সিডনী মঙ্গলবার, ১৪ই মে ২০২৪, ৩১শে বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংক থেকে তুলে জনগণের হাতে রাখা আড়াই লাখ কোটি টাকা


প্রকাশিত:
৩১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৪:৪১

আপডেট:
১৪ মে ২০২৪ ১৭:৩৬

ব্যাংক থেকে তুলে জনগণের হাতে রাখা টাকার পরিমাণ ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। গত নভেম্বর পর্যন্ত সাময়িক হিসাবে ব্যাংক থেকে তুলে গ্রাহকরা নিজেদের হাতে রেখেছেন প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এর পরিমাণ আরও বেড়েছিল। পরে অবশ্য তা কমতে শুরু করেছে। আগে কখনোই গ্রাহকরা এত টাকা তুলে নিজেদের হাতে রাখতেন না। উলটো ব্যাংকেই বেশি টাকা রাখতেন। এতে মুনাফা পাওয়া যেত। এখন হাতে রাখায় একদিকে গ্রাহকরা কোনো মুনাফা পাচ্ছেন না। অন্যদিকে বাড়ছে নানামুখী ঝুঁকি। গ্রাহকদের হাতে থাকা টাকা অর্থনীতিতেও কোনো অবদান রাখতে পারছে না। এদিকে ব্যাংক থেকে গ্রাহকরা টাকা তুলে নেওয়ায় ব্যাংকের নগদ টাকার সংকট দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ২০১৯ সালের অক্টোবরের তুলনায় ২০২০ সালে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে গ্রাহকদের হাতে রাখার প্রবণতা বেড়েছিল ২১ দশমিক ২৯ শতাংশ। ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত এ প্রবণতা বৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশে নেমে আসে। ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে গত নভেম্বর পর্যন্ত টাকা তুলে হাতে রাখার প্রবণতা আবার ২০ দশমিক ১৯ শতাংশ বেড়ে যায়। গত অক্টোবরে ব্যাংক খাত নিয়ে নানা গুজব ছড়ালে গ্রাহকদের টাকা তোলার প্রবণতা আরও বেড়ে যায়। নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত দেড় মাসে গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে তুলেছেন প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। শতকরা হিসাবে প্রায় ১৮ শতাংশ বেড়েছে টাকা তোলার হার। এটিই সবচেয়ে বেশি টাকা তোলার প্রবণতা। সাধারণত ৭ থেকে ৮ শতাংশ টাকা তোলার প্রবণতা বৃদ্ধিকেই স্বাভাবিক মনে করা হয়। সূত্র জানায়, ২০২০ সালে করোনার পর থেকে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে গ্রাহকদের হাতে রাখার প্রবণতা বাড়ছে। এর আগে এই প্রবণতা স্বাভাবিকই ছিল। করোনার সময় গ্রাহকদের হাতে থাকা টাকার একটি অংশ গত বছর আবার ব্যাংকে ফিরে গিয়েছিল। যে কারণে ওই বছর গ্রাহকদের হাতে থাকা টাকার প্রবাহ কমে গিয়েছিল। ব্যাংকে টাকার প্রবাহ বেড়েছিল। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যায়। দেশের বাজারেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। পণ্যের দাম বেড়ে যায়। ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের ফলে টাকার মান কমে যায়। এতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়। যুদ্ধের প্রভাবে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থাও খারাপ হওয়ার পাশাপাশি খাদ্য সংকটও দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত এপ্রিল থেকে আবার গ্রাহকদের ব্যাংক থেকে টাকা তোলার প্রবণতা বেড়ে যায়। এর আগে গত বছরের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত টাকা তোলার প্রবণতা স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু যুদ্ধের প্রভাবে টাকা তোলার প্রবণতা বেড়ে যায়। গত অক্টোবরে ব্যাংক নিয়ে নানা ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এর দ্বারা প্রভাবিত হয়েও অনেকে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়েছেন। কেউ কেউ টাকা তুলে তা দিয়ে বেআইনিভাবে ডলার কিনে তা নিজেদের হাতে রেখেছেন। আগে এসব টাকা আবার ব্যাংকে ফেরত এলেও এবার আর তা ফিরে আসছে কম। ফলে ব্যাংকে নগদ টাকার প্রবাহ কমে গেছে।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top