৭ মার্চকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করতে হাইকোর্টের নির্দেশ
প্রকাশিত:
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:২২
আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ১১:৪০

প্রভাত ফেরী: একাত্তরের যে দিনটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, সেই ৭ মার্চকে ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ ঘোষণা করে এক মাসের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
এছাড়া, দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় যথাযথ স্থানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়ে এক মাসের মধ্যে আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বিশাল জনসমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুগান্তকারী ভাষণের স্মারক হিসেবে দিনটি অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। ঐতিহাসিক ওই দিনটিকে কেন জাতীয় দিবস ঘোষণা করা হবে না ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, যেখানে সেদিন বঙ্গবন্ধু ভাষণ দিয়েছিলেন সেখানে কেন তার ভাস্কর্য স্থাপন করা হবে না তা জানতে চেয়ে ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী ড. বশির আহমেদ।
এর আগে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের স্মৃতি বিজড়িত স্থান রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নিয়ে সরকারের নেওয়া পরিকল্পনা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষকে এ তথ্য জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চকে ঐতিহাসিক জাতীয় দিবস ঘোষণা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের স্থান চিহ্নিত এবং সেখানে বঙ্গবন্ধুর আঙ্গুল উঁচানো স্ট্যাচু নির্মাণের নির্দেশনা চেয়ে ২০১৭ সালে এ রিট আবেদন দায়ের করেছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ড. বশির আহমেদ।
এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেছিলেন।
সাড়ে চার দশক আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে, সেই ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) সাত কোটি বাঙালিকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি ঘোষণা দেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ তার ওই ভাষণের ১৮ দিন পর পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালি নিধনে নামলে বঙ্গবন্ধুর ডাকে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের পর আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পরাজিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই আত্মসমর্পণের দলিলে সই করে। সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের ৭৭টি ঐতিহাসিক নথি ও প্রামাণ্য দলিলের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ হিসেবে ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ যুক্ত করেছে ইউনেস্কো।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: