গত পাঁচ মাসে বেকার হয়েছেন ৭৪ হাজার শ্রমিক


প্রকাশিত:
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২১:২২

আপডেট:
১৪ মার্চ ২০২৫ ১৮:৩৬

গত পাঁচ মাসে বেকার হয়েছেন ৭৪ হাজার শ্রমিক

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: বছরে ৩৪ বিলিয়ন ডলারের রফতানি আয় আসছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এ খাতের ওপর ভর করেই সমৃদ্ধশালী হয়েছে দেশের রফতানি বাণিজ্য। কিন্তু বর্তমানে বহুমুখী সংকটের মুখে দেশের এই পোশাক খাত। গার্মেন্টস মালিক এবং শ্রমিক উভয়ের মধ্যেই এখন চাপা কষ্ট বিরাজ করছে। কারণ শিল্প মালিকরা চালাতে না পেরে বন্ধ করে দিচ্ছেন শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগের কারখানা।



এসব বন্ধ হওয়া কারখানার শ্রমিকদের অনেকেই বেকার হচ্ছেন, অনেকে এ পাচ্ছেন না বেতন ও ক্ষতিপূরণের টাকা।  তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) তথ্য মতে গত পাঁচ মাসে বন্ধ হয়েছে ৯২টি পোশাক কারখানা। এর মধ্যে ঢাকা ও এর আশপাশের ৫২টি এবং চট্টগ্রামের রয়েছে ৪০টি। এসব কারখানার একেকটিতে কাজ করতেন গড়ে ৮০০ শ্রমিক। সে হিসাবে এই সময়ের মধ্যে ঢাকা ও আশপাশে বেকার হয়েছেন প্রায় ৪২ হাজার শ্রমিক এবং চট্টগ্রামে বেকার হয়েছেন ৩২ হাজার শ্রমিক। সব মিলিয়ে গত পাঁচ মাসে বেকার হয়েছেন ৭৪ হাজার শ্রমিক।



কারখানা বন্ধ হওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, এর পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান কারণ জানুয়ারি মাস থেকে যে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হয়েছে সে অনুযায়ী অনেক কারখানা মালিকের বেতন দিতে না পারা। ইউরোপ ও আমেরিকার ক্রেতা জোট অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্সের যে সংস্কার কাজ হয়েছে তার ব্যয় মেটাতে না পেরে কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন অনেক মালিক।



আয়-ব্যয়ের সঙ্গে তাল মেলাতে না পারাই কারখানাগুলো বন্ধ হওয়ার প্রধান কারণ। একদিকে বাড়ছে উৎপাদন খরচ, অন্যদিকে কমছে পোশাকের দর। একই সঙ্গে বিশ্ববাজারে কমছে পোশাকের চাহিদা।



এ বিষয়ে বিজিএমইএ’র পরিচালক (শ্রম) রেজওয়ান সেলিম বলেন, গার্মেন্টস শিল্প মালিকদের মাঝে এখন চাপা কষ্ট বিরাজ করছে। টাকার অভাবে কেউ ২০ বছরের পুরনো, কেউ ১৫ বছরের পুরনো কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এসব কারখানা মালিক অনেক স্বপ্ন নিয়ে, অনেক টাকা বিনিয়াগ করে এবং কষ্ট করে একেকটি কারখানা গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু সংকটে পড়ে বন্ধ করে দিচ্ছেন কারখানা।



তিনি বলেন, আমি কারও নাম উল্লেখ করতে চাচ্ছি না টাকার অভাবে গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ করে বারিধারার ফ্ল্যাট বিক্রি করে শ্রমিকদের টাকা দিয়েছেন একজন গার্মেন্টস মালিক। আরেক মালিক জমি বিক্রি করেছেন। আরেকজন শখের গাড়ি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। আরেক কারখানার মালিক জমি বিক্রি করেছেন। আরেক মালিক তার ১০ লাইনের কারখানার ৫ লাইনের মেশিন বিক্রি করে শ্রমিকদের টাকা দিয়েছেন। এ রকম অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে আমার কাছে। এসব কারখানার মালিকদের অনেককে অঝোরে কাঁদতে দেখেছি।



উল্লেখ্য, গত দুদিন আগেও বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় সড়ক অবরোধ করে রাখেন পোশাক শ্রমিকরা।  এছাড়া নাসা মেইনল্যান্ড নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা মগবাজার-মহাখালী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। জানা গেছে, বেতন দিতে না পেরে কারখানাটির মালিক শ্রমিক ছাঁটাই করেছেন।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top