকেই আসবেন। আমরা ভাগে ভাগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেব। আর মুজিব বর্ষ উপলক্ষে সংসদের বিশেষ অধিবেশন বসবে। সেখানেও অনেক দেশের রাষ্ট্র প্রধান, সংসদ সদস্যদের দাওয়াত দেব, তারা সংসদে এসে বক্তব্য দিয়ে যাবেন।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: