পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির ২২ বছর আজ


প্রকাশিত:
২ ডিসেম্বর ২০১৯ ২৩:৪২

আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ০১:২৬

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির ২২ বছর আজ ২ ডিসেম্বর (সোমবার)। তবে বহু কাঙ্ক্ষিত এই চুক্তির সব ধারা বাস্তবায়ন নিয়ে আছে বিতর্ক। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ার জন্য সরকারকেই দায়ী করা হচ্ছে। অন্যদিকে সরকার বলছে, শান্তির জন্য অস্ত্র সমর্পণের শর্ত তারা বিগত ২২ বছরেও পূরণ করেনি। শান্তিচুক্তির এই দুই পক্ষের দাবি পরস্পরবিরোধী হলেও পাহাড়ে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় শান্তি যে ফেরেনি, তা নিয়ে তেমন মতভেদ নেই।

সম্প্রীতি ও সৌহার্দের পরিবেশের জন্যই ২২ বছর আগে সংঘাতময় পার্বত্য চট্টগ্রামে সম্পাদিত হয়েছিল শান্তিচুক্তি। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত শান্তি পাহাড়ে আজও অধরা। প্রতিনিয়ত রক্তাক্ত হচ্ছে পাহাড়। গত ছয় বছরে বিভিন্ন আঞ্চলিক দল ও উপদলের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, আধিপত্য বিস্তার এবং রাজনৈতিক ও জাতিগত বিরোধে খুন হয়েছেন ৩২১ জন। 

পার্বত্য সংকটের সূচনা হয় মূলত পঁচাত্তর পরবর্তি সময়কালে। বাস্তুহারা উপজাতি, বাঙালি বসতি ও সেনা ক্যাম্প স্থাপন নিয়ে প্রায় দু’যুগের বেশি সময় ধরে সশস্ত্র আন্দোলন অব্যাহত ছিল যার পরিসমাপ্তি ঘটে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর। পাহাড়ে বিবদমান জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সঙ্গে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের শান্তিচুক্তি সম্পাদিত হয়। ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়িতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ত্র সমর্পণ করেন সন্তু লারমাসহ ১ হাজার ৯শ ৬৮ জন শান্তিবাহিনীর সদস্য। শান্তি চুক্তির ফলশ্রুতিতে দীর্ঘদিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান হলেও বিভিন্ন পক্ষ ও মাধ্যম থেকে আলোচনা-সমালোচনা এবং হতাশাও ব্যক্ত করা হয়, আবার অনেক সমালোচনাই উদ্যেশ্যপ্রণোদিত। পার্বত্য সংকট একটি জটিল সমীকরণ, তাই প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির নির্মোহ মূল্যায়ন প্রয়োজন যা পার্বত্য এলাকায় বাস্তবিক অর্থে শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যেসব শর্তে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর এই শান্তিচুক্তি করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার, তার দুই-তৃতীয়াংশ এরই মধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর পক্ষে চুক্তিতে সই করা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কাছে সরকারের প্রধান শর্ত ছিল শান্তির জন্য অস্ত্র সমর্পণ। এই শর্ত বিগত ২২ বছরেও তারা পূরণ করেনি।

বিপরীতে তিন পার্বত্য জেলায় তৎপর আঞ্চলিক দলগুলোর দাবি, সরকার চুক্তি করলেও তা বাস্তবায়নে আন্তরিক নয়। প্রয়োজনীয় বিধিবিধান প্রণয়ন ও স্থানীয় প্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর ক্ষেত্রে গড়িমসি করছে। এতে পাহাড়ের অধিবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। শান্ত হচ্ছে না পরিবেশ। পার্বত্য জেলায় বসবাসরত বাঙালিদের দাবি, তারা নূ্যনতম নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শিক্ষা-দীক্ষা, চাকরি ও ব্যবসার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সুযোগ মিলছে না। 


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top