বাংলাদেশিদের ৪ হাজার কোটি টাকা সুইস ব্যাংকে
প্রকাশিত:
২৯ জুন ২০১৮ ০৫:৫৩
আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ০১:২৭

কর ফাঁকি দিতে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিরা প্রায় ৪ হাজার ৬৯ কোটি টাকা রেখেছে। যা গত কয়েক বছরের তুলনায় কিছুটা কম। তবে এতে খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই, কেননা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনীরাও সেখানে আমানত রাখা কমে দিয়েছে।
সে হিসেবে ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত কমেছে এক হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার (২৮ জুন) সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রকাশিত ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড ২০১৭’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ২০১৭ সালে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশ থেকে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ছিল ৪৮ কোটি ১৩ লাখ সুইস ফ্রাঁ, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় দাঁড়ায় প্রায় ৪ হাজার ৬৯ কোটি টাকা। (বাংলাদেশি মুদ্রায় এক সুইস ফ্রাঁর বিনিময়মূল্য প্রায় ৮৫ টাকা)। ২০১৬ সালে সুইস ব্যাংকগুলোয় বাংলাদেশ থেকে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা।
সুইস ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের জমা টাকার পরিমাণ ছিল প্রায় ৫৫ কোটি সুইস ফ্রাঁ, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ছিল প্রায় ৪ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান বলেন, ‘আমরাও হিসাব করে দেখেছি, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের ব্যক্তিগত ডিপোজিট দিন দিন কমে আসছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশে থেকে যে শুধু অর্থ নিয়ে সে ব্যাংকে জমা রাখে, তা নয়। সারাবিশ্বে যে স্কিল ম্যানপাওয়ার রয়েছে, তারাও কিন্তু সেসব দেশের ব্যাংকগুলোয় স্বাভাবিকভাবে ডিপোজিট রাখতে পারেন। দেশের বাইরে বৈধভাবে যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করছে, এমনকি বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী প্রবাসীদের পাশাপাশি সুইজারল্যান্ডে বসবাসকারী বাংলাদেশিরাও সেখানে অর্থ জমা করছেন।’
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী কেবল বাংলাদেশ নয়, সামগ্রিকভাবেও ২০১৭ সালে আমানত কমেছে সুইস ব্যাংকগুলোতে। দেশটিতে ব্যাংকের সংখ্যাও কমে গেছে।
২০১২ সালে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের জমা অর্থের পরিমাণ ছিল প্রায় ২২ কোটি ৮০ লাখ সুইস ফ্রাঁ, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা। আবার ২০০৯ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমার পরিমাণ ছিল ১৪ কোটি ৯০ লাখ সুইস ফ্রাঁ বা ১ হাজার ২৮১ কোটি টাকা। ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল এই সময়ের মধ্যে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের জমা রাখা অর্থের পরিমাণও তিন গুণ বেড়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, ধনীদের অর্থ, গোপনে গচ্ছিত রাখার জন্য খ্যাতি রয়েছে সুইজারল্যান্ডের। গ্রাহকের নাম-পরিচয় গোপন রাখতে কঠোর দেশটির ব্যাংকিং খাত। যে কারণে অবৈধ আয় ও কর ফাঁকি দিয়ে জমানো টাকা রাখা হয় সুইস ব্যাংকগুলোতে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: