অপারেশনের পর পেটে গজ-ব্যান্ডেজ রেখে সেলাই, প্রসূতির মৃত্যু
প্রকাশিত:
১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:৫২
আপডেট:
১৪ মার্চ ২০২৫ ২২:৪৭

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: রংপুরে এক প্রসূতি মায়ের সিজারিয়ান অপারেশন করার পর পেটের ভেতর গজ-ব্যান্ডেজ রেখে সেলাই দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রংপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে। পরে ওই প্রসূতির তীব্র যন্ত্রণা শুরু হলে তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অপারেশন করে বের করা হয় গজ-ব্যান্ডেজ। অবশেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার রাতে মারা যান ঐ প্রসূতি মা নাসিমা বেগম।
হাসপাতাল সূত্র ও রোগীর স্বজনরা জানায়, রংপুর নগরীর মীরগঞ্জ তামপাট এলাকার রাশেদুল ইসলামের স্ত্রী নাসিমা বেগম নগরীর ধাপ এলাকার রোজ প্রাইভেট হাসপাতালে গত ৫ নভেম্বর ভর্তি হন। ওই দিনই তার সিজারিয়ান অপারেশন করা হলে তিনি একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। পরে হাসপাতাল থেকে তাদের রিলিজ দিলে তারা বাড়িতে যায়। বাসায় আসার দুই দিন পর তার পেট ফুলে যায় এবং তীব্র যন্ত্রণা শুরু হলে ১২ নভেম্বর তাকে রোজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে ছেড়ে দেয়। এরপর নাসিমা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে ১৫ নভেম্বর তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাম করার পর পেটের ভেতরে গজ-ব্যান্ডেজ ধরা পড়ে। সেখানে ১৭ নভেম্বর দুপুরে তার পেটে অপারেশন করে গজ-ব্যান্ডেজ বের করেন রমেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায়ই ঐ দিন রাতেই মারা যান নাসিমা বেগম।
এ ব্যাপারে রমেক হাসপাতালের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. স্বপন জানান, অপারেশন করে ওই নারীর পেটের ভেতরে গজ-ব্যান্ডেজ পাওয়া যায়। রোগীর অবস্থা এমনিতেই গুরুতর ছিল। তার পেট ফুলে গিয়েছিল। ভেতরে রক্তক্ষরণ হওয়ায় রোগীকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
নাসিমা বেগমের স্বজনরা জানান, মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর রোজ প্রাইভেট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তাদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করে। তবে ব্যর্থ হয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যায়। নাসিমার স্বামী রাশেদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, রোজ হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের দায়িত্বহীনতার কারণেই তার স্ত্রী মারা গেছেন। তিনি দায়ী ডাক্তার ও নার্সসহ রোজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
রোজ প্রাইভেট হাসপাতালের ম্যানেজার মিলন মিয়া সিজারিয়ান অপারেশন করার কথা স্বীকার করে বলেন, রোগীর পেটে পুঁজ হয়ে ইনফেকশন হয়েছিল। পেটে গজ-ব্যান্ডেজ রেখে দেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. হিরন্ময় বর্মণ জানিয়েছেন, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযুক্ত হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যব্স্থা নেওয়া হচ্ছে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: