বিনা দোষে কারাভোগের পর মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন বাবলু শেখ
প্রকাশিত:
১৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:৪৬
আপডেট:
১৪ মার্চ ২০২৫ ২২:৪৭

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: অপরাধ না করেও পুলিশ ও আইনজীবীর ভুলে আসামি হয়ে দুই মাস কারাভোগ করাসহ ১৮ বছর ধরে আদালতের বারান্দায় ঘুরতে থাকা বাবলু শেখকে মামলা থেকে অব্যাহতির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাইফুর রহমান সিদ্দিকী এ রায় দেন।
এ সময় এ ঘটনায় দায়ী তদন্তকারী দুই পুলিশ ও তৎকালীন ওসির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে বাবলু শেখকে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। দায়ী আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইনজীবী সমিতিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলা ও আপিলের বরাত দিয়ে আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০০১ সালের ১৫ এপ্রিল নাটোর সদর উপজেলার গাঙ্গইল গ্রামে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৮ এপ্রিল কাজী আব্দুল মালেক বাদী হয়ে শ্রী দেবদাসের ছেলে শ্রী বাবুসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম ২০০২ সালের ৭ নভেম্বর বাবলু শেখকে আটক করে শ্রী বাবু ওরফে বাবলু শেখ, বাবা শ্রীদেব দাস ওরফে ইয়াকুব আলী নামে গ্রেফতার দেখান। এর পর বাবলু শেখ ১৪ দিন হাজতবাস করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবীর মাধ্যমে বাবলু শেখ নিজেকে মুসলমান পরিচয় দিয়ে মামলার আসামি নন দাবি করলেও তদন্ত কর্মকর্তা তাকে শ্রী বাবু দেখিয়ে চার্জশিট দেন। এরপর ২০১৬ সালের ২৩ জুন বাবলু শেখকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। ওই রায়ের পর ৫৬ দিন কারাভোগ শেষে ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট জামিন পান বাবুল।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১৫ এপ্রিল নাটোর সদর উপজেলার গাঙ্গইল গ্রামে একটি মারামারির মামলার আসামি শ্রী বাবুর পরিবর্তে সিংড়া উপজেলার আঁচলকোট গ্রামের বাবলু শেখকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। এরপর তৎকালীন আইনজীবী লুৎফর রহমান শ্রী বাবু নামেই বাবলু শেখের জামিন করান। সেই থেকে বাবুল শেখ হয়ে যান শ্রী বাবু। দুই দফায় দুই মাস কারাভোগের পর ১৮ বছর ধরে হতদরিদ্র বাবলু শেখ নিজের সঠিক পরিচয় জানাতে আদালতের বারান্দায় ঘুরছিলেন।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: