পিনাক-৬ লঞ্চ ট্রাজেডির ৫ বছর আজ
প্রকাশিত:
৫ আগস্ট ২০১৯ ০৪:২২
আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ০১:১৮

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবি। এক ভয়াবহ ট্রাজেডির নাম। সরকারি হিসেবে ৪৯ জন যাত্রীর লাশ উদ্ধার ও ৫৩ জন নিখোঁজ হলেও ৫ বছরেও বিচার সম্পূর্ন হয়নি এ ঘটনার। বিচার সম্পূর্ন না হওয়ায় এ দূর্ঘটনায় জড়িত সন্দেহে করা ২টি মামলার আসামীরা রয়েছেন জামিনে। চাঞ্চল্যকর বিষয় হচ্ছে এ ঘটনার মামলার বাদী বিআইডব্লিউটিএর পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন নিজেই জানে না মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে। ৫বছর অতিবাহিত হলেও দোষীদের বিচার না হওয়ায় নিহত ও নিখোঁজদের স্বজনদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ। লঞ্চটিতে উঠার আগে বিশ্ব কাপানো স্বর্না হিরাসহ ৩ বোনের সেলফিই এখন পরিবারের একমাত্র সম্বল। একই উপজেলার ফরহাদের পরিনতি আরো ভয়াবহ। ফরহাদসহ পরিবারের ৪ জনের কারোরই লাশ পাওয়া যায়নি। নেই কোন স্মৃতির ছবিও। নিখোজ অর্ধ শতাধিক পরিবারের কাউকেই দেয়া হয়নি কোন অনুদান। আর অজ্ঞাত হিসাবে ২১ জনের লাশ দাফন হলেও ডিএনএ নমুনাই রয়ে গেছে মেলেনি পরিচয়। আজো সন্ধান মেলেনি লঞ্চটিরও।
সরেজমিনে একাধিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে ঈদুল ফিতরের পর ৪ আগস্ট ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বোঝাই আড়াই শতাধিক যাত্রী নিয়ে শিবচরের কাওরাকান্দি ঘাট থেকে পিনাক-৬ লঞ্চটি উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়ে মাওয়ার অংশে ডুবে যায়। সরকারিভাবে ওই ঘটনায় ৪৯ জন যাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিখোঁজ থাকে ৫৩ জন। নিহতদের মধ্যে অনেকেই স্বপরিবারে ও নিখোঁজদের অনেকেই স্বপরিবারে রয়েছে।
নিহত হিরা ও স্বর্নার বাবা ওই লঞ্চের যাত্রী নূরুল ইসলাম মিয়া বলেন, লঞ্চের মালিকসহ ঘাট সংশ্লিষ্টদের দায়ীত্বে অবহেলার কারনে লঞ্চটি ডুবে যায়। আমার মেয়েসহ অনেক যাত্রী নিহত ও নিখোঁজ হয়। এ ঘটনার ৫ বছরেও দোষীদের কোন বিচার হলো না। গ্রেফতার হলেও তারা জামিনে বের হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সরকার যদি দ্রুত দোষীদের বিচার সম্পন্ন না করে তাহলে এমন দূর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে। আমরা এ ঘটনার দ্রুত বিচার চাই।
বিআইডব্লিউটিএর কাঁঠালবাড়ি ঘাট পরিদর্শক আক্তার হোসেন বলেন, পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবির পর এ নৌরুটে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। আগে একজন পরিবহন পরিদর্শক তিনটি ঘাটের দায়িত্ব পালন করতো। পিনাক দূর্ঘটনার পরে প্রতিটি ঘাটে একজন করে কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়াসহ অনেক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
শিবচর পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন খান বলেন, অজ্ঞাত ২১ জনের লাশ পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ লাশগুলোর ডিএনএ নমুনা সংরক্ষন করা হয়েছে। পুলিশের মাধ্যমে ডিএনএ শনাক্ত করে যদি কেউ আসে তবে পরিবারের কাছে তাদের লাশ হস্তান্তর করা হবে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, পিনাক ৬ লঞ্চ ডুবিতে অনেকে প্রান হারিয়েছেন। অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। তবে এ দূর্ঘটনার পর থেকে এ নৌরুটে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারী রাখা হচ্ছে। এমন দূর্ঘটনা যাতে আর না ঘটে তার জন্য লঞ্চের চালকদের জন্য প্রশিক্ষনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: