ড্রোন কিনতে ভারতকে তাগাদা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
প্রকাশিত:
১৬ জুন ২০২৩ ১৮:০৩
আপডেট:
১৩ মার্চ ২০২৫ ১৫:১৬

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওয়াশিংটন সফরের আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ড্রোন কিনতে নয়াদিল্লিকে তাগাদা দিচ্ছে বাইডেন প্রশাসন। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, ভারতের লাল ফিতার দৌরাত্ম্য কাটিয়ে এবং কয়েক ডজন নির্মিত অত্যাধুনিক ড্রোন ক্রয়ের চুক্তির জন্য তাগাদা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বড় সশস্ত্র ড্রোন কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে আসছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। কিন্তু আমলাতিন্ত্রক জটিলতার কারণে সীগার্ডিয়ান নামের ড্রোন ক্রয়ের চুক্তিটি এখনও স্বাক্ষর হয়নি। এসব ড্রোনের আনুমানিক মূল্য ২০০ থেকে ৩০০ কোটি ডলার হতে পারে। মধ্যস্থতাকারীরা আশা করছেন, মোদির হোয়াইট হাউজ সফরে এই অচলাবস্থা ভাঙবে। আগামী ২২ জুন ওয়াশিংটন সফর করবেন তিনি।
দুটি সূত্র জানিয়েছে, মোদির সফরের তারিখ নির্ধারিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন ও হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে ভারতকে বলা হয়েছে প্রায় ৩০টি সশস্ত্র এমকিউ-৯বি সীগার্ডিয়ান ড্রোন ক্রয়ের চুক্তির বিষয়ে অগ্রগতি হাজির করতে। এসব ড্রোন তৈরি করেছে জেনারেল অ্যাটেমিকস।
সূত্র দুটি আরও জানিয়েছে, মোদি ও বাইডেন গোলাবারুদ ও পদাতিক যানের যৌথ উৎপাদনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। ড্রোন ক্রয়ের বিষয়ে আলোচনার বিষয়ে হোয়াইট হাউজ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পেন্টাগন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলার নীতিতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে তুলে ধরেছেন জো বাইডেন। বিশ্বের দুটি বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের সঙ্গে বিশেষ সহযোগিতা স্থাপন করেছেন। আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তা জোটে না থাকলেও অত্যাধুনিক সামরিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়িয়েছেন।
অপর দিকে ভারত বিশ্বের পরাশক্তির মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে জোট নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখে চলার চেষ্টা করে। তবে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর মস্কোর সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক নিয়ে কিছুটা নাখোশ ওয়াশিংটন। মঙ্গলবার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন ক্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নথি ভারত প্রস্তুত করতে পেরেছে বলে জানা যায়নি।
বাইডেন প্রশাসনের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ভারত সরকারকে এই বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা মনে করি এমকিউ-৯ ড্রোন ক্রয় করা তাদের জন্য উপকারী হবে। কিন্তু এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার ভারতের হাতে।
ধারণা করা হচ্ছে, মোদির সফরের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করতে দিল্লিতে মঙ্গলবার অবতরণ করা বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভ্যানের এজেন্ডায় বিষয়টি থাকতে পারে।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কতটি ড্রোন ক্রয় করা হবে সেই সংখ্যা নির্ধারণ করতে পারেনি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে রয়টার্স। এর আগে এই সংখ্যা ৩০টি হতে পারে বলে জানা গিয়েছিল। কিন্তু পরে তা কমিয়ে ২৪ করা হয়। এরপর গত মাসে তা আরও কমিয়ে করা হয় ১৮। সতর্কতার কথা উল্লেখ করে সূত্র বলছে, কোনও সংখ্যাই চূড়ান্ত হয়নি।
ভারত চাইছে দেশে উৎপাদিত সরঞ্জাম। যা ড্রোন ক্রয়ের চুক্তিকে জটিলতায় ফেলে দিতে পারে। কোয়াড গ্রুপের দেশ – যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান-ইতোমধ্যে এমকিউ-৯বি সীগার্ডিয়ান ড্রোন পরিচালনা করেছে। ভারত বর্তমানে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য এই ড্রোন ভাড়া করে ব্যবহার করছে।
বিষয়: যুক্তরাষ্ট্র ভারত ড্রোন নরেন্দ্র মোদি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: