সিডনী শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


প্রভাত ফেরীর সহযোগিতায় অস্ট্রেলিয়াতে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান


প্রকাশিত:
৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০২:০৪

আপডেট:
৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৩:৫৮

 

গত শনিবার (০৩/০৯/২০২২) উইমেন্স কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়ার আয়োজনে সিডনির ব্যাংক্সটাউনে অবস্থিত হিমালয় এম্পোরিয়ামে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত ৮ মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা দেওয়া হয়। এই অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিল সিডনি থেকে প্রকাশিত বাংলা সংবাদপত্র 'প্রভাত ফেরী' এবং পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল অস্ট্রেলিয়ার স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “অস্ট্রেলেশিয়ান ইন্টারন্যশনাল একাডেমি”।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের বীর কণ্ঠযোদ্ধা ও দেশের স্বনামধন্য চিকিৎসক ডাঃ অরূপ রতন চৌধুরী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব কাজী জাকির হাসানের স্ত্রী কথা সাহিত্যিক ও গবেষক শাহান আরা জাকির। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সম্মানিত মিজ উইন্ডি লিন্ডসে এম পি, কন্সাল মোঃ আশফাক হোসেন (বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল অফিস), কাউন্সিলর সাজেদা আক্তার সানজিদা, কাউন্সিলর মাসুদ খলিল, কাউন্সিলর মাসুদ চৌধুরী, ডঃ আয়াজ চৌধুরী এবং কমিউনিটির সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ।
 ছবিঃ বক্তব্য রাখছেন শ্রাবন্তী কাজী, কন্সাল মোঃ আশফাক হোসেন এবং মিজ উইন্ডি লিন্ডসে এম পি
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন 'প্রভাত ফেরী'র প্রধান সম্পাদক এবং অস্ট্রেলেশিয়ান ইন্টারন্যশনাল একাডেমির ডিরেক্টর ও সি ই ও শ্রাবন্তী কাজী আশরাফী জে পি। তিনি বলেন, 'মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাঁদের ত্যাগের বিনিময়ে আজ আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। তাঁদের অবদানের কথা আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে। আমি নিজেও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমার বাবা কাজী জাকির হাসান ছিলেন একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, প্রখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব এবং লেখক। আজ এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁদের সম্মান জানাতে পেরে আমি আনন্দিত”। এরপর তিনি উইমেন্স কাউন্সিলকে এই রকম একটা অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য এবং সকলের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহনের জন্য ধন্যবাদ জানান।
কন্সাল মোঃ আশফাক হোসেন মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। তিনি স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা শেখ মুজিবর রহমানকে স্বরণ করেন এবং মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরেন।

ছবিঃ বক্তব্য রাখছেন ডাঃ অরুপ রতন চৌধুরী, ডাঃ আয়াজ চৌধুরী এবং কথা সাহিত্যিক শাহান আরা জাকির
উইমেন্স কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি কাউন্সিলর সাজেদা আক্তার সানজিদা তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের অর্জনের কথা তুলে ধরেন। তিনি এই আয়োজনে শ্রাবন্তী কাজী আশরাফীর স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাঁর এই সহযোগিতার জন্য স্বল্প সময়ে এই রকম একটা অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে।



বিশেষ অতিথি অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, 'আজ আপনারা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করে নিজেরাই সম্মানিত হলেন। প্রবাসে এসেও দেশের প্রতি আপনাদের ভালোবাসায় আমি অভিভূত।'
শাহান আরা জাকির মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ে তাঁদের সংগ্রামের গল্প শুনিয়ে দর্শকদের আবেগাপ্লুত করেন। তিনি জানান, ১৯৭১ সালে ১৭ বছরের কিশোর কাজী জাকির হাসান ছিলেন ৪৫ মুক্তিসেনার অপারেশন গ্রুপের কমান্ডার। হানাদার বাহিনীর পুঁতে রাখা মাইনে তার ডান পা উড়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হলেও তিনি দেশ ও জাতির জন্য আমরণ কাজ করে গেছেন। তিনি ছিলেন একজন স্বনামধন্য নাট্য ব্যক্তিত্ব, সংগঠক, সমাজ সংস্কারক ও লেখক। এই জন্য বাংলাদেশ সরকার এই মহান বীরকে ২০১৮ সালে তাঁর অবদানের জন্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পদক প্রদান করেন।

ছবিঃ শায়ান ইয়াসার জামান, কাউন্সিলর মাসুদ চৌধুরী এবং কাউন্সিলর মাসুদ খলিল
এরপর সিডনিতে অবস্থানরত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে শ্রাবন্তী কাজী আশরাফী জে পি, মিজ উইন্ডি লিন্ডসে এম পি, কাউন্সিলর সাজেদা আক্তার সানজিদা, শাহান আরা জাকির সম্মাননার প্রতীক স্বরুপ ক্রেস্ট তুলে দেন। উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা হলেন জনাব মিজানুর রহমান তরুণ, জনাব আবুল হেলাল উদ্দিন, জনাব মোহাম্মদ রেজাউর রহমান, জনাব ডঃ আব্দুর রশীদ আলমগীর, জনাব ডঃ মোঃ হাবিবুর রহমান বিশ্বাস, জনাব শাহ মোঃ এনায়তুর রহিম, জনাব মোঃ আব্দুল লতিফ। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য ভূমিকা রাখার জন্য সম্মান জানানো হয় অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক বীর প্রতীক উইলিয়াম এ এস অডারল্যান্ডকে।

ছবিঃ গান পরিবেশন করছেন নীলুফা ইয়াসমীন এবং অমিয়া মতিন এবং কবিতা ফয়জুন নাহার পলি
অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন ফয়জুন নাহার পলি, ফাহাদ আসমার, হাবিবুর রহমান ও রতন কুন্ডু। সংগীত পরিবেশন করেন নিলুফা ইয়াসমীন, অমিয়া মতিন ও মিঠু স্বপ্ন।

ছবিঃ নৃত্যে মৌসুমী সাহা, কবিতা আবৃত্তি করছেন ফাহাদ আসমার এবং হাবিবুর রহমান
অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেন নৃত্যাঞ্জলি একাডেমীর কর্ণধার মৌসুমী সাহা। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন আকিদুল ইসলাম এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন সাবেক কাউন্সিলর শাহে জামান টিটু।

অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে একটা সুভ্যেনিয়র প্রকাশ করা হয়।




অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে নৈশ ভোজের মাধ্যমে আপ্যায়ন করা হয়।

 


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top