১০টা খুন করলেও এমন হয় না, অনেক বড় সাজা পেয়ে গেছি : ওসি মোয়াজ্জেম
প্রকাশিত:
১৫ নভেম্বর ২০১৯ ২১:২৮
আপডেট:
১৪ মার্চ ২০২৫ ২২:৪৭

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় বিচারের শেষভাগে এসে আত্মপক্ষ সমর্থনে দাঁড়িয়ে আদালতে কাঁদলেন ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন, যাকে এতদিন হাস্যোজ্জ্বলই দেখা যাচ্ছিল।
আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে দেয়া বক্তব্যে ওসি মোয়াজ্জেম বলেন, ‘সামাজিক, রাজনৈতিক ও আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন আমার বিরুদ্ধে এ মামলা করেছেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসতে মামলা করেন তিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের ডাইং ডিক্লারেশন গ্রহণের ব্যবস্থা করি। কিন্তু বাদী আমার বিরুদ্ধে শুধু মামলাই করেছে। তিনি নুসরাতের হত্যাকারীদের বিচারের জন্য কোনো ভূমিকা রাখেননি। উনি (বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন) আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলের একটি পোস্ট হোল্ড করেন। তাই প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসার জন্য শুধু রাজনৈতিকভাবে ও অর্থনৈতিকভাবে লাভবানের উদ্দেশ্যে এ মামলা করেছেন। আমি এ মামলার মাধ্যমে বড় সাজা পেয়েই গেছি। আমার ছেলে স্কুলে যেতে পারে না। আমার মেয়ে এবং তার মা শয্যাশায়ী। আমার পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি ১০টি খুন করলেও এমন সাজা হয়তো আমার হতো না। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। ’
মোয়াজ্জেম হোসেন দাবি করেছেন, থানায় নারী কর্মকর্তা না থাকায় তিনি নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন হয়রানির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও তার মোবাইল ফোন থেকে চুরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন মোয়াজ্জেম হোসেন।
বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে তিনি বলেন, আমি এ মামলার মাধ্যমে বড় সাজা পেয়ে গেছি। আমার ছেলে স্কুলে যেতে পারে না। আমার মেয়ে এবং মা শয্যাশায়ী। আমার পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি ১০টি খুন করলেও এমন সাজা বোধহয় আমার হতো না।
ওসি মোয়াজ্জেম নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন। তিনি আদালতে লিখিত বক্তব্যের পাশাপাশি মৌখিক বক্তব্য দেন।
ওসি মোয়াজ্জেম বলেন, আমার থানায় সিসি ক্যামেরা আছে। আমি তদন্ত কর্মকর্তাকে যে স্ক্রিন শট দিয়েছি, সেখানে তারিখ দেখে তিনি ঘটনার সময় উল্লেখ করেছেন। এডিশনাল ডিআইজি ফায়েজ স্যার আমার কাছ থেকে ভিডিও নিয়েছেন। সেটা আমি তাকে হোয়াটসঅ্যাপে দিয়েছি। আমি নিজে ফেসবুক ব্যবহার করি না। শুধু ঘটনার পরদিন রাতে এসপি সাহেব ফেসবুকে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে দেন। দু’দিন পরই আমি তা আবার ডিয়েক্টিভ করে দেই।
তখন বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, মামলা দায়ের বা তদন্তের জন্য ভিডিও রেকর্ডের কোনো নির্দেশ করে কোনো আইন আছে কি-না? জবাবে মোয়াজ্জেম বলেন, না সেরকম কোনো আইন নেই। তবে টেকনোলজির আপডেটের কারণে আমরা অনেক কিছু ভিডিও ধারণ করে রাখি। এটা আমাদের প্র্যাকটিস আছে এক্ষেত্রে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের কিছু নির্দেশনাও আছে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: