শোকের মাস আগস্ট


প্রকাশিত:
১ আগস্ট ২০১৯ ২২:৩৮

আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ০১:১৩

শোকের মাস আগস্ট

সদ্য স্বাধীন দেশ। চারিদিকে স্বজন হারানো কান্না আহাজারি পুরো দেশজুড়ে। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে রাজাকাররা যেমন চেয়েছিলো এদেশ স্বাধীন না হোক। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি স্বাধীনতার পর নানা সমস্যা মোকাবিলা করে যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ঠিক তখনই রাজাকাররা পুনরায়  দেশকে পাকিস্তানে ফেরা নিশ্চিত করতে  এক ভয়াবহ হত্যাকান্ড চালায় শেখ পরিবারের উপর। 



২৫ আগষ্ট এক অন্ধকারাচ্ছন্ন রাত ছিলো বাংলাদেশের জন্য । সেই রাতে দেশ গড়ার কারিগর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ তার পরিবারের উত্তরাধিকাররাও রক্ষা পায়নি। সেই কালো রাতে বঙ্গবন্ধুর স্বজন সহ তার পুরো পরিবারকে শহীদ হতে হয়েছিলো।  সে সময় বিদেশ ভ্রমণে থাকায় বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেঁচে যান।



১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে ঘটেছিল এ নারকীয় পৈচাশিক হত্যাযজ্ঞ। বছর ঘুরে আবারও এসেছে শোকাবহ আগস্ট মাস। মানব সভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম ঘটনাবহুল।  এ মাসকে আওয়ামী লীগসহ পুরো জাতি শোকের মাস হিসেবে পালন করে। ১ আগস্টের প্রথম প্রহর থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলো বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদা, শ্রদ্ধা, শোক ও ভালোবাসায় বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণ করে।



১৫ অগাস্টের নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডে বঙ্গবন্ধু তার সহধর্মিণী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সহ পরিবরের বঙ্গবন্ধূর ভাই শেখ আবু নাসের, দেশ গড়ার কারিগরের বড় ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল,২য় ছেলে শেখ জামাল,পুত্রবধু সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, স্বাধীনতার অন্যতম সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি তার স্ত্রী আরজু মণি, ছোট ছেলে শেখ রাসেল।  বঙ্গবন্ধুর বড়ির কর্তব্যরত আরো অনেক কর্মচারী   সেই রাতে নিহত হয়।  



৭৫ এ জাতির জনকের পরিবার পরিজনকে হত্যা করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি। ৭১ এ যারা দেশের স্বধীনতার বিরোধীতা করেছিলো তাদের বাঁচাতে ক্ষমতায় থাকা কালীন সময়ে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি আইনও জারি করেছিল। দেশ স্বাধীনের পর প্রায় দীর্ঘ ২১ বছর জাতি এই কলঙ্ক বয়ে চলেছে। বাংলাদেশে আওয়ামী লিগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে রাজাকার আলবদরদের ফাঁসি কার্যকরের মাধ্যমে দেশ ও জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। এখনো অনেক ঘাতক বিদেশের মাটিতে পলাতক রয়েছে তাদের  দেশে ফিরিয়ে আনেত বঙ্গবন্ধু কন্যা কাজ করে যাচ্ছে।



মাসব্যাপী কর্মসূচি



জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষে প্রতিবারের মতো এবারও আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয়ভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।



১ আগস্টের প্রথম সূর্যদয় থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর। শোকের মাসের ভোরের আকাশ রোক্তিম হওয়ার পূর্বে অর্থাৎ বুধবার দিবাগত মধ্যরাত ১২টা ১ মিনিটে আলোর মিছিলের মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী কর্মসূচি শুরু করবে স্বেচ্ছাসেবক লীগ।



৩ আগস্ট আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শোক দিবসের আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। ৪ আগস্ট বিকাল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে।



১৫ আগস্টের কর্মসূচিত পালন করবেন, ভোরের মিষ্টি বাতাশে রক্তিম সূর্যদয়ের পূর্বক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে সংগঠনের সব স্তরের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন।



ঢাকায় সকাল সাড়ে ৬টায় ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। সকাল সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, মাজার জিয়ারত ও মিলাদ মাহফিল। সকাল ১০টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও মিলাদ মাহফিল। বাদ জোহর দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জা, উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা। দুপুরে অসচ্ছল, এতিম ও দুঃস্থ মানুষদের মধ্যে খাবার বিতরণ। বাদ আসর মহিলা লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে মিলাদ মাহফিল।



 এছাড়াও ১৬ আগস্ট বিকেল ৪টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনাসভা হবে। ২১ আগস্ট বাংলাদেশ কৃষিবিদ পরিষদ, ২২ আগস্ট মহিলা লীগ, ২৩ আগস্ট তাঁতী লীগ, ২৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু কৃষি পরিষদ, ২৭ আগস্ট যুব মহিলা লীগ, ২৮ আগস্ট কৃষক লীগ এবং ২৯ আগস্ট মহিলা শ্রমিক লীগ, ৩০ আগস্ট ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং ৩১ আগস্ট ছাত্রলীগের আলোচনাসভা রয়েছে।



উল্যেখ্য শোকসহ আগস্টেই শেখ কামাল এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন। শেখ পরিবারেরর দুটি জন্মদিন পালন হবে, ৫ ও ৮ আগস্ট। অন্যদিকে ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা এবং ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা স্মরণে কর্মসূচিও রয়েছে।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top