আলজেরিয়ায় মানবেতর জীবন ২২ শ্রমিকের
প্রকাশিত:
১২ নভেম্বর ২০১৯ ০৯:১৩
আপডেট:
১৪ মার্চ ২০২৫ ২২:২৫

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: ৫০ হাজার টাকা বেতন, আছে ইউরোপে যাওয়ার সুযোগ। এমন স্বপ্ন নিয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আফ্রিকার দেশ আলজেরিয়ায় যান মানিকগঞ্জের মো. জসিম। কিন্তু সেখানে গিয়ে তার স্বপ্নভঙ্গ হয়। সাত মাস অমানসিক কষ্ট সহ্য করে মাত্র এক মাসের বেতন নিয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হন তিনি।
ভালো কাজ, কম পরিশ্রমে উচ্চ বেতনের স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল সুমন, দেলওয়ার, মোহসিন ও হেলালদেরও। বলা হয়েছিল পৌঁছে দেওয়া হবে আটলান্টিক মহাসাগর তীরের দেশ স্পেনে। আর সেই স্বপ্নের দেশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পার হতে হবে আরও দুটি দেশ। প্রথমে উত্তর আফ্রিকার দেশ আলজেরিয়া, পরে মরক্কো হয়ে তারপর স্পেন। রিক্রুটিং এজেন্সির দেখানো এমন স্বপ্নে বিভোর হয়ে, প্রলোভনে পড়ে মুন্সিগঞ্জ থেকে পাড়ি জমিয়েছিলেন স্পেনের পথে।
রিক্রুটিং এজেন্সি নামধারী মানব পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ে আলজেরিয়া ও মরক্কোতে মানবেতর জীবন কাটাতে হচ্ছে এইসব প্রতারিত শ্রমিকদের।
আলজেরিয়ায় আটকা পড়ে পরিবার ও নিকট আত্মীয়দের কাছে ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন এমন ২২ হতভাগ্য শ্রমিক। ভিডিওবার্তায় জানিয়েছেন তাদের কষ্টের কথা। তারা আরও জানিয়েছেন, রিক্রুটিং এজেন্সি তাদের যে প্রতিশ্রুতিগুলো দিয়েছিল তা সবই মিথ্যা।
তাদের মধ্যে সাতজনের পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দিয়েছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আলজেরিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসকে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
আলজেরিয়ায় অবস্থান করা এবং ফেরত আসা কর্মীরা জানান, মাসে ৫০ হাজার টাকা এবং ইউরোপে পাঠানোর স্বপ্ন ও প্রলোভন দেখিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সি বন্যা বিজয় ওভারসিজ ও মুন্সীগঞ্জের সিঙ্গাপুর স্কিল ট্রেনিং সেন্টার বিএমইটির ছাড়পত্র দিয়ে তাদের আলজেরিয়া পাঠানো হয়। জনপ্রতি তিন লাখ পাঁচ হাজার টাকা খরচে ৫৫ জন বাংলাদেশি সেখানে যান। আলজেরিয়া যাওয়ার পর সেখানে কাজ দিলেও কোম্পানি ঠিক মতো বেতন এবং পর্যাপ্ত খাবার দেয়া থেকে বিরত থাকে। বেতন চাইলে কোম্পানির লোকজন মারধর করে।
ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, ‘আলজেরিয়াতে আটকে পড়া সাত জনের পরিবার আমাদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন। আলজেরিয়াতে অবস্থানরত ওই বাংলাদেশিদের নিরাপদে দ্রুত দেশে ফেরত আনতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডকে গত ৯ অক্টোবর আমরা লিখিতভাবে আবেদন করেছি। বোর্ড থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: