সড়ক আইন সংশোধনের দাবিতে বাস চলাচল বন্ধ রাখছে শ্রমিকরা
প্রকাশিত:
১৮ নভেম্বর ২০১৯ ২২:৫২
আপডেট:
১৪ মার্চ ২০২৫ ২২:৪২

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: নড়াইল-যশোর, নড়াইল-লোহাগড়াসহ অভ্যন্তরীণ পাঁচটি রুটে কোনো ঘোষণা ছাড়াই বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন শ্রমিকরা। গতকাল রোববার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন শ্রমিকরা। পূর্বঘোষণা ছাড়া বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় যাত্রীরা চরম বিপাকে পড়েছেন।
প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পরও সোমবার (১৮ নভেম্বর) যান চলাচল বন্ধ রেখেছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
জানা গেছে, সড়ক আইন ২০১৮ সংশোধনসহ ১০ দফা দাবিতে রোববার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকে যশোর অঞ্চলের ১৮ রুটে স্বেচ্ছায় কর্মবিরতিতে নামেন পরিবহন শ্রমিকরা। সকাল থেকে ১৮ রুটে ধীরে ধীরে যান চলাচল কমতে থাকে। দুপুরের পর তা এক রকম বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
রোববার (১৭ নভেম্বর) বেলা ১১টায় নড়াইল প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর জেল জরিমানা সংশোধনসহ ১১ দফা দাবিতে নড়াইলে পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ মানববন্ধন এবং জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। মানববন্ধনে বক্তারা প্রতিটি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০৪/খ ধারায় মামলা রুজু করা, মোটরযান ও চালকেদের ওপর অধিক অর্থদণ্ড ও জেল জরিমানা সংশোধনের দাবি ছাড়াও ১১দফা দাবি জানান। এর ৭ ঘণ্টা পর কোনো ঘোষণা ছাড়াই শ্রমিকরা নড়াইল-যশোর, নড়াইল-লোহাগড়া, নড়াইল-মাগুরা, নড়াইল-নওয়াপাড়া ও নড়াইল-কালিয়া সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন।
এদিকে, দিনভর অচলাবস্থার পর রাতে যশোর কোতয়ালি থানায় শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসে পুলিশ প্রশাসন। ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হলেও সিদ্ধান্ত নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসন সোমবার যান চলাচলের সিদ্ধান্ত জানালেও শ্রমিকদের অবস্থান পরিষ্কার করেনি।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিকদার সালাউদ্দিন জানান, রাতে পরিবহন মালিক, শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তারা সোমবার থেকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আশ্বাস দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নড়াইল জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান সোমবার সকালে জানান, বাস বন্ধ রাখার ব্যাপারে সংগঠন থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। কিন্তু আমাদের সঙ্গে আলাপ না করে বাস চালক-শ্রমিকরা নতুন সড়ক পরিবহন আইনের ভয়ে স্বেচ্ছায় অভ্যন্তরীণ পাঁচটি রুটে বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছে। তবে বিক্ষিপ্তভাবে কোনো কোনো রুটে দু-একটি বাস চলছে।
তবে শ্রমিকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা নতুন সড়ক আইনের শাস্তির খড়্গ মাথায় নিয়ে রাজপথে যেতে চাইছেন না। বাংলাদেশ পরিবহন সংস্থা শ্রমিক সমিতির সভাপতি মামুনুর রশীদ বাচ্চু বলেন, শ্রমিকদের কর্মবিরতি মালিক ও শ্রমিকদের কোনো সংগঠন ডাকেনি। ফাঁসির দড়ি নিয়ে শ্রমিকরা পরিবহনে কাজ করতে রাজি নয়। তাই তারা স্বেচ্ছায় কর্মবিরতি শুরু করেছে। এটা কোনো ইউনিয়ন বা ফেডারেশনের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি নয়। পরিবহন শ্রমিকরা ইচ্ছামতো কর্মবিরতি শুরু করেছেন।
সোমবার যান চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রশাসন সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে আমাদের সহযোগিতা চেয়েছে। যেহেতু কোনো সংগঠন ধর্মঘটের ডাক দেয়নি। তাই শ্রমিকরা চাইলেই গাড়ি চলবে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: