সিডনী রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


বিজয় দিবস কনসার্টে মুখরিত সিডনির বুলডগ স্টেডিয়াম


প্রকাশিত:
২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:০৯

আপডেট:
১৯ মে ২০২৪ ০১:১৮

বিজয় দিবস কনসার্টে মুখরিত সিডনির বুলডগ স্টেডিয়াম

জনপ্রিয় ব্যান্ড দল সোলস, ওয়ারফেইজ, নতুন প্রজন্মের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ঐশী, মেহেদি হাসান, স্হানীয় ব্যান্ড যোদ্ধা,   কৌতুক অভিনেতা মোঃ জামিল হোসেন, আবু হেনা রনি, ডিজে রাফসান, ডিজে সায়েম, ডিজে খান সহ আরো অনেকের গান, কৌতুকের মুগ্ধতার রেশ ছড়িয়ে দিলো অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীদের  মন ও মননে। দীর্ঘকাল এ স্মৃতি তারা বহন করবেন বলেও কেউ কেউ তৃপ্তির ঢেকুর তোলে মন্তব্য করলেন। সুরের মূর্ছনায় ছড়িয়ে শিল্পীরা দর্শকদের এক উপভোগ্য রাত উপহার দিলেন। মুষলধারে বৃষ্টি আর কিংবা ঘড়ির কাটা মধ্যরাতের দিকে এগুলেও সেদিকে ভ্রুক্ষেপ ছিল না কারোই। পরিবার-পরিজন আর বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে তাই নিজেদের মতো করে কনসার্টস্থলে মজে থাকলেন গ্যালারী ভর্তি দর্শক।





 



 এ চিত্র ছিল গতকাল ২২ ডিসেম্বর শনিবার  সিডনির বেলমোরের বুলডগ স্টেডিয়ামে গ্রিনফিল্ড ইন্টারটেইনমেন্ট এর উদ্যোগে  অনুষ্ঠিত বিজয় দিবস কনসার্টে। বিকাল থেকে হাজার হাজার মানুষ সারি বেঁধে উৎসবস্থলে ঢুকতে থাকেন। প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত বিনোদন প্রিয় এসব মানুষ মনের আনন্দে উপভোগ করেন শিল্পীদের নান্দনিক সব পরিবেশনা।





 



তানিসা ফেরদৌসের উপস্হাপনায় শুরুতেই মঞ্চে আসে ল্যাকেম্বা বাংলা স্কুল ও স্হানীয় শিশু শিল্পীরা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও বিজয় দিবস  নিয়ে তাদের পরিবেশনা সকলকে মুগ্ধ করে।  ডিজে সায়েম, ডিজে খান,    স্হানীয় ব্যান্ড যোদ্ধা,  মেহেদি হাসানের  সুরের ঝংকারে  উল্লাসে মেতে উঠে গানপ্রেমীরা। করতালি আর চিৎকারে তারা স্বাগত জানায় তাদেরকে। আসতে থাকে আরো গান গাওয়ার আবেদন।  এরই  মাঝে  মঞ্চ  আসেন মীরাক্কেল তারকা জামিল হোসেন।  চমৎকার উপস্থাপনা আর কৌতুক দিয়ে তিনি জয় করেছেন উপস্হিত দর্শকদের মন। তার আহবানে সাড়া দিয়ে মঞ্চ আসেন নতুন প্রজন্মের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ফাতিমা তুয যাহরা ঐশী।





 ঐশী  আযম খানের বাংলাদেশ গান দিয়ে ফোক গানের সুর তোলেন। এরপর একে একে নেচে গেয়ে দর্শক শোনান মাঁঝি পাল তুলে দো, আসবার কালে, যে জন প্রেমের ভাব জানে না,  পবন দাস বাউলের ‘দিল কি দয়া হয় না’, ‘দিল্লিতে নিজাম উদ্দিন আউলিয়া’ গানের তালে তালে  দর্শকের উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো।





এরপর হাজির হন  মীরাক্কেল আক্কেল চ্যালেঞ্জার সিজন ৬-এর চ্যাম্পিয়ন  স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান আবু হেনা রনি। একের পর এক রনির কৌতুক শুনে হাসিতে ভেঙে পড়ে দর্শকেরা। কৌতুকের মাঝে দর্শকদের উদ্দেশে বাংলাদেশ , অস্ট্রেলিয়া এবং প্রবাসীদের সংসার নিয়ে  নানা কথা বলেন তিনি।





রনির কৌতুকের রেশ কাটতে না কাটতে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয় ব্যান্ড দল সোলসকে। তাদের আমন্ত্রণে দর্শকদের আনন্দ আর দেখে কে? তাদের বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছাসে আয়োজকরা মঞ্চের সামনে জায়গা করে দিতে বাধ্য হন।  ''এ এমন পরিচয়'' কিংবা কেন ''এই নিঃস্বঙ্গতা'' “মন শুধু মন ছুঁয়েছে”, দেখা হবে বন্ধু, গান যখন সোলস ব্যান্ড গাইছে তখন স্টেডিয়ামের গানপ্রেমীরা মেতে উঠেছে উল্লাসে। এর মাঝেই বেরসিক বৃষ্টি হানা দিলো অনুষ্ঠানে। কেউ কেউ পিছনের দিকে শেডে আশ্রয় নিল আবার কেউ কেউ বৃষ্টি ভিজেই শিল্পীদের সাথে গানে তাল মেলাতে ব্যাস্ত। তবে কেউই অনুষ্ঠান স্হল ছেড়ে যাননি।





সোলসের পর আবার ও মঞ্চে আসেন রনি। দর্শকরা বৃষ্টিতে ভিজে অনুষ্ঠান দেখছে এর জন্য তিনি ও নেমে এলেন দর্শকদের কাতারে। মেতে উঠলেন বিভিন্ন দম্পতিকে নিয়ে সাক্ষাৎকারধর্মী সরস কৌতুকে। এর মাঝে মঞ্চ প্রস্তুত হলে শেষ ব্যান্ডের আসার পালা । উপস্থাপিকার মুখে প্রিয় ব্যান্ড  ওয়ারফেইজ নাম শোনার সাথে সাথে পুরো স্টেডিয়াম যেন পরিণত হয় এক অন্য রকম পরিবেশে। আবারো শেড ছেড়ে দর্শকরা মঞ্চের সামনে খোলা জায়গায়। মহারাজ, তুমি শুধু ভালোবাসো আমাকে, হে সমাজ  সহ আরো কিছু হার্ড রক আর হেভি মেটাল ধাঁচের গানে নেচে গেয়ে ওঠে পুরো স্টেডিয়াম।







ঘড়ির কাঁটায় যখন ১১ .৪০,  আয়োজন শেষ  হলে ও  তার আনন্দের রেশ নিয়ে বাড়ি ফিরে যান গানপ্রেমীরা। সবাই মুখে একটাই কথা সত্যিকারের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান উপহার দিলো আয়োজকরা। যা সকলের জন্য অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকা উচিৎ।  এই জন্য বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পীদের পাশপাশি তারা ও বিজয় দিবস কনসার্টের আয়োজক গ্রিনফিল্ড এন্টারটেইনমেন্টের এনামুল হক, ফয়সাল আজাদ, মিরাজ হোসেন সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top