সিডনী সোমবার, ২০শে মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে


প্রকাশিত:
১৩ মে ২০১৮ ১৩:৫১

আপডেট:
২০ মে ২০২৪ ১৮:২২

সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে

প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জামাত- বিএনপির সমর্থক কর্মকর্তা কর্মচারীরা তৎপর হয়ে উঠেছেন। রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্পর্শকাতর এবং গোপন তথ্য চলে যাচ্ছে বিএনপি-জামাতের হাতে। একাধিক গোয়েন্দা সূত্রে এই খবর পাওয়া গেছে। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, উপ-সচিব পর্যায় থেকে সচিব পর্যন্ত বেশ কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে বিএনপি-জামাতের যোগাযোগ রয়েছে। তারা বিএনপির চাহিদা অনুযায়ী নানা তথ্য পাচার করছে। সম্প্রতি একটি মন্ত্রণালয়ে পদ্মা সেতুর ব্যয় সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্র কপি করার অভিযোগ উঠেছে এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ঐ কর্মকর্তা কেন ঐ গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ফটোকপি করেছিলেন তা জানা যায়নি। এছাড়াও রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প, মেট্রোরেল প্রকল্পসহ সরকারের বেশ কিছু ফাস্টট্রাক প্রকল্পের বাজেট এবং আনুষঙ্গিক কাগজপত্র বিএনপির হাতে গেছে বলে একাধিক গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছে। গত সপ্তাহে বিএনপি ব্যাংকিং সেক্টরের দুর্নীতি নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছে। বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং সরকারের বড় প্রজেক্টের ব্যয় নিয়ে তারা একাধিক সংবাদ সম্মেলন করবে। পদ্মা সেতু সহ সরকারের বড় প্রকল্পের কথিত দুর্নীতি নিয়ে আরেকটি সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। আর এই সংবাদ সম্মেলনের তথ্য সংগ্রহে বিএনপিকে সাহায্য করছে প্রশাসনের ভেতরে থাকা লোকজন।



গোয়েন্দা সূত্রের খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ অন্তত ১৬ টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগে বিএনপি-জামাত পন্থীরা সক্রিয়। আগে থেকেই যারা বিএনপি-জামাতপন্থী হিসেবে পরিচিত ছিল তাঁরা ইতিমধ্যে কোণঠাসা। এখন যারা বিএনপির সঙ্গে কাজ করছে এরা অধিকাংশই আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচয় দেয়। এদের কেউ কেউ প্রশাসনে আওয়ামীপন্থী হিসেবে দাপটও দেখায়। এছাড়াও নানা কারণে পদোন্নতি বঞ্চিত কিছু কর্মকর্তা বিএনপির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।



বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ড. আতিউর রহমানের পদত্যাগের পর নতুন গভর্নর হন ফজলে কবির। নতুন গভর্নর দায়িত্ব নেওয়ার পর ড. আতিউর রহমানের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো ছিল এমন সব কর্মকর্তাদের কোণঠাসা করেন। এতেই এখানে শক্ত অবস্থানে এসেছেন বিএনপি-জামাতপন্থীরা। সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকিং সেক্টরে আতঙ্ক ছড়ানোর ক্ষেত্রে এই সব কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ে গত ৪/৫ বছর ধরেই বিএনপি-জামাত পন্থীরা ভিড় করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এখানে তথাকথিত দক্ষতার নামে অন্যকিছু যাচাই-বাছাই হয়না। এই মন্ত্রণালয়ে একজন পদোন্নতি বঞ্চিত যুগ্ম সচিবের বিরুদ্ধে তথ্য পাচারের অভিযোগ রয়েছে। সেতু বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বর্তমান সরকারের সমালোচক। কিন্তু সেতু সচিবের প্রশ্রয়ে তাঁরা দাপটে চাকরি করছেন। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে একজন অতিরিক্ত সচিব গোয়েন্দা সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধেও তাঁদের কাজের বাইরে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের অনুলিপি সংগ্রহের অভিযোগ রয়েছে। সচিব পর্যায়ের অন্তত তিনজন সচিবের ব্যাপারে সন্দেহ করা হচ্ছে। এদের একজন একটি বিভাগীয় শহরের কমিশনার ছিলেন। রাজনৈতিক বিবেচনায় সচিব হয়েছেন। তাঁর মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক সংস্থা। দীর্ঘদিন একটি বিভাগের মহাপরিচালকের থেকে কিছুদিন আগে ভারপ্রাপ্ত সচিব হওয়া এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আগে থেকেই জামাতের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল। তারপরেও তার সচিব হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নির্বাচনের আগে প্রশাসনে এরকম বিএনপি-জামাতের এজেন্ট নিয়ে সরকারও কিছুটা উদ্বিগ্ন। 



সরকারের একাধিক সূত্র বলছে, বিএনপি- জামাত পন্থীরা যতই আওয়ামী লীগ সেজে থাকুক সুযোগ পেলেই যে স্বরূপে আত্মপ্রকাশ করে খুলনা তার প্রমাণ। খুলনার সিটি নির্বাচনে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আচরণে আওয়ামী লীগ অবাক। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন ‘নির্বাচনের আগে প্রশাসনকে বিএনপি –জামাত মুক্ত না করলে, বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে পারে আওয়ামী লীগ।’ অন্য একজন নেতা বলেছেন ‘অধিকাংশ পদোন্নতি হয়েছে তদবিরে। আমরাই বিএনপি-জামাতকে আওয়ামী পরিবার বলে সার্টিফিকেট দিয়েছি। এখন তার ফল ভোগের সময়।’



বাংলা ইনসাইডার


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top