সিডনী শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মণির স্বামীর ফেসবুক স্ট্যাটাস ভাইরাল


প্রকাশিত:
৩০ অক্টোবর ২০১৯ ২৩:২২

আপডেট:
৪ মে ২০২৪ ২৩:০০

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মণির স্বামীর ফেসবুক স্ট্যাটাস ভাইরাল

প্রভাত ফেরী ডেস্ক:  গত বৃহস্পতিবার ফেনীর নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ নুসরাত হত্যা মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে সকল আসামীকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন। সেই মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ১৬ আসামির একজন তার সহপাঠী কামরুন নাহার মণি। কারাবন্দি মণি গত ২১ সেপ্টেম্বর একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। রায় ঘোষণার সময় দিন এক মাসের সেই কন্যা সন্তানকে নিয়েই তিনি আদালতে আসেন। পরদিন মণির স্বামী রাশেদ খান রাজু তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে আবেগঘন একটি স্ট্যাটাস দেন।  যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।



প্রভাত ফেরী পাঠকদের জন্য আসামি মণির স্বামী রাশেদ খান রাজুর স্ট্যাটাসটি সম্পূর্ন তুলে ধরা হলো:



আমার আমানত, আমার কলিজার টুকরা মেয়েটাকে বাছাতে গিয়ে PBI এর বানানো মিথ্যা জবানবন্দি দিয়ে আজ ফাঁসির আসামি তুমি। তোমার কাছে আমার আমানত এতোই বড় ছিলো যে যাকে তুচ্ছ করে তুমি সত্যের সাথে থাকতে পারোনি। যেদিন রিমান্ডে তোমার পেটে আমার বাচ্ছাটাকে ড্রিল মেশিন দিয়ে ফুটো করে দিবে বলেছিলো সেদিন নিশ্চয়ই ভেবেছো তোমার জীবনের চেয়েও তোমার বাচ্ছার জীবন অনেক মূল্যবান।



হ্যাঁ, মা হিসেবে তোমার দায়িত্ববোধকে আমি সম্মান করি শ্রদ্ধা করি, পৃথিবীর সকল মা- জীবন দিয়ে হলেও তাদের সন্তানকে রক্ষা করার চেষ্টা করে। কিন্তু যে মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে তুমি মিথ্যা জবানবন্দি দিয়ে আসামি হয়েছো আজ সেই মেয়ে কোলে নিয়েই তোমাকে ফাঁসির রায় শুনতে হলো। তোমার মেয়ের কথা কি আজ এই দেশ চিন্তা করেছে?



তোমাকে যে পরিমাণ নির্যাতন করে, পিটিয়ে, পেটে তারের আঘাত করে, হাতের পায়ের তালুতে পিটিয়ে, জামা কাপড় খুলে ফেলার চেষ্টা করে সর্বশেষ বাচ্চা নষ্ট করার ভয় দেখিয়ে আসামি করলো তা কি এই দেশের কেউ জানে?



তোমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ার পরেও যে তোমাকে ফাঁসি দেওয়া হলো তা কি এই দেশের কেউ জানে? এই সন্তান কে নিয়ে যে এদেশের মানুষ ট্রল করে, সন্তানের বাবা পিতৃ পরিচয় নিয়ে ট্রল করে না জেনে তাকি জানো?



তুমি যে ঘটনার পরে ৩টাসহ মোট ৬টা পরীক্ষা দিয়েছো আর ঘটনার দিনের পরীক্ষাসহ সবগুলাতেই A+ পেয়েছ সেই খবর কেউ রেখেছে? তুমি খুন করে কিভাবে স্বাভাবিক ছিলা বা ঘটনার দিন তার পরের ৩টা পরীক্ষাসহ মোট ৬টাতেই A+ পেতে পারো সেটা কি কেউ চিন্তা করেছে?



কেউ কি জানে যে অন্য আরো একটি মণি ছিলো যে কিনা সিরাজের পক্ষ নিয়ে নুসরাতের বিরুদ্ধে ভিডিও বার্তা দিয়েছিলো। তাকে যে PBI গ্রেপ্তার করে টাকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে তা কি দেশের কেউ জানে?



অবশেষে বলবো আমার কলিজার সন্তান একদিন এই দেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, এই অন্যায়ের প্রতিবাদ তাকেই করতে হবে।



তোমার মৃত মুক্তিযোদ্ধা বাবা বেঁচে থাকলে হয়তো জিজ্ঞেস করতে দেশ কি এই জন্য স্বাধীন করেছিলে কিনা যেখানে তোমরাই আজ পরাধীন।



আজ জাতির কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম এই মা মেয়ে যদি নির্দোষ হয় আপনাদের কি আল্লাহ এর আদালতে জবাবদিহি করতে হবে না? আবার বলছি, বুক ফুলিয়ে বলছি মণি ১০০ ভাগ নির্দোষ।



আমি আমার ভালোবাসাকে অন্যায়ের কাছে হেরে যেতে দিবো না। লড়বো এই অন্যায়ের বিরুদ্ধেই, আমি লড়বো ইনশাআল্লাহ।



মুবাশশিরা খানম "রাথী" এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে দেশের ইতিহাসে। দেশের আর কোন নারী যেন এমন বর্বরতা আর নিষ্ঠুরতার শিকার না হয় সেটাই কামনা করি


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top